মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রথম শীর্ষ বৈঠক ট্রাম্প-পুতিন কী কথা হলো

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রথম শীর্ষ বৈঠক ট্রাম্প-পুতিন কী কথা হলো

ট্রাম্প-পুতিন গতকাল সংবাদ সম্মেলনের আগে করমর্দন করেন —এএফপি

অবশেষে বৈঠকে বসলেন বিশ্বের দুই ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউরোপের দেশ ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে এই বৈঠক হয়। প্রথম সাক্ষাতেই দুজন দুই ঘণ্টারও বেশি সময় কথা বলেন। বৈঠক শেষে একে ‘শুভ সূচনা’ বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প । পুতিনের সঙ্গে দুই ঘণ্টার বৈঠকের পর ভোজনের শুরুতে শীর্ষ কর্মকর্তা পরিবেষ্টিত একটি কনফারেন্স টেবিলে সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প ওই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এ এক শুভ সূচনা। প্রত্যেকের জন্যই একটি শুভ সূচনা।” আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ এবং ভালোভাবে শেষ হয়েছে। ওদিকে, পুতিন বলেন, “অনেক সমস্যাই রয়ে গেছে। আমরা সব বাধা দূর করতে পারিনি, কিন্তু আমি মনে করি এ পথে আমরা প্রথম একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পেরেছি।” ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা ‘খোলাখুলি’ এবং ‘গঠনমূলক’ হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন তিনি। তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, বৈঠক শুরু হয় পূর্ব নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ পর। তাদের এ বৈঠকে কেবল দোভাষীরাই উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শুরুর আগে পুতিনের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই সফলভাবে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের জন্য তাকে অভিনন্দন জানান ট্রাম্প। এটি সেরা আয়োজনগুলোর অন্যতম ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। এরপর ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে পুতিনের পাশে বসে উষ্ণ বক্তব্য দিয়ে বৈঠক শুরু করেন ট্রাম্প। আর তখনই রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, অনেক দিন থেকেই তিনি দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছেন। ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি আমরা একটি অসাধারণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারব। আমি সেটিই আশা করি। আমি এ কথাই বলে আসছি। আমি নিশ্চিত যে আপনারাও কয়েক বছর ধরে এ কথা শুনে এসেছেন। আমি প্রচার চালিয়ে বলেছি, রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ভালো ব্যাপার, খারাপ কিছু না।” অন্যদিকে পুতিন বলেন, “বিশিষ্ট প্রেসিডেন্ট, ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিতে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরে আমি আনন্দিত। যদিও আমাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ আছে...আমরা ফোনে কথা বলেছি এবং কয়েকটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে আমাদের বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে।

“তবে অবশ্যই নিজেদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার এবং বিশ্বের সমস্যাপূর্ণ অনেকগুলো এলাকা নিয়ে আলোচনার এটাই সময়।” ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ মস্কোর দখল করে নেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়লাভে ক্রেমলিনের সহায়তার অভিযোগ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। বৈঠকে কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। তবে দুই দেশের বাণিজ্য, সামরিক, চীনের আধিপত্য বিস্তার ও নিজেদের পরমাণু অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্প-পুতিনবিরোধী বিক্ষোভ : হেলসিংকিতে ট্রাম্প ও পুতিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। ‘হেলসিংকি অ্যাগেইনস্ট ট্রাম্প অ্যান্ড পুতিন’ নামের একটি সংগঠন এই বিক্ষোভের আয়োজন করে। বিক্ষোভকারীরা এই দুই নেতার কার্টুন সংবলিত প্লাকার্ড-ফেস্টুন বহন করেন। এই দুই নেতাকে মানবাধিকারের শত্রু, যুদ্ধাপরাধী ও শিশু হত্যাকারী বলে আখ্যা দেন বিক্ষোভকারীরা। তারা ট্রাম্পকে আমেরিকার শত্রু বলেও উল্লেখ করেন।

হেলসিংকিতে যে কারণে বৈঠক : হেলসিংকিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নেতাদের মধ্যে এটাই প্রথম বৈঠক নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ফিনল্যান্ড রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে পরিচিত। যে কারণে দুই পরাশক্তি রাষ্ট্রের বৈঠকের জন্য ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিকে নির্ধারণ করা হয়েছে। এএফপি, বিবিসি।

সর্বশেষ খবর