শুক্রবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

এমন কী ঘটল ইভিএম কেনায় তড়িঘড়ি

------ ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উদ্দেশে বলেছেন, ইভিএম কেনার উদ্যোগ ত্যাগ করুন। নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা আর ঘনীভূত করবেন না। জনগণের কথা ভাবুন, এখনো সময় আছে। তা না হলে যে কোনো পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায় নিতে হবে।

গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে ম্যাট বিশপ নামে একজন ইভিএম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। এই বিশেষজ্ঞ ইভিএমের বিভিন্ন ত্রুটি, আস্থার সংকট ও ঝুঁকির বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, নির্বাচন কমিশন ও সরকার জনমত উপেক্ষা করে ভোট জালিয়াতি করতে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের অপকৌশল হাতে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন জনগণের ওপর আস্থা হারিয়ে যন্ত্রের ওপর ভর করছে। ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের একটি অশুভ পার্টনারশিপ। তিনি বলেন, জনগণ কোনোভাবে নির্বাচনে ইসির এ অপকৌশল বাস্তবায়ন হতে দেবে না। বিএনপি ইসির এ অপকৌশল প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, ইভিএমের মতো বিতর্কিত যন্ত্র কেনার জন্য যে অর্থ ব্যয় হবে, তার প্রতিটি পয়সা কমিশনের কর্তাব্যক্তিদের দায় হিসেবে গণ্য হবে।

এ অপকর্মের সম্পূর্ণ দায় নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছে। ‘ইভিএম ব্যবহার করা হলে বিএনপির অবস্থান কী হবে’— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন যতই ষড়যন্ত্র করুক, নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহার করতে পারবে না। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার দুরভিসন্ধি ও উদ্দেশ্যমূলক। এটি জনগণের সাংবিধানিক অধিকার হরণ ছাড়া আর কিছু নয়। ইভিএম কেনার ক্ষেত্রে অর্থ ‘লোপাটের’ অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১০ সালে একটি ইভিএম কেনা হয়েছে ১০ হাজার টাকায়। এখন তা কেনা হচ্ছে ২০ গুণ বেশি দামে ২ লাখ ৫ হাজার টাকারও বেশি মূল্যে। মূলত এটি জনগণের অর্থ লোপাটের একটি প্রক্রিয়া। কারণ, সরকার ইসিকে সে সুযোগ করে দিয়েছে। ইসি সচিবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন আর নির্বাচন কমিশন বলতে কিছু নেই। আছেন শুধু একজন সচিব, যা বলার কমিশন সচিব হেলালুদ্দীনই বলেন। তিনি ইসি সচিবকে ‘দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ কর্মকর্তা’ হিসেবে অভিহিত করেন। ইভিএম কেনার উদ্যোগ বাদ দিয়ে এ খাতের ৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে আগামী নির্বাচনে ৪৪ হাজার ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। ইসির উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্যালট পেপার জালিয়াতি রোধে সরকারের মুখাপেক্ষী না থেকে নিজেদের জন্য অত্যাধুনিক প্রিন্টিং প্রেস স্থাপন করুন। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করুন। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের সম্মানি ও ঝু?ঁকিভাতার ব্যবস্থা করুন। ভোট গ্রহণকালে ছবি ও ভিডিও ধারণের জন্য প্রতিটি উপজেলা নির্বাচন অফিসে সিসিটিভি সরবরাহ করুন। এ সময় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিজনকান্তি সরকার, শামা ওবায়েদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর