শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
রাজনীতির নালিশ জাতিসংঘে

কী বললেন কী করলেন ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

কী বললেন কী করলেন ফখরুল

জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেখানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশ সময় আজ বিকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) সঙ্গে বৈঠক  করবেন। এরপর রওনা দেবেন লন্ডনের উদ্দেশে। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তার সঙ্গে রয়েছেন বিএনপির দুজন তরুণ নেতা হুমায়ুন কবীর ও তাবিথ আউয়াল। সেখানে দুই দিন অবস্থান করে সোমবার দেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন বিএনপি মহাসচিব।  জানা যায়, লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন এবং একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলবেন। দলের সাংগঠনিক অবস্থাও তারেক রহমানের কাছে তুলে ধরা হবে। এদিকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি, একাদশ জাতীয় নির্বাচন ও দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার কারাগার ইস্যুগুলো লিখিতভাবে তুলে ধরা হবে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণেরও অনুরোধ জানাবে বিএনপির প্রতিনিধি দল। এর আগে বুধবার জাতিসংঘ সদর দফতরের সহকারী মহাসচিব মিরোস্ল্যাভ জেনকারসহ সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই নির্বাচন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাগারে বন্দী থাকার ইস্যুটিও তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা স্থায়ী এই বৈঠকে বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি লিখিতভাবে তুলে ধরে বিএনপি। বৈঠকের উদ্দেশে তারা জাতিসংঘ ভবনে প্রবেশ করেন সকাল ১০টার কিছু আগে। এর আগে মির্জা ফখরুল বৈঠকের উদ্দেশে মঙ্গলবার বিকালে নিউইয়র্কে এসে  পৌঁছান। জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আজ বৈঠক করবেন।  

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি  জেনারেল ও তার সহকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অপেক্ষমাণ কয়েকজন বাংলাদেশি সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংক্ষেপে বলেন, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি।

জানা যায়, জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের বৈঠকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ লোকজনের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের জন্য সংস্থাটির সহায়তা চায় বিএনপি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-অপশাসনের ফিরিস্তি উপস্থাপনের পাশাপাশি দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তিতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপও চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আগামী নির্বাচন করতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির প্রসঙ্গও আসে। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়ে জাতিসংঘের যথাযথ ভূমিকা প্রত্যাশা করা হয়। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানেও নির্বাচন চায় বিএনপি। এদিকে গত মাসে বিএনপির পক্ষ থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি লবিং ফার্ম ভাড়া করা হয়েছে। সেই ফার্মের তৎপরতার প্রকাশ ঘটল জাতিসংঘে মির্জা ফখরুলের বৈঠকের মধ্য দিয়ে। আর এভাবেই সামনের নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ের পথ সুগম হবে বলে আশা নেতা-কর্মীদের। বিএনপির যুক্তরাষ্ট্র শাখার কোনো কমিটি ৫ বছর থেকে নেই। নানাভাবে বিভক্ত হয়ে কাজকর্ম চালালেও মির্জা ফখরুল নিউইয়র্কে এসে কাউকে সাক্ষাৎ দেননি। আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকেও বসেননি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর