গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন কেন্দ্র থেকে মনিটর করবে আওয়ামী লীগ। দলের সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে বসে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এবং নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি টিম নির্বাচন কমিশনে থাকবে সার্বক্ষণিক। কাউন্সিলর প্রার্থীদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে মেয়র প্রার্থীর ভোট ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে কড়া নজরদারি করা হবে। কোথাও কোনো গোলযোগ হলে তাত্ক্ষণিক করণীয় নিয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন তারা। দলের দায়িত্বশীল সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান টার্গেট মেয়রের বিজয়। এ জন্য তারা কাউন্সিলরে ছাড় দিয়েছে। অনেক জায়গায় কাউন্সিলরে একক প্রার্থী করা হয়নি। এমনকি বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। দলের নেতারা মনে করেন, গাজীপুরে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন। কিন্তু কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণে দু-একটি কেন্দ্রে গোলযোগের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে সে বিষয়ে আওয়ামী লীগ সতর্ক। কেউ যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সে জন্য আগেই জেলা-মহানগরের নেতাদের বার্তা দেওয়া হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই এ নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে চায় না আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ‘মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। সে কারণে আমাদের প্রধান টার্গেট নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করা। এ জন্য কাউন্সিলর পদে কড়াকড়ি করা হয়নি।’ সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে বসবেন আওয়ামী লীগের গাজীপুর সিটি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গাজীপুর সিটিতে নির্বাচনী দায়িত্বে ছিলেন ড. আবদুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অসীম কুমার উকিল, আখতারুজ্জামান, ফরিদুন্নাহার লাইলী, সুজিত রায় নন্দীসহ ২৫ জন কেন্দ্রীয় নেতা। মূল সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। এদিকে সকাল থেকেই নির্বাচন কমিশনে থাকবে আওয়ামী লীগের একটি টিম। এ টিমের নেতৃত্বে থাকবেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম। আর সার্বিক দেখভাল করবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ প্রসঙ্গে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা গাজীপুর সিটি নির্বাচন মনিটর করব। দলের সভানেত্রীর কার্যালয়ে বসে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলব। পাশাপাশি টিভিতে চোখ রাখব। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তাত্ক্ষণিক সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হবে। এ ছাড়া আমাদের একটি টিম ইসিতে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন এবং নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে। বিএনপি নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক।’ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নিবাচন উপহার দেওয়া। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে।
আমরা আশা করি, গাজীপুর সিটি ভোট নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে।’ তিনি বলেন, সরকার টানা সাড়ে ৯ বছরে সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে। সে কারণে গাজীপুরের মানুষ নৌকার প্রার্থীকেই বিজয়ী করবে।