শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

কারা হবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক, মস্কো থেকে

মস্কোর প্রাণকেন্দ্র রেড স্কয়ার। স্কয়ারের চারপাশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো। জায়গায় জায়গায় জটলা করে পুলিশ দাঁড়ানো। চাইলেই হেঁটে ভিতরে ঢুকতে পারবে না কেউ। রাশিয়ার প্রাণকেন্দ্র ক্রেমলিনের দিকে যেতে পাড়ি দিতে হয় চেকপোস্ট। নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতটাই নিশ্ছিদ্র যে, সেখানে প্রবেশ করতে মানিব্যাগটাও খুলে দেখাতে হয়। তাই বলে পর্যটকের ভিড় কম, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গড়ে ওঠা ফুটবল পার্কে ভিড় লেগেই থাকে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। ফিফার নানান আয়োজন থাকে। স্থানীয় আয়োজক কমিটিও নানান আয়োজনে মাতিয়ে রাখে ফুটবল ভক্তদের। রাশানদের উৎসব করতে কেবল উপলক্ষ পেলেই হয়। আর এতো বিশ্বকাপ। দ্য গ্রেটেস্ট শোন অন আর্থ। উন্মাতাল আনন্দে মেতে উঠাই স্বাভাবিক। বাকি আছে দুদিন। ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়ার ফাইনাল নিয়ে মস্কোয় উত্তেজনার পারদ বেড়েই চলেছে। এর আগে দুবার ফাইনাল খেলে ফ্রান্স বিশ্বকাপ জিতেছে একবার। অন্যদিকে প্রথমবার ফাইনালে লড়বে ক্রোয়েশিয়া। পুরান না নতুন চ্যাম্পিয়নের দেখা মিলবে সেটাই অপেক্ষা। গ্রিজম্যানরা ২০ বছর পর হারানো গৌরব উদ্ধার না মডরিচের হাতে স্বপ্নের ট্রফি উঠবে এ নিয়ে শুধু মস্কো নয় দুনিয়া জুড়ে ফুটবলপ্রেমীরা উত্তেজনায় কাঁপছে। প্রস্তুত ফ্রান্স প্রস্তুত ক্রোয়েশিয়া। শেষ বাঁশি বাজার পরই সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটবে। স্বাগতিক রাশিয়া নেই, তাই বলে বিশ্বকাপের উন্মাদনা কোনো দিক দিয়েই কমে যায়নি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও আধুনিক শহরটিতে। বরং ফাইনালকে সামনে রেখে বেড়েই চলেছে। ফ্যান জোনে প্রতিদিন ভিড় জমায় ব্যস্ত লোকগুলোও। দিনের কাজে ফাঁকফোঁকর বের করে ছুট দেয় ফুটবল পার্কে। যদি দেখা পায় কোনো কিংবদন্তি ফুটবলারের। অনেক সময় দেখা পায়। অনেক সময় অপেক্ষায় সময় পার করতে হয়। এদের কেউ সেলফি তুলতে ব্যস্ত, আবার অটোগ্রাফ নিতে ঘুরছে সবাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ-তরুণী, কর্মব্যস্ত অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, এই উৎসব থেকে বাদ নেই কেউই। ফ্যান জোন কিংবা ফুটবল পার্কে এক পাক ঘুরে আসে সবাই। এমনকি বুড়ো-বুড়িরাও এই উৎসবের বাইরে নয়। গতকাল মস্কোর ফুটবল পার্কে এসেছিলেন সাবেক স্প্যানিশ ফুটবলার গার্সিয়া। এক সময় বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে বেশ সুনামের সঙ্গে খেলেছেন। স্প্যানিশ জার্সিতে খুব বেশি ম্যাচ না খেললেও তাকে সমর্থকরা মনে রেখেছে এখনো। তাকে ঘিরে ভক্তরা উৎসবে মেতে উঠেছিল গতকাল। ফুটবলের সাবেকদের এভাবেই নিয়ে এসে মস্কোর ফাইনাল মঞ্চটা উত্তপ্ত করে রাখছে ফিফা। আর রাশানরা! ছিটকে পড়লেও কোরাস গাইছেন সুরে সুরে, ‘রা-শি-য়া, রা-শি-য়া’ বলে। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ফাইনাল ১৫ জুলাই। বাকি দুদিন। কিন্তু এই স্টেডিয়ামের কোনো ছুটি নেই। সময়ের এদিক-ওদিক হলেও এর গেট খুলে যায় প্রতিদিন। এর কারণ, ফাইনালের মঞ্চ যে এই লুঝনিকিই! প্রতিটা দিন, প্রতিটা মুহূর্ত তারা কাজে লাগাচ্ছে ফাইনাল মঞ্চটা আরও সুন্দর করতে। আরও আকর্ষণীয় করে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে।

সর্বশেষ খবর