শনিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

পদধ্বনি শুনলে পদত্যাগ করছেন না কেন : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একটি মারাত্মক কথা বলেছেন। সরকারে থেকে তিনি ১/১১-এর পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন। এরপরও আপনারা কেন সরকারে আছেন? এখনো পদত্যাগ করছেন না কেন? সরকার আপনাদের, অথচ আপনারা ১/১১-এর পদধ্বনি শুনছেন। ভুলে গেলে চলবে না, এই ১/১১-এর বেনিফিশিয়ারি কিন্তু আওয়ামী লীগ। এতটাই বেনিফিশিয়ারি যে, তাদের নেত্রী বিদেশ যাওয়ার আগে বলেছিলেন, ‘আমরা এই ফখরুদ্দীন, মইন উদ্দিন সরকারের সব কর্মকাণ্ডের বৈধতা দেব। পার্লামেন্টে আইন পাস করে সেই বৈধতা আওয়ামী লীগ দিয়েছিলও।’ গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ আয়োজিত সাংবাদিক নির্যাতনবিরোধী এক সংহতি সমাবেশে বক্তৃতা করছিলেন। বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাংবাদিক নেতা এম আবদুল্লাহ, মোদাব্বের হোসেন, সৈয়দ আবদাল আহমদ, কাদের গণি চৌধুরী, ইলিয়াস খান, কবি আবদুল হাই শিকদার, আবদুস শহিদ, শহিদুল ইসলাম, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড্যাবের রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বন্ধ থাকা দিগন্ত টিভির কর্মকর্তা মজিবুর রহমান মনজু প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য ‘হাস্যকর ও অর্বাচীন’ বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় বিএনপি আর জিয়া পরিবারের ভূত দেখতে পান। নইলে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই বিয়োগান্ত ঘটনায় তিনি  বেগম খালেদা জিয়াকে কীভাবে যুক্ত করেন? তিনি কীভাবে জিয়াউর রহমানকে যুক্ত করেন? আপনি রাজনীতিবিদ। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন আপনার মুখ দিয়ে এই ধরনের অর্বাচীন কথা-বার্তা শোভা পায় না। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। সবসময় দম বন্ধ করা একটা পরিবেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের রাতের বেলা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর রিমান্ডে নিচ্ছে। অপরাধটা কী? তারা সমর্থন দিয়েছিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে। উসকানি দিয়েছে নাকি। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত ও যুক্তিসঙ্গত আন্দোলনকে আমরা প্রথম দিনই সমর্থন দিয়েছি এবং এই সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। আজকেও কোটা সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকে আমরা অবশ্যই সমর্থন করব। জনগণকে আহ্বান করব শুধু নিরাপদ সড়ক নয়, নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন, আপনারা জেগে উঠুন এবং আবার দেশকে স্বাধীন করুন।’ সরকার পরিবর্তনে রাজনৈতিক দলগুলো আর পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আপনি  বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে খালেদা জিয়া জড়িত। আপনি তখনকার দিনে তাকে চিনতেন কিনা আমি জানি না, আমি চিনতাম। উনাকে আমি ’৭২ সাল  থেকে চিনতাম। নির্মোহ গৃহবধূ। ’৭৫ সালে উনি (খালেদা জিয়া) কী করতেন! কেউ গেলে উনার বাড়িতে— লজ্জায় নম্র বিনীতভাবে বলতেন ভাই আরেকটা বিস্কুট নিন। এই মহিলা শেখ মুজিব হত্যার সঙ্গে জড়িত—এটা আপনি কী বলছেন! এই জাতীয় কথা বলে আপনি হাস্যকর হচ্ছেন।’ মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। তারা বলে আজ আওয়ামী লীগ চলে যাক, পরিবর্তনে  কে আসবে। কিন্তু যারাই আসুক, জনগণের সামনে তাদের বলতে হবে আমরা যদি ক্ষমতায় যাই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাব, সমাজ বদল করব। আজকে সেই পরিবর্তনের জন্য সবাইকে এক হতে হবে। সব রাজনৈতিক দল মিলে আজ একটাই আওয়াজ  হবে— এই স্বৈরাচারের অবসান চাই।’

সর্বশেষ খবর