শনিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

যাত্রী নিয়ে বিপাকে বিমান, ঢাকা ছাড়ছে চার হজ ফ্লাইট

মোস্তফা কাজল

এবারের হজযাত্রায় তিন সংকট পিছু নিয়েছে বিমানের। প্রথমত, ভাড়া করা উড়োজাহাজে হজযাত্রী পরিবহন করা যাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, সৌদি সিভিল অ্যাভিয়েশন বাংলাদেশের সিভিল অ্যাভিয়েশনকে জানিয়েছে, এবার নির্ধারিত ফ্লাইট শ্লটের অতিরিক্ত কোনো শ্লট বিমান বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে না। তৃতীয়ত, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১২ হাজার টিকিট অবিক্রীত রয়ে গেছে। এসব সংকট মাথায় নিয়ে আজ ঢাকা ছাড়ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চারটি হজ ফ্লাইট। প্রথমটি সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে ৪১৯ হজযাত্রী নিয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। প্রথম হজ

ফ্লাইটের যাত্রীদের ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন। এদিকে হঠা ভাড়া করা উড়োজাহাজে হজযাত্রী পরিবহনে সৌদি সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করায় নতুন সংকটে পড়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বিমান কর্তৃপক্ষ হজযাত্রী পরিবহনে দুটি উড়োজাহাজ ভাড়া করেছিল। এ দুই উড়োজাহাজে ৪১৯ করে ৮৩৮ জন হজযাত্রী পরিবহনের কথা ছিল। সংকট সমাধানে বিমানকে সৌদি আরবের তিনটি রুট সাময়িকভাবে বন্ধ করতে হয়েছে। এবার হজযাত্রীরা যাত্রা বাতিল করলে মাশুল গুনতে হবে। এজন্য প্রথমবারের মতো হজযাত্রীদের টিকিট কেনার পর যাত্রার তারিখ পরিবর্তনে ১০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ টাকা এবং যাত্রা বাতিলের ক্ষেত্রে ২০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ টাকার বাড়তি মাশুল আদায়ের বিধান চালু করা হয়েছে। হজ ফ্লাইটে উড়োজাহাজ ভাড়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকায় নিয়মিত ১৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনায় সমস্যায় পড়েছে বিমান। এ ছাড়া বিমানের পরিকল্পনা ছিল নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করে ভাড়া করা উড়োজাহাজ দিয়ে সৌদি আরবের বাকি তিনটি গন্তব্যের ফ্লাইট ঠিক রাখা। জানতে চাইলে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভাড়ার উড়োজাহাজ দিয়ে যাতে সৌদি আরবে ফ্লাইট চালানো যায় এজন্য বিমান চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, খুব শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে।’ আজ আরও যে তিনটি হজ ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে তা হলো বিজি-৩০১১, বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে, বিজি-৫০১১ বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে ও শিডিউল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫, রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে। এ তিন ফ্লাইটে ৪১৯ জন করে হজযাত্রী পরিবহনের কথা রয়েছে। এবার চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকেও এ বছর যথাক্রমে নয়টি ও তিনটি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ বিমানের হজ ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন (ব্যালটি ও নন-ব্যালটি) হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এদিকে সৌদি আরবের ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ভাড়ার বিমানে যাত্রী পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। তবে এ সংকট নিরসনে বাংলাদেশ বিমান ঢাকা-রিয়াদ-ঢাকা ভায়া দাম্মাম ফ্লাইটটি হজ ফ্লাইটের জন্য বরাদ্দ করেছে। এদিকে ২৫ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালের বিভিন্ন ফ্লাইটে এখনো প্রায় ১২ হাজার হজ টিকিট অবিক্রীত রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিমানের পক্ষ থেকে সব হজ এজেন্সিকে হজযাত্রীদের দ্রুত টিকিট সংগ্রহের অনুরোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন।

হজযাত্রীদের জন্য কিছু বিধিনিষেধ : প্রত্যেক হজযাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক দুটি লাগেজে ৪৬ কেজি মালামাল বহন করতে পারবেন। এ ছাড়া কেবিন ব্যাগেজে ৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই একেকটি ব্যাগেজের ওজন ২৩ কেজির বেশি হবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেটে নিয়ে আসা হবে এবং হাজীরা ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেট ফেরত আসার পর তাদের তা দেওয়া হবে। বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটসমূহের চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের মতো এবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসংলগ্ন আশকোনা হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন হবে।

সর্বশেষ খবর