মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

খালেদার মুক্তি নিয়ে জনগণের মাথা ব্যথা নেই : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে মানুষের কোনো মাথাব্যথা নেই।

গতকাল রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আন্দোলন ছাড়া বিএনপি নেত্রীকে জেল থেকে বের করা সম্ভব নয়— বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বাংলাদেশের মানুষ পুড়িয়ে মারার আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এ ধরনের আন্দোলনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কাজেই জনগণকে সম্পৃক্ত করে যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন করতে গিয়ে তারা বারবার ডাক দিয়েছে, জনগণ সাড়া দেয়নি। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়— বিএনপি নেতাদের এমন দাবি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিষয়টা তো তা নয়। আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম জিয়া যদি বেরিয়ে আসেন, তাহলে তো মুক্ত হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে বেগম জিয়াকে মুক্ত করার অন্য কোনো পথ আমাদের জানা নেই। এখন বিএনপি বলছে তারা আন্দোলন করে তাকে মুক্ত করবে, দেখা যাক। নির্বাচনের আগে বিএনপি নেত্রীর জেলখানায় থাকা নিয়ে মানুষের মাথাব্যথা নেই বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এখন নির্বাচনের মাত্র তিন মাস বাকি। মানুষ এখন ইলেকশনের মুডে আছে। মানুষ এখন ঝুঁকে গেছে নির্বাচনের দিকে। এ সময় বেগম জিয়াকে নিয়ে, বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে কারও মাথাব্যথা অছে মনে হয় না। এটা বিএনপির থাকতে পারে। আইনি প্রক্রিয়ায় তিনি মুক্তি পেলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’ এ সময় আন্দোলনের ইস্যু বের করার দুরভিসন্ধি নিয়ে বিএনপি কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে বলে মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের নতুন যাত্রার সময় আমি একেবারে অসুস্থ ছিলাম। দুই দিন খবরের কাগজও পড়তে পারিনি। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানতে পেরেছি, একটা কমিটি হয়েছে। এত দিন একটা অনিশ্চয়তা ছিল। এখন তো মন্ত্রণালয়ের সচিবদের দিয়ে একটা কমিটি করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কমিটির কার্যক্রমের প্রথম মিটিং হয়েছে। কাজেই এ বিষয়টা হুট করে সমাধান করা যাবে না। সরকারের আন্তরিকতা ও ইচ্ছার সামান্যতমও কমতি নেই।’ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত, তাদের আবারও বলব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, একটা শক্তিশালী কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটিও তাদের তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে ও তার নির্দেশে কমিটির কাজ এগিয়ে চলেছে। এই কর্মকাণ্ডের ওপর আস্থা রেখে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধরে, কিছুটা সময় অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করছি। প্রধানমন্ত্রী যা বলেন তা করেন। তিনি কথা দিলে কথা রাখেন।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোটা সংস্কারের অন্দোলনে জড়িয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ফোন দিয়েছিলেন এটা সবারই জানা। আন্দোলন করার মতো জনসমর্থন তাদের নেই। তাই তারা আজকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করেছে।

 এখান থেকে যদি কোনো ইস্যু বের করা যায়। যদি আন্দোলনের কোনো ইস্যু পিকআপ করা যায়, এটাই তাদের দুরভিসন্ধি।

কোটা আন্দোলন নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের যে কোনো কথা, যে কোনো আশ্বাস বিএনপির কোনো দিনই পছন্দের নয়। তাদের ব্যাপারটা এমন, যারে দেখতে না’রি, তার চরণ বাঁকা। সরকার যা-ই করে, তাতে তাদের কোনো আস্থা নেই। তাদের কোনো সায় নেই। কাজেই বিএনপি কী বলল না বলল, তারা আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছে। ৯ বছর আন্দোলনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে।’ তিনি বলেন, বিএনপির ওপর ভারত কিছুতেই ভরসা করবে না— দিল্লিতে এইচ টি ইমামের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এইচ টি ইমাম সাহেব সম্পর্কে মিডিয়ায় যে খবর এসেছে, আমি তার সঙ্গে আলাপ করে তা নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ পাইনি। কারণ তিনি নয়াদিল্লি থেকে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটা প্রোগ্রামে গেছেন বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করতে। তিনি ব্রাসেলসে আছেন। বিষয়টা তার কাছ থেকে নিশ্চিত না হয়ে কোনো কমেন্ট করা উচিত হবে না।’

সর্বশেষ খবর