বৃহস্পতিবার, ২ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ছাত্র বিক্ষোভে অচল রাজধানী

এবার সাত দফা, বাসচালক রিমান্ডে মালিক আটক, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ ছুটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্র বিক্ষোভে অচল রাজধানী

রাজধানীর শাহবাগে গতকাল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা —রোহেত রাজীব

বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে চতুর্থ দিনের মতো গতকালও রাজপথ ছিল উত্তাল। স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। রাজধানীর শনিরআখড়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর একটি পিকআপ উঠিয়ে দেওয়া হয়। এতে ফয়সাল নামে এক ছাত্র গুরুতর আহত হন। ওই এলাকায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে অন্যত্রও ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। অবরোধের কারণে ফার্মগেট, ধানমন্ডি, শ্যামলী, নাবিস্কো মোড়, মতিঝিল, কাকরাইল, শুক্রাবাদ, শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব মোড়, মিরপুর, উত্তরা ও রামপুরার মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দিনভর যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে রাজধানী কার্যত অচল হয়ে পড়ে। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থ দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে সাত দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়। আজ ফের রাস্তায় নামতে সহপাঠীদের প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা। এমন এক পরিস্থিতিতে সরকার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন গতকাল বলেন, বৃহস্পতিবার কোনো স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হবে না। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এক দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেন শিক্ষা সচিব। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হোটেল র‌্যাডিসন এলাকায় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নিরাপদ সড়ক চাই’ স্লোগানে জমা হতে থাকে শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল ছাড়াও রাজধানীর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। নানা স্লোগানে ওই এলাকা মুখরিত হয়ে পড়ে। কিছু সময় পরে ওই এলাকায় সড়ক দিয়ে একটি বড় পিকআপ ভ্যান যেতে চাইলে তাতে বাধা দেয় তারা। পরে গাড়িচালক লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে সেটিতে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধরা। একই সময়ে উত্তরার হাউস বিল্ডিং ও বনানীর কাকলী মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা আইনশৃঙ্খলা, গণমাধ্যমসহ সব ধরনের গাড়ি চলাচলে বাধা দেন। হজযাত্রী ও রোগীদের বহনকারী জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়িগুলোকে চলতে দেওয়া হয়। এসব গাড়িকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা স্কর্ট দিয়ে বিক্ষোভ এলাকা পার করে দেন। উত্তরা ও বিমানবন্দর এলাকায় অন্তত সাতটি স্থানে জড়ো হয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন শিক্ষার্থীরা। কোথাও কোথাও গাছের গুঁড়ি ও মানবঢাল তৈরি করে গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল চলাচলে বাধা দেওয়া হয়। বেলা ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের মোড়ে একটি বিআরটিসি বাস থামিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা চালকের কাছে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দেখতে চান। সন্দেহ হলে চালকের কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে পাশে থাকা একটি পুলিশবক্সে নিয়ে ট্রাফিক সার্জেন্টকে দিয়ে যাচাই করে নেন। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ দীর্ঘ পথ হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছান। দুর্ভোগে পড়েন কমবেশি সব বয়সী মানুষ।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের কোনো বাস দিনভর চলাচল করেনি। অনন্যা, তিতাস, ইমাম, বিনিময়, আলম এশিয়া, এনা ও শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারগুলো খোলা থাকলেও বিক্রি করা হয়নি কোনো টিকিট। সাদেক নামে তিতাস পরিবহনের এক টিকিট বিক্রেতা জানান, তারা সকাল থেকেই সব গাড়ি ছাড়া বন্ধ রেখেছেন। সন্ধ্যা ৬টার পরের টিকিট বিক্রির জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেলা ১১টা থেকে বনানীর কাকলী মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন সরকারি তিতুমীর কলেজ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বনানী বিদ্যানিকেতন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ও ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। ওই এলাকা দিয়ে পুলিশের দুটি পিকআপ ভ্যান যেতে চাইলেও তা অবরুদ্ধ করে ফেলেন তারা। পরে নৌবাহিনীর সদর দফতরের সামনে পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যবহূত দুটি পিকআপ গাড়ি আড়াআড়ি করে রেখে রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরিবহনশূন্য এমন পরিস্থিতিতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে বনানী রেলস্টেশনে গিয়ে ভিড় জমায়। কেউ কেউ রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে কমলাপুর ও বিমানবন্দর দুইমুখী ট্রেন থামাতে একাধিকবার চেষ্টা চালায়। পরে নারায়ণগঞ্জগামী একটি কমিউটার ট্রেন ধীরগতিতে চললে সেটিতে অনেকেই লাফ দিয়ে উঠে কমলাপুরে গিয়ে পৌঁছান।

