মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

উৎসবের বন্যায় ফ্রান্স

ক্রীড়া প্রতিবেদক

উৎসবের বন্যায় ফ্রান্স

বিশ্বকাপ জয় উদযাপনে প্যারিসে বিপুল সমাগম —এএফপি

‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ ওদের ‘মুখ হাসে’, ‘চোখ হাসে’ আর ‘টগবগিয়ে খুন হাসে’। এ উল্লাস ইতিহাস গড়ার। এ উৎসব বিশ্বকাপ জয়ের। ওরা বাঁধনহারা তরুণ দল। বহুপথ পাড়ি দিয়ে, সেনা দলকে পরাজিত করে বিজয়ের মালা পরেছে। ওদের রুখবে কে? ফ্রান্স দলে অলিভিয়ের গিরদই কেবল ত্রিশের বুড়ো। বাকিরা  তরুণ। তারুণ্যের জয়গান সবখানে। এ বয়সেই তো দুঃসাহসেরা দেয় উঁকি! বিশ্বকাপের সোনার হরিণ নিয়ে লাফালাফি করল ফ্রান্স। উচ্ছ্বাস এত বেশি ছিল, পল পগবার পায়ে আঘাত করল সতীর্থদের কেউ। কাতরে ওঠে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দের কাছে এসব আঘাত খুব নগণ্য। দাঁড়িয়ে যান। উচ্ছ্বাস করেন। ট্রফি হাতে বানরের মতো লাফালাফি করেন। তাকে সঙ্গ দেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপের সেরা তরুণ ফুটবলার। আঁতোয়ান গ্রিজম্যান আর হুগো লরিসরাও তরুণদের সঙ্গে যোগ দেন। বুড়ো গিরদই বা বাদ থাকবেন কেন! ফ্রান্স দলের কেউই বাদ থাকল না এ উৎসব থেকে। দলের স্টাফরাও মাঠে এসে যোগ দিলেন লিসদের সঙ্গে। তারপর মাঠের উৎসব শেষ করে ফ্রান্স দল বিজয়ীর বেশে প্রবেশ করল মিক্সড জোনে। বার্সা তারকা স্যামুয়েল উমতিতি ছিলেন গায়ক দলটার নেতৃত্বে। গাইতে গাইতে নাচতে নাচতে চারজনের দলটা পাড়ি দিয়ে গেল মিক্সড জোন। বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে এলেন রাফায়েল ভারানে। সাংবাদিকদের খুব কাছ দিয়ে নিয়ে গেলেন তিনি বিশ্বকাপের সোনার হরিণ। পল পগবা এলেন তার আসল রূপ ধরে। তিনি ‘হেসে খলখল গেয়ে কলকল’। চ্যাম্পিয়ন দলটা সারা বিশ্ব থেকে আগত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরল তাদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ, বিশ্বকাপ ট্রফি। সে সময় খুব মন খারাপ করে ভারানেদের দিকে তাকিয়েছিল ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার সাংবাদিকেরা। এমন উচ্ছ্বাস করতে করতে মিক্সড জোন পাড়ি দিতে পারত তাদের দলও!  ক্রোয়েশিয়া ছিল ফ্রান্সের ঠিক বিপরীত। ফাইনাল হারার যন্ত্রণায় কাতর দলটার অনেকে কথাই বলল না। রাকিটিচরা কেবল ক্ষমা চেয়ে গেলেন। ফ্রান্স দলের বিজয়ী সদস্যরা বিশ্বকাপ জয়ের রাতটা উদযাপন করল। শ্যাম্পেনে গোসল করল। সারা রাত উৎসব করল ওরা মনের আনন্দে। ফরাসি দলের সদস্যদের মতোই উৎসব করল পুরো ফরাসি জাতি। তারা প্যারিসের আইফেল টাওয়ার এলাকা ছেড়ে নড়ল না। রাত কাটিয়ে দিল হাজার হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে। রাশিয়া জয় করে ফিরবেন বীর সেনানীরা। তাদের সাদরে বরণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ফরাসিরা। বিশ্বজয়ী বীরদের বরণ করতে একরাত কেন, আরও কয়েকটা রাত খোলা আকাশের নিচে কাটাতেও রাজি ওরা। ফ্রান্স দ্বিতীয় বিশ্বকাপ এবং বেশ কয়েকটা রেকর্ড সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরছে। দিদিয়ের দেশম বেকেনবাওয়ারকে স্পর্শ করলেন অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতে। পেলের পর সবচেয়ে তরুণ হিসেবে বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করলেন এমবাপ্পে। আরও কত কী! ইতিহাস গড়া এমন বীরদের বরণ করতে ফুলের ডালা সাজিয়ে অপেক্ষা করবেই তো ফরাসি জাতি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর