মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনী ট্রেনে আওয়ামী লীগ

তফসিলের আগেই সব প্রস্তুতি, ১২ লাখ পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ ও কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি, জেলায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী, ৮ সেপ্টেম্বর উত্তরাঞ্চল সফরে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা, বিরোধপূর্ণ জেলা নেতাদের তলব

রফিকুল ইসলাম রনি

নির্বাচনী ট্রেনে আওয়ামী লীগ

আগামী সপ্তাহ থেকে নির্বাচন পর্যন্ত টানা সাংগঠনিক সফর শুরু করছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। সরকারের উন্নয়ন প্রচার, নৌকার বিপক্ষে গেলেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা এবং উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার বার্তা থাকবে এ সফরে। আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও থাকবেন এ সফরে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে কেন্দ্র ভিত্তিক কমিটি গঠন, ১২ লাখ পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দলের একটি বড় টিম উত্তরাঞ্চল সফরে যাবেন। এ সফরে পাবনা, জয়পুরহাট, রংপুর, নীলফামারীতে জনসভা করা হবে। মূলত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনী কাজ সেরে ফেলতে চায় আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া জেলা ও বিভাগীয় সমাবেশ করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সূত্রমতে, আগামী ডিসেম্বরের শেষার্ধে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে। অক্টোবর বা নভেম্বরে এ তফসিল ঘোষণা করার সম্ভাবনা আছে। সে প্রস্তুতি ধরেই এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করা হতে পারে। এই মন্ত্রিসভায় যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদের কিছু বাধ্যবাধকতা থাকবে। সে কারণে অনেক হেভিওয়েট নেতারা মাঠপর্যায়ের জনসভায় অংশ নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকবেন। এ জন্য আগামী অক্টোবরের আগেই নির্বাচনী প্রস্তুতি সেরে নিতে তোড়জোড় চলছে। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত-ঐক্যবদ্ধ, সরকারের উন্নয়ন প্রচার এবং দলের প্রার্থী যাকে করা হবে—তারপক্ষেই কাজ করতে হবে। অন্যথায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার বার্তা থাকবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে এক ডজন নেতা থাকছেন এ টিমে। ওইদিন সকালে ক্যান্টনমেন্ট বিমানবন্দর থেকে নেতারা ট্রেনে রওনা হবেন। পথে পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্ট্রেশনে পথসভায় যোগ দেবেন তারা। রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত করতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছি। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর আমরা ট্রেন যাত্রায় বিভিন্ন জায়গায় পথসভা, কর্মিসভা করব। ওইদিন সকালে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্রেনে চড়ে প্রথমে পাবনার ঈশ্বরদীতে, পরে নাটোর, আক্কেলপুর, জয়পুরহাট, বিরামপুর, ফুলবাড়ী, পার্বতীপুর, সৈয়দপুর, নীলফামারীতে পথসভা করব।’ দলীয় সূত্রমতে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে কয়েকটি জেলা ও বিভাগীয় শহরে জনসভা করতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে তৃণমূল মানুষের কাছে তাঁর সরকারের উন্নয়ন ও জনগণের জন্য আগামীতে কী করতে চান সে বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ জেলা নেতাদের গণভবনে ডেকে দিকনির্দেশনা দেবেন তিনি। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেও বিরোধপূর্ণ জেলা নেতাদের ডেকে এনে কথা বলছেন। আগামী ৬ তারিখে রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের ডাকা হয়েছে। দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে ১২ লাখ পোলিং এজেন্টকে প্রশিক্ষণ দেবে আওয়ামী লীগ। এ মাসেই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও নির্বাচনী কেন্দ্র ভিত্তিক কমিটিগুলো এ মাসের মধ্যেই শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেক নির্বাচনী এলাকায় কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়াও জেলা ও বিভাগীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের কাজও এগিয়ে চলছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি নির্বাচন শেষ করে আরেকটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়। কাজেই আমরা সাড়ে চার বছর আগে থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবেই আবারও তৃণমূলে যাচ্ছি। মানুষকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভোটের প্রস্তুতির জন্য সাংগঠনিক প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর