মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গুজব ছড়ানোর মামলায় ১২ শিক্ষার্থী রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিখোঁজ ১২ জনের পরিবারের সংবাদ সম্মেলনের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর তাদের গ্রেফতারের কথা স্বীকার করল পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলেছে, নিরাপদ সড়কের দাবির আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিতে এরা নানা ধরনের গুজব ছড়িয়েছে। গুজব ছড়ানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগে এদের গ্রেফতার করা হয়। পাঁচ দিন আগে তাদের তুলে নেওয়া হয়েছিল—  

পরিবারের এমন দাবি প্রসঙ্গে পুলিশ বলেছে, পরিবার কী দাবি করল তা জানার বিষয় নয়। পুলিশ তাদের রবিবার রাতে গ্রেফতার করেছে। তাদের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই ১২ জনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন উপকমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) মাসুদুর রহমান। এর আগে রবিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ১২ শিক্ষার্থীর নিখোঁজ দাবি করেন তাদের অভিভাবকরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ৫ সেপ্টেম্বর রাতে তাদের সন্তানদের মেস থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা গ্রেফতারের বিষয়টি অস্বীকার করে। অভিভাবকরা অবিলম্বে তাদের সন্তানদের আদালতে হাজির করার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে ডিসি-মিডিয়া মাসুদুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ তাদের রবিবার রাতে গ্রেফতার করেছে। তারা হয়তো আগে থেকে কোথাও পালিয়ে ছিল। তারা তো নিজেদের বাসায় থাকত না, মেসে থাকত। পরিবার অনেক কিছু দাবি করতে পারে। তবে আসল ঘটনা কী, তা তো কেউ খুঁজতে আসে না। ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই আন্দোলনে এসব শিক্ষার্থী অনুপ্রবেশ করে ভিন্ন স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল।’

তিনি বলেন, রাজধানীর তেজকুনিপাড়া এলাকা থেকে এই ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলো তারেক আজিজ, তারেক, জাহাঙ্গীর আলম, মোজাহিদুল ইসলাম, আল আমিন, জহিরুল ইসলাম, বোরহান উদ্দিন, ইফতেখার আলম, মেহেদী হাসান রাজীব, মাহফুজ, সাইফুল্লাহ ও রায়হানুল আবেদীন। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ভুয়া আইডি কার্ড, স্কুল ড্রেস, ছাত্রশিবিরের বই, হাতুড়ি, প্লাস, কাটার, ছুরি, তিনটি ল্যাপটপসহ বেশ কিছু কাগজপত্র জব্দ করা হয়। মাসুদুর রহমান বলেন, “বিভিন্ন মেস থেকে এদের আটক করা হয়। এদের অর্ধেকই অছাত্র। আটক তারেক আজিজের নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে আন্দোলনের সময় গুজব ছড়ানো হয়। সে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ওপর চোর লিখে দিয়েছিল। ‘ধানমন্ডিতে চারজনকে ধর্ষণ করা হয়েছে, চারজনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে, পুলিশ ঘুষ খায়, মন্ত্রী-এমপি সবাই চোর’ ইত্যাদি লিখেছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সবাই শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে স্বীকার করেছে। তাদের কেউ সদস্য আবার কেউ ওয়ার্ড সভাপতির পদে রয়েছে। আটক জাহাঙ্গীর শিবিরের একজন সদস্য এবং সে সাংগঠনিক সম্পাদক পদধারী বলে জানিয়েছে। আটকদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে ১২ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে।”

সর্বশেষ খবর