দেশে দ্রুত হারে ধনীর সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষণ ভালো নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ। তার মতে, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ব্যাংক ঋণের সুবিধা নিচ্ছে। এতে বৈষম্য বাড়ছে। ধনী- গরিবের এই বৈষম্য অর্থনীতির জন্য ভালো নয়। এই বৈষম্য কমানো দরকার। দ্রুত হারে ধনীর সংখ্যা বাড়া অর্থনৈতিক বৈষম্যেরই প্রতিফলন। এটা রোধ করার জন্য এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য সুষম অর্থনৈতিক বণ্টন ব্যবস্থাপনা দরকার। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা চালু করা। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সামগ্রিকভাবে সব পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে সঠিকভাবে ব্যাংক ঋণ বিতরণ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতে অব্যবস্থাপনার একটা প্রতিফলনও দেখা যাচ্ছে। যেমন গ্রাম থেকে যে পরিমাণ আমানত ব্যাংকগুলো সংগ্রহ করছে, সেই পরিমাণে ঋণ গ্রামের মানুষ পাচ্ছে না। এটা সমভাবে করতে পারলে শহর ও গ্রামের সম-উন্নয়ন হতো। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বাংলাদেশে গ্রাম ও শহরের ব্যবধান বিস্তরভাবে বাড়ছে। এ কারণে সারা দেশের মানুষ শহরে থাকতে চায়। ঋণ বিতরণে বৈষম্য না থাকলে আয়বৈষম্য কমবে। ধনীরা আমানত কম করে। ঋণ বেশি নেয়। সেই ঋণ থেকে টাকা বাইরে পাচার করে। এসব কারণে বৈষম্য বেড়ে অতি ধনীর সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে দিন দিন। ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে একসময় সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ছিল। সেই অর্থনীতি থেকে বাংলাদেশ এখন চলছে বাজার অর্থনীতিতে। এ কারণে ধনী-গরিব বৈষম্য বাড়তে পারে। তবে এটা বন্ধের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করা দরকার। এতে বৈষম্য কমতে পারে। এজন্য প্রগতিশীল কর কাঠামো ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিকল্প নেই। অর্থাৎ সঠিকভাবে রাজস্ব আদায় না হওয়াটাও ধনী ও গরিবের বৈষম্য বৃদ্ধির একটা বড় কারণ।