সোমবার, ২৫ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ব্যাংক লুটেরাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যাংক লুটেরাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে

প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে সিপিডির এক সংলাপে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ব্যাংক লুটেরাদের যে কোনো মূল্যে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। যারা ভালো কাজ করছেন তাদের উৎসাহিত করা হবে। আর যারা মন্দ কাজ করছেন তাদের তিরস্কার করা হবে। তিনি বলেন, আগে বাজেট ঘোষণা ও রমজানের পূর্বে আমাদের মা-বোনেরা ব্যাগ আর বস্তা নিয়ে বাজারে গিয়ে মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কায় বস্তা ভরে বাজার করে নিয়ে আসতেন। এখন আর তা হয় না। বাজেট ঘোষণার সময় জিনিসপত্রের দাম বাড়ে না। ঈদের সময়ও জিনিসপত্রের দাম বাড়ে না। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে উদ্দেশ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের (বিএনপি সরকারের আমলে) সময় কত মাস ব্যাংকে গিয়ে টাকা পাওয়া যায়নি। আমাদের সময় অনিয়ম হয়নি এমন কথা বলব না। তবে আমরা ব্যাংক ও আর্থিক খাতের রিফর্ম আনব। রিফর্ম এনে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও শক্তিশালী করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো ব্যবস্থা নিইনি এমন অভিযোগ সঠিক নয়। উইন উইন সিচুয়েশন আমরা ম্যাচ করব। যারা ভালো তাদের যত ধরনের উৎসাহ দেওয়া যায় দেওয়া হবে। আর খারাপ যারা আছে, তারা যত বড়ই হোক বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাদের কাছ থেকে পাওনা আদায় করা হবে।’ বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিএনপির সময় এ দেশের বিদ্যুতের কী অবস্থা ছিল আপনারা তা জানেন। এখন অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।’ আমীর খসরুকে উদ্দেশ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সময় বসেছে শুধু খাম্বা, খাম্বায় আমরা বেঁধে রাখতাম হাম্বা।’ আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ জন সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এতে আওয়ামী লীগের কোনো দোষ নেই। আপনারা নির্বাচনে আসবেন না, আবার বলবেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, এটা তো হবে না। নির্বাচনে আসতে হবে। তাই আসুন, রাতে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখে দিনের বেলা না ঘুমিয়ে নির্বাচনে অংশ নিন।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি আসুন, নির্বাচন করুন। আপনার নির্বাচনের খরচ আমি দেব। অর্থায়ন নিয়ে টেনশন করবেন না। আমি সেটার জোগান দেব।’ এ সময় তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে বলা খুব সহজ, কিন্তু কাজ করা কঠিন। তাই আসুন, নির্বাচন করুন।’ গুলশানে ১ কোটি টাকার একটি জমি বিক্রি হচ্ছে ৫০ লাখ টাকায়। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। স্ট্যাম্পের দাম পাচ্ছে এমন উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বাজার দর অনুযায়ী জমিজমা বিক্রি না হওয়ায় কালো টাকা তৈরি হচ্ছে। ব্যাংক খাতের করপোরেট কর কমানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রপ্তানি ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়াতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। করপোরেট ট্যাক্স অনেক বেশি। এ ট্যাক্স নেট যদি আমরা না কমাই বিদেশিরা বিনিয়োগ করবে কেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিবেশী দেশকে ঋণ দেবে বাংলাদেশ। ২০২৩ সাল নাগাদ আমাদের আর অন্য দেশ থেকে টাকা ধার করতে হবে না। আমরা বরং টাকা ধার দেব। চীন আমাদের ঋণ দিচ্ছে, অথচ ওদের ঋণের পরিমাণ জিডিপির তুলনায় ১৮৫ শতাংশ। ১০০ শতাংশের নিচে কোনো দেশেরই ঋণ নেই। আমার লেখাপড়া যদি সত্য হয়, তাহলে ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা আশপাশের দেশকে ঋণ দিতে পারব। চীন, আমেরিকা এবং আমাদের প্রতিবেশী পাঁচটি দেশ আমাদের বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়ন করতে পারবে না।’

সর্বশেষ খবর