জেল-জরিমানার বিধান রেখে মানসিক স্বাস্থ্য আইন-২০১৮ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। যাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনো চিকিৎসক উদ্দেশ্যমূলকভাবে মানসিক অসুস্থতার মিথ্যা সনদ দিলে জেল ও জরিমানা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনটি অনুমোদন দেওয়া হয়। মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় একটি অধিদফতর গঠনের বিধান রেখে গত ৩ জানুয়ারি ‘মানসিক স্বাস্থ্য আইন’ ২০১৮ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের (সমন্বয় ও সংস্কার) বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম নির্ধারিত সংবাদ ব্রিফিং এ বলেন, ১৯১২ সালের একটি আইনকে হালনাগাদ করে নতুনভাবে বাংলায় রূপান্তর করে এই আইন করা হচ্ছে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সংক্রান্ত নাগরিকদের মর্যাদা সুরক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া, সম্পত্তির অধিকার ও নিশ্চিতকরণ, পুনর্বাসন ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতে একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের অংশ হিসেবে এই আইন করা হচ্ছে। জিয়াউল আলম বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় পেশাজীবী হিসেবে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি মানসিক অসুস্থতা নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা সনদ দিলে তিন লাখ টাকা জরিমানা, এক বছর কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অভিভাবক বা ব্যবস্থাপক মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা বা সম্পত্তির তালিকা প্রণয়ন বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে অবহেলা বা আদালতের কোনো নির্দেশ বাস্তবায়ন না করলে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীনে কোনো বিধান না মানলে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, ছয় মাস কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। সচিব জানান, প্রস্তাবিত আইনে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সব কার্যক্রম পরিচালনা, উন্নয়ন, সম্প্রসারণ, নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের দায়িত্ব সরকারের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রদান এবং এ সংক্রান্ত সংক্ষুব্ধতায় প্রতিকারের লক্ষ্যে মানসিক স্বাস্থ্য রিভিউ মনিটরিং কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসাবিষয়ক হাসপাতাল স্থাপন, পরিচালনা ও মানসম্মত সেবা দেওয়ার বিষয়েও প্রস্তাব রাখা হয়েছে আইনে। সচিব আরও জানান, মন্ত্রিসভা বৈঠকে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে জাতীয় নারী ক্রিকেট দলটি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করায় মন্ত্রিসভা ধন্যবাদ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে সদ্য বিদায়ী অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী মহাহিসাব নিরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ায় মন্ত্রিসভা ধন্যবাদ প্রস্তাব গ্রহণ করে। এ ছাড়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বড় বোন সায়মা ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে মন্ত্রিসভা।