বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারেনি ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারেনি ইসি

এম হাফিজউদ্দিন খান

আসন্ন তিন সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সমালোচনা করে সুজন বলেছে, এসব নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে পারেনি ইসি।

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সংশয়ের কথা জানানো হয়। ‘রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন’ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সুজন। আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে সুজন সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, আসন্ন তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ও সংশয় রয়েছে। এর কারণ হলো নির্বাচন কমিশন সবার জন্য সমান লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারছে না। দেখা যাচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এ ক্ষেত্রে কমিশন কারও বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি করা হচ্ছে। কমিশন সিটিগুলোতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করছে না।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, চলতি বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে এক ধরনের নতুন প্রবণতা তৈরি হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রের বাইরে তেমন সহিংসতা নেই, কিন্তু নির্বাচনটি হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত। মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখছে যে, তার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। আবার যে প্রার্থী এক লাখ বা দুই লাখ ভোট পাচ্ছেন তিনি এজেন্ট দিতে পারছেন না। তিনি আরও অভিযোগ করেন, সব প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের ব্যয়সীমা অতিক্রম করেছে। পাঁচ বছরে সিটি করপোরেশন বাজেটের চেয়ে বেশি অর্থ প্রার্থীরা নির্বাচনে জয়ের জন্য ব্যয় করছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিন সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন করেন সুজনের সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার। তিনি বলেন, প্রার্থীরা আয়, সম্পদ ও করের যে বিবরণ দিয়েছেন তা অমনক ক্ষেত্রে সঠিক নয়। আবার কেউ কেউ তথ্য গোপন করে থাকে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনের উচিত হলফনামায় দেওয়া তথ্য যাচাইবাছাই করা। প্রার্থীদের শিক্ষাগত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘তিন সিটি মিলে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোনো প্রার্থীর হার ৪৪.৭০%  অর্থাৎ ৫৪৮ জনের মধ্যে ২৪৫ জন। উচ্চ শিক্ষিত ১৩৩ জন। উচ্চ শিক্ষিতের হার বরিশালে (২৬.৪৭%) এবং স্বল্প শিক্ষিতের হার সিলেটে বেশি (৫১.৭৯%)। এ ছাড়া তিন সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ীদের হার ৫২.৩৭% (২৮৭ জন)। ব্যবসায়ীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার হার বরিশালে সবচেয়ে বেশি (৫৮.৮০%) এবং রাজশাহীতে সবচেয়ে কম (৪৮.৩৮%)। প্রার্থীদের মামলা সংক্রান্ত তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলা হয়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে মামলা সংশ্লিষ্টতার হার বেশি।

সর্বশেষ খবর