মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিটি ভোটে সন্দেহ অবিশ্বাস

সতর্ক আওয়ামী লীগ-বিএনপি

বরিশাল

নিজামুল হক বিপুল ও রাহাত খান, বরিশাল থেকে

বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি বড় দুই দল ব্যস্ত পোলিং এজেন্ট বাছাইয়ে। দলের দক্ষ, সাহসী ও ওয়ার্ডের রাজনীতিতে পরিচিত নেতা-কর্মীদের নিয়ে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পক্ষে সাত শতাধিক পোলিং এজেন্টের তালিকা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। অপর দিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও পোলিং এজেন্টদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিশ্বস্তদের মধ্য থেকে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে কেউ নৌকার এজেন্ট হয়ে বুথে ধানের শীষ বা অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে কাজ না করেন। উভয় দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এর বাইরে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী অন্য দলগুলোও তাদের পোলিং এজেন্ট তৈরি করছে বলে জানা গেছে।  প্রসঙ্গত, নির্বাচনে যাতে জাল ভোট বা ভোটার বিদেশে বা এলাকার বাইরে আছেন অথবা মারা গেছেন এমন ভোটারদের ভোট যাতে কেউ দিতে না পারে সে জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীর পক্ষে ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি বুথে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়।

বরিশালের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার দুই লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন। এর জন্য সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্রের সংখ্য ১২৩টি। যাতে বুথ থাকবে ৭৫০টি।

জানা গেছে, গত শনিবার রাতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের পক্ষে পোলিং এজেন্ট নিয়োগের জন্য তার বাড়িতে মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদলসহ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। সেখানে মহানগর বিএনপির সব ওয়ার্ডের সভাপতি ও সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় পোলিং এজেন্ট নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ওয়ার্ড পর্যায়ের যেসব নেতা-কর্মী দলের প্রতি বিশস্ত এবং সাহসী তাদের মধ্য থেকে পোলিং এজেন্ট বাছাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা পোলিং এজেন্টের তালিকা তৈরি করছি। ইতিমধ্যে কিছু তালিকা সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পোলিং এজেন্টের তালিকা যাচাই-বাছাই করছি। যাতে এজেন্ট নির্বাচনে কোনো ভুল না হয়। খুব শিগগির সব কেন্দ্রের জন্য এজেন্ট চূড়ান্ত করা হবে। তিনি জানান, তাদের সাত শতাধিক এজেন্ট থাকবে, যাতে কোনো রকম কারচুপি বা ভোট জালিয়াতি না হয়। একাধিক স্তরে এজেন্ট রাখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি কোনো সমস্যায় পড়ে, কিংবা অসুস্থ হয় অথবা অন্য কোনো রকম বাধার মুখে পড়েন তাহলে বিকল্প ব্যক্তিকে এজেন্ট দেওয়া হবে। কোথাও বুথ খালি রাখা হবে না। ১২৩টি কেন্দ্রেই কি এজেন্ট দিতে পারবেন— এমন প্রশ্নে মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, ‘বরিশালে বিএনপি শক্তিশালী সংগঠন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি আছে, সংগঠন আছে। কোথাও কোনো দুর্বলতা নেই। সব বুথেই এজেন্ট দেওয়া হবে। ’

অপরদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষেও পোলিং এজেন্টের তালিকা তৈরির কাজ চলছে ব্যাপক যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে তালিকা তৈরির কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পোলিং এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে সবার আগে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে সাদিক আবদুল্লাহর বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠদের। যাতে নৌকার এজেন্ট হয়ে অন্য কারও পক্ষে কাজ করতে না পারেন।

এজেন্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া কতদূর জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর মুখপাত্র অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা এখনো এজেন্ট চূড়ান্ত করিনি। যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। যারা দলীয় প্রার্থীর অনুগত, নিবেদিত নেতা-কর্মী তাদেরকেই এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, এই এজেন্ট নিয়ে অতীতে বাজে অভিজ্ঞতা আছে। আগের সিটি নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগ প্রার্থী শওকত হোসেন হিরণের টেলিভিশন মার্কার পক্ষে যাদের পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছিলাম তাদের একটা বড় অংশ আমাদের সঙ্গে বেঈমানি করেছে। আমাদের এজেন্ট হয়ে তাদের একটা বড় অংশ বিএনপি প্রার্থী বর্তমান মেয়র আহসান হাবিব কামালের পক্ষে কাজ করেছে। তাই এবার আমরা সতর্কভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছি। ১২৩টি কেন্দ্রের সবকটি বুথেই পোলিং এজেন্ট দেওয়া হবে। বিকল্পও রাখা হবে যোগ করেন তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর