মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

পবিত্র ঈদুল আজহা কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামীকাল বুধবার সারা দেশে উদ্যাপন হবে আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল পবিত্র ঈদুল আজহা। আমাদের দেশে ঈদুল আজহা ‘কোরবানির ঈদ’ হিসেবে পরিচিত। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত অনুসারে ত্যাগের মহিমা ও উৎসর্গের আনন্দ নিয়ে সারা দেশে উদ্যাপন হবে মুসলমানদের এই বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ তাকবির ধ্বনি দিতে দিতে ঈদ জামাতে হাজির হবেন মুসল্লিরা। ঈদগাহ, খোলা মাঠ বা মসজিদে ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় শেষে সামর্থ্যবান নর-নারী মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের জন্য যার যার সাধ্যমতো পশু কোরবানি দেবেন। রাজধানীতে এবারও নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদ জামাত উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশব্যাপী নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা।

ঈদ উপলক্ষে সারা দেশ মেতে উঠেছে উৎসবের আনন্দে। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের উৎসবে শামিল হতে পথের ক্লান্তি ভুলে সবাই ছুটেছেন গ্রামের বাড়িতে। কোরবানির পশুর হাটগুলো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে জমজমাট। ইতোমধ্যে ঈদ উদ্যাপনের অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মহান রব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এই ঈদ। মহান প্রভুর কাছ থেকে স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে তিনি প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে ১০ জিলহজ তারিখে আল্লাহর রাহে কোরবানি বা উৎসর্গ করতে উদ্যত হয়েছিলেন। ইবরাহিম (আ.)-এর এ উদ্যোগে মহান প্রতিপালক খুবই সন্তুষ্ট হন। সন্তুষ্টির নিদর্শন হিসেবে বেহেশতি দুম্বা পাঠিয়ে আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীর আত্মত্যাগের নিয়তকে কবুল করে নেন। ফলে পুত্রের বদলে কোরবানি হয় দুম্বা। সেই থেকে প্রতি বছর এই দিনে পশু কোরবানি করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব ঘোষণা করা হয়। শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতে মুহাম্মদীর জন্যও পশু কোরবানি ওয়াজিব ঘোষণা করেছেন।

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত হিসেবে কোরবানির গোশতের তিন ভাগের এক ভাগ গরিবের হক ও এক ভাগ আত্মীয়ের হক হিসেবে বণ্টন করা হয়। বাকি এক ভাগ নিজেদের জন্য রাখা হয়। জিলহজে ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোনো দিন পশু কোরবানি করা যায়। তবে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১০ জিলহজ ঈদুল আজহার দিন কোরবানি করাকেই উত্তম ঘোষণা করেছেন।

রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত হবে সকাল ৮টায়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হবে ঈদের পাঁচটি জামাত। এখানে প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত হবে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহে। রাজধানীসহ দেশের সব বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা শহর ও প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লায় ঈদ জামাতের প্রস্তুতি চলছে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার তিন দিন সরকারি ও দুই দিন সাপ্তাহিক— এই পাঁচ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় ও ঈদ মুবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করা হয়েছে। কাল সব সরকারি-বেসরকারি ভবনেও জাতীয় ও ঈদ মুবারক খচিত পতাকা উত্তোলন করা হবে। কারাগার, হাসপাতাল, ভবঘুরে কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, শিশুসদনে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। ঈদ আনন্দের অংশ হিসেবে রেডিও-টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ঈদ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর