শিরোনাম
সোমবার, ৯ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

এরকম নিপীড়ন আর হয়নি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

এরকম নিপীড়ন আর হয়নি

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে দুঃখজনক, লজ্জাজনক এবং অবিশ্বাস্য বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এরকম ঘটনা ঘটবে এটা আমরা কখনো ভাবিনি। এটা পাকিস্তান আমলে ঘটেনি। এমনকি ব্রিটিশ আমলেও না।

গতকাল দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষকবৃন্দের’ পদযাত্রা শেষে এক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে ঢাবির অপরাজেয় বাংলা থেকে একটি পদযাত্রা বের করা হয়। সেটি শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। পদযাত্রায় কয়েকশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা জানি কোটা সংস্কারের যে আন্দোলন সেটা যৌক্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত। সে জন্যই এর প্রতি ব্যাপক সমর্থন আমরা দেখেছি। স্বতঃস্ফূর্তভাবে যখন আন্দোলনে ছেলে-মেয়েরা বেরিয়েছে সমাজের অভিভাবকরা যেভাবে সমর্থন দিয়েছে তাতে বোঝা যায় ৫৬ শতাংশ কোটা অত্যন্ত অসঙ্গত এবং অন্যায়। সরকারও সেটা স্বীকার করেছে। স্বীকার করে কমিটি গঠন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু কমিটি গঠনে বিলম্ব করার কারণে ছাত্ররা আবার আন্দোলন করেছে। আন্দোলন করেছে বলে আমরা জানি কমিটি হয়েছে। আন্দোলন অব্যাহত না রাখলে কমিটি গঠিত হতো না। কিন্তু যে ঘটনা তারপর ঘটল সেটা নৃশংস, বর্বর এবং অবিশ্বাস্য।

তিনি বলেন, আমরা দেখলাম যারা আহত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে, রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে নেওয়া মানে কী ধরনের বর্বর অত্যাচার আমরা জানি। মানুষের কোনো নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচার নেই সেটা আমরা অনুভব করি। শিক্ষকদের দাবিগুলোর প্রতি তিনি পূর্ণ সমর্থন জানান। আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে সেটার তদন্ত করতে হবে। কোটা সংস্কারের দাবি সম্মানজনকভাবে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান তিনি।

ঢাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের সন্তানরা অন্যায়ের শিকার হয়েছেন। তাদেরকে হাতুড়ি পেটা করা হয়েছে, মেয়েদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এদেশের হসপিটাল কোনো প্রধানমন্ত্রী, সরকার বা রাজনৈতি দলের না। এটা মানুষের হসপিটাল, জনগণের অর্থে পরিচালিত হসপিটাল। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাউকে আঘাত করা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধ। যারা এই অপরাধ করেছে তাদের গ্রেফতার দাবি করছি। আহতদের চিকিৎসা সেবার দাবি জানাচ্ছি।

ঢাবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, শিক্ষার্থীরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন, মিথ্যা মামলা, গুম, গ্রেফতার হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে সেই শিক্ষর্থীদের দায় তারা নেবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করি, শিক্ষকদের এই অবস্থান অনৈতিক, ভয়ঙ্কর অমানবিক। এই অবস্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশে চলতে পারে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর