রবিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইসলামী দলগুলোরও জোর প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন হারানোর পর নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ইসলামপন্থি দলের সংখ্যা বর্তমানে ১২টি। এর মধ্যে ১১টিই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি।  ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছিল। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হলে এ দলগুলো অংশ নেবে কি না এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে নির্বাচনী প্রস্তুতি থেমে নেই। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় ও ব্যক্তিগত নানা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে তৎপরতা চালাচ্ছেন। অনিবন্ধিত জামায়াত ছাড়াও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলে রয়েছে কওমি মাদ্রাসা ঘরানার জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিস। এ দুই দল হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মুসলিম লীগের একাংশও রয়েছে ২০ দলে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটে রয়েছে সুফি ঘরানার তরীকত ফেডারেশন। এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জোটে রয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট । এ ছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জাতীয় পার্টির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করেছে। জামায়াতের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মভিত্তিক দল হিসেবে পরিচিত চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন কোনো জোটে নেই। এ দলটি ৩শ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। খেলাফত আন্দোলনও জোটবিহীন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ছাড়ার পর তাদের নিয়ে পৃথক মোর্চা গঠনের চেষ্টা করছে ইসলামী ঐক্যজোট। আরও তিন ইসলামপন্থি দল জাকের পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট ও মুসলিম লীগের অপরাংশও কোনো জোটে নেই। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ৪৩ আসনে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছিল জামায়াত। এবার তাদের চাওয়া অন্তত ৫০ আসন। এরই মধ্যে দলটি ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ২০১৩ সালে হাই কোর্টের রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। আপিলে নিবন্ধন ফিরে না পেলে আগামী নির্বাচনে দলীয় পরিচয়ে অংশ নিতে পারবে না দলটি। সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জামায়াত প্রার্থীরা। আগামী নির্বাচনে একই পথে হাঁটতে পারে দলটি। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে না থাকলেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে ইসলামী আন্দোলন। দলটি এবার এককভাবে ভোটে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সারা দেশে প্রায় ১ শতাংশ ভোট পাওয়া দলটির মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ জানিয়েছেন, তারা কোনো জোটে যাবেন না। দুনিয়ার ক্ষমতার জন্য তারা রাজনীতি করেন না।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা জাতীয় পার্টির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করেছি। আমরা আশা করব সরকার সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ভোটের ব্যবস্থা নেবেন। ইসলামী ঐক্যজোট আগামীতে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে। দলটির সহকারী মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসাইন বলেন, ইসলামী ঐক্যজোট নিজস্ব প্রতীকে এককভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে ২৭২টি আসনের প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তরীকতকে দুটি আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। এ দলটির সাবেক মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপি জানিয়েছেন, এবার তাদের লক্ষ্য ১০টি আসনে নির্বাচন। এগুলোতে তারা মহাজোটের মনোনয়ন চান। মাওলানা মুহম্মদ ইসহাকের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকেই অংশ নেবে। এ দলের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের জানিয়েছেন, তারা তালিকা দেবেন বিএনপিকে। অন্তত পাঁচটি আসনে জয়ী হওয়া তাদের লক্ষ্য। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সম্প্রতি ভেঙে গেছে। দুই অংশই বিএনপির শরিক। শায়খ আবদুল মোবিনের নেতৃত্বাধীন অংশ জোটের কাছে অন্তত পাঁচটি আসন চায়।

সর্বশেষ খবর