সোমবার, ২৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

কামরানের ক্যাম্পে আগুন আরিফের আলটিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের একটি নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শহরতলির শাহপরান থানাধীন টুলটিকর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এর পেছনে ‘বিএনপি জড়িত’ বলে অভিযোগ করেছেন কামরান। এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিএনপি। অন্যদিকে পুলিশ নির্বাচনী পরিবেশ ‘ঘোলাটে’ করতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। এসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা না নিলে ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন তিনি। গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের গাজী বুরহান উদ্দিন-গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি ছোট কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনের শিখা দেখে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই কার্যালয়ে থাকা নির্বাচনী ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট প্রভৃতি পুড়ে যায়। গতকাল সকালে কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।  এ ব্যাপারে শাহপরান থানার ওসি আখতার হোসেন বলেন, ‘কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।’ তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করা হচ্ছে। বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘সিলেটে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই গণজোয়ার দেখে বিএনপি স্তম্ভিত। বিএনপির পক্ষে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় জ্বালিয়ে দেওয়া কঠিন কিছু নয়।’ আওয়ামী লীগের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এই ধরনের কোনো নোংরামির সঙ্গে আমরা জড়িত নই। আমাদের কোনো নেতা-কর্মী এ ঘটনা ঘটায়নি। যদি তারা প্রমাণ করতে পারে, এ ঘটনার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত, তবে তার বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে চাই। আমরা নিজেরা অন্যায় করব না, কাউকে অন্যায় করতে দেব না।’

এদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী পুলিশের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে ‘পরিস্থিতি ঘোলাটে’ করার অভিযোগ তুলেছেন। আরিফের অভিযোগ, কয়েকজন পুলিশ সদস্য অতিউৎসাহী হয়ে পরিবেশকে ঘোলাটে করতে চাচ্ছে। এসব পুলিশ সদস্যদের ‘হীনউদ্দেশ্য’ সম্পর্কে বিএনপি ‘সন্দিহান’। বিএনপির দুই কর্মীকে গ্রেফতারের পর গত শনিবার প্রায় দুই ঘণ্টা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ের সামনের সড়কে নেতা-কর্মীদের নিয়ে অবস্থান করেন। সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনার এবং রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সবাইকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনের জন্য এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ঠিক এরকম সময়ে দু-তিনজন অতিউৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের এ পরিবেশকে ঘোলাটে করতে চাইছেন। তাদের হীনউদ্দেশ্য সম্পর্কে আমরা সন্দিহান। আমরা চাই, এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইসি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। আর ইসি যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে আমরা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।’

এদিকে গতকাল নগরীর দাড়িয়াপাড়া, কুশিঘাট, মণিপুরীপাড়া, গাজী বুরহান উদ্দিন রোড ও মাছিমপুর এলাকায় গণসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী কামরান। তার সঙ্গে সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ নেতা-কর্মীরা ছিলেন। অন্যদিকে নগরীর আম্বরখানা বাজার, রংমহল টাওয়ার, পৌর বিপণি মার্কেট, হকার্স মার্কেট, সিটি সুপার মার্কেট, কুদরত উল্লাহ মার্কেট, মহাজনপট্টি, কালিঘাট এবং লালদিঘীরপাড় এলাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রচারণা চালান বিএনপির প্রার্থী আরিফ। মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মির্জা আফরোজা আব্বাস, বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আখতার শিপা, সাবেক এমপি রাশেদা বেগম হীরা, ইয়াসমিন আরা হক, নেওয়াজ হালিমা আরলী প্রমুখ আরিফের সঙ্গে ছিলেন।

সর্বশেষ খবর