শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে পড়ে শিশু মৃত্যুর ছবি ভাইরাল

বাসের মালিক চালক ও সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক ও কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে পড়ে শিশু মৃত্যুর ছবি ভাইরাল

কুষ্টিয়ায় বাসের ধাক্কায় মায়ের কোলে থাকা এক বছরের শিশু আকিফার নিহতের ঘটনা সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মুহূর্তে ওই ঘটনার ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ফের নিরাপদ সড়কের বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়- একজন মা তার শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হয়ে অন্য পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসের সামনে এসে দাঁড়ান।

এরপর মুহূর্তেই যাত্রা শুরু করা বাসটির ধাক্কায় শিশুটি মায়ের কোল থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায়। ভয়াবহ সেই দৃশ্য দেখে শিহরিত হয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় তিনজনকে আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেছেন নিহত শিশু আকিফার বাবা হারুন উর রশিদ। আসামিরা হলেন- গঞ্জেরাজ বাসের মালিক জয়নাল মিয়া, চালক খোকন ও সুপারভাইজার ইউনুচ মাস্টার। এদের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। এর আগে আকিফার বাবা সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নিতে পুলিশের কাছে আবেদন করেন। তবে আইন পাস না হওয়ায় পুলিশ মামলাটি ৩০৪ ধারায় এজাহারভুক্ত করেন।

মামলার বাদী ও শিশুর বাবা হারুন উর রশিদ বলেন, বাসের ড্রাইভার একজন ঠাণ্ডা মাথার খুনি। ড্রাইভার ইচ্ছা করেই বাস দিয়ে ধাক্কা মেরে তার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। এটা তো কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা নয়। এ কারণে তিনি দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আইনের অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ তা নেয়নি। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, শিশু আকিফার মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। বাদীর দাবির বিষয়ে ওসি জানান, যেহেতু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আমলে নিয়ে ৩০২ ধারায় মামলা রুজুর বিষয়টি এখনো গেজেটভুক্ত হয়নি। সে কারণে দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় মামলা নেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের চৌড়হাস মোড়ে এক বছরের শিশুকন্যা আকিফাকে কোলে নিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় মা রিনা বেগমকে ধাক্কা দেয় দাঁড়িয়ে থাকা গঞ্জেরাজ নামের বাসটি। দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত্যু হয় শিশু আকিফার। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর পথচারীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারে নিশ্চয়তা দিতে জেব্রা ক্রসিং এবং স্পিড ব্রেকারের প্রয়োজনীয়তার জোরালোভাবে কথা তুলে ধরেন অনেকেই। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের শিক্ষক শাইফুন নেওয়াজ জানান, অনেক স্থানে পথচারীদের জন্য জেব্রা ক্রসিং বা চালকদের জন্য সাইন মার্কিংগুলো নেই।

সর্বশেষ খবর