বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ইসির সতর্ক চোখ

গোলাম রাব্বানী

রাজশাহী-সিলেট-বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার দিকে সতর্ক চোখ রাখছে নির্বাচন কমিশন। সংসদ নির্বাচনের আগে তিন সিটি নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এই সাংবিধানিক সংস্থাটি। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। গতকাল রাজশাহীতে ককটেল হামলার ঘটনায় নতুন করে তিন সিটির প্রার্থী, ভোটার ও জনসাধারণের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনও তিন সিটির আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। তিন সিটিতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে বরিশাল ও রাজশাহীর কিছু এলাকায় বাড়তি সতর্কতা রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তিন সিটি এলাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে বসানো হচ্ছে নিরাপত্তা চৌকি। ভোটগ্রহণের দিন ভোটারদের কেন্দ্রে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রেও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে।

গত ১২ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকে তিন সিটির ভোট নিয়ে নানা শঙ্কার বিষয়ে আলোচনা হয়। ওইদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেন, তিন সিটির ভোটে কালো টাকার খেলা চলছে, ভোটের দিন অনেকেই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সিল মেরে সেই ছবি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারে। বরিশাল সিটি ও রাজশাহীর মতিহার, কাজলা এলাকা নিয়ে সতর্ক থাকার কথাও উল্লেখ করেন একজন কর্মকর্তা। সেই সঙ্গে তিন সিটিতে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার, পেশিশক্তি নিয়ন্ত্রণ, হোটেলে হোটেলে বহিরাগতদের অবস্থান, জঙ্গিদের বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ এসেছিল। তাই রাজশাহীর ককটেল হামলার পরে তিন সিটি নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে কমিশন।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাজশাহীতে শান্তিপূর্ণ প্রচারণা চলছে। দুই প্রার্থীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে কারা ককটেল হামলার এই ঘটনা ঘটালো তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এ জন্য গোয়েন্দা বিভাগ, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা এই ঘটনার তদন্ত করছেন। এরপরে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব। তবে এই হামলার পরে তিন সিটিতে নতুন কোনো সতর্কতা থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। বরিশাল সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুজিবুর রহমান বলেন, বরিশালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। তারপরও পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। সিলেট সিটির রিটার্নিং অফিসার আলীমুজ্জামান বলেন, সিলেটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। সুষ্ঠু ভোটের জন্য সব কিছু মাথায় রেখে কাজ করছেন তিনি।

জানা গেছে, তিন সিটিতে দলীয় প্রতীকে প্রথম সিটি ভোট হওয়ায় এখানে বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বেশি করে পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে। ভোটের দুই দিন আগে থেকে ভোটের পর দিন পর্যন্ত চার দিন (২৮ জুলাই-৩১ জুলাই) ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন রাখা হবে। পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স এবং প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাবের টিম এবং বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হবে। রাজশাহীতে ১৫ প্লাটুন, বরিশালে ১৫ প্লাটুন ও সিলেটে ১৪ প্লাটুন বিজিবি রাখা হবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র‌্যাব-পুলিশের টিম ও কয়েক প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে থাকবে।

সর্বশেষ খবর