সকাল ১০টার দিকে ফার্মগেট মোড়ে দুই পাশের সড়কেই অবস্থান নেন সরকারি বিজ্ঞান কলেজ ও আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে ফার্মগেট থেকে উত্তরা, মিরপুর ও গাবতলী এবং ফার্মগেট থেকে গুলিস্তানগামী সব যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বেলা ১১টার দিকে সিটি কলেজ মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শত শত শিক্ষার্থী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় যানবাহন বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। জরুরি সেবা ছাড়া কোনো গাড়ি চলতে দেওয়া হয়নি। নিউমার্কেট, সায়েন্স ল্যাব, কাঁটাবন, কলাবাগান, ধানমন্ডিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। শনিরআখড়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সকাল ৯টায় শুরু হয়ে বেলা ৩টার কিছু সময় পর পর্যন্ত এ অবরোধ চলে। এ সময় অন্তত ১০-১২টি বাস ভাঙচুর করা হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এই অবরোধে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ীতেও শিক্ষার্থীদের অবরোধে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে কর্মস্থলগামী সাধারণ মানুষ। অনেককে হেঁটেই নিজ গন্তব্যস্থলে যেতে দেখা গেছে।

পুরান ঢাকায় অবরোধ : ঢাকার রায়সাহেব বাজার ও তাঁতীবাজার এলাকায় ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।

নৌপরিবহনমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ : দীর্ঘ চার ঘণ্টা অবরোধের দাবি বাস্তবায়নের আলটিমেটাম দিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি শেষ করেছে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তারা রাজধানীর ব্যস্ততম এই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। তাদের সঙ্গে এসে সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইব্রাহীম মেডিকেল কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।

বাসমালিক আটক : দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের ঘাতক বাসের (ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭) মালিক শাহাদাত হোসেনকে আটক করেছে র‌্যাব। র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। এর অংশ হিসেবে ঘাতক বাসটির মালিককে আটক করা হয়েছে।’

এদিকে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার জাবালে নূর পরিবহনের চালক মাসুম বিল্লাহকে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম এ এইচ এম তোয়াহা রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন : বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সাধারণ ছাত্রদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে নাগরিক ছাত্র ঐক্য। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

শান্ত থাকতে বললেন শিক্ষামন্ত্রী : বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় শোক প্রকাশ করে ছাত্রছাত্রীদের ধৈর্য ধরে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন। মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিক্ষা পরিবারের সবাই শোকাহত। এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দোষীদের গ্রেফতার করেছে। সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ অব্যাহত আছে। সব শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীকে শিক্ষা কার্যক্রমে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সভায় শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মাহবুবুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সারা দেশে বিক্ষোভ অবরোধ : দুই শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে সারা দেশে মানববন্ধন, বিক্ষোভ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন। চট্টগ্রাম : সকাল ও বিকালে নগরের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা রাজধানীতে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত দুই শিক্ষার্থী হত্যার বিচারও দাবি করেন। বেলা ১১টার দিকে নগরের কাজীরদেউড়ি, জামালখান মোড়, গনি বেকারি মোড়, গুলজার মোড়ে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করেন হাজারও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। পরে তারা প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এ বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন নগরের বিএএফ শাহীন কলেজ, মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজসহ নগরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রায় দুই শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী এই কর্মসূচি পালন করে।

শিক্ষার্থীদের হাতে এ সময় বিভিন্ন প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ, প্রভাষক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমনা গুপ্তা অংশ নেন।

সিদ্ধিরগঞ্জে পরিবহন শ্রমিকদের অবরোধ : সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিপরীতে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে পরিবহন শ্রমিকরা। সকাল ৭টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডে সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। পরে পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে কিছু গাড়ি চলতে শুরু করে। বেলা ১১টায় শনিরআখড়ায় আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর ট্রাক উঠিয়ে দিলে এক ছাত্র আহত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আবার ছাত্ররা মহাসড়কের সাদ্দাম মার্কেট এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে। দিনব্যাপী অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ দিয়ে কোনো বাস যেমন যেতে পারেনি, তেমনি নারায়ণগঞ্জ অতিক্রম করে কোনো বাস ঢাকায়ও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এতে করে এক দিকে এই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়ে চরম দুর্ভোগে। অপর দিকে অবরোধের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। এদিকে বেলা ১১টায় সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় একজন ছাত্রসহ ১০ জনকে মারধর করে পরিবহন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ ওই চারজনকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়। আহতরা হলেন মিজানুর (১৭), কাউছার আহম্মেদ অভি (১৮), মো. হৃদয় মিয়া (২১) এবং মো. সজীব (১৮)। শ্রমিকদের মারধরে আহত মিজানুর রায়েরবাগ আল-মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

সর্বশেষ খবর