মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সুপার ফোরে বাংলাদেশ আফগানিস্তান

তামিমের গল্পগাথা ডালপালা ছড়িয়ে ছেয়ে গেছে গোটা দুবাই। গলফ নিউজে তামিমকে নিয়ে ছাপা হয়েছে বিশাল ছবিসহ আর্টিকেল। ভাঙা হাতে তামিমের ব্যাটিং-বীরত্বে আড়ালে পড়ে গেছে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ মিথুনের অকুতোভয় ব্যাটিং। বৃহস্পতিবার আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। প্রচণ্ড গরমে মুশফিক, মিথুনরা যেন পরিশ্রান্ত হয়ে না পড়েন, সেজন্য সন্ধ্যার মায়াবী আলোয় অনুশীলন করবেন ক্রিকেটাররা। তাই বিকাল পর্যন্ত কোনো কাজ ছিল না ক্রিকেটারদের। বিশ্রামে কাটিয়েছেন হোটেলে। এর ফাঁকে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা মিথুন মিডিয়ার মুখোমুখিতে সতীর্থদের নির্ভার থাকার কথা বলেন। শুধু তাই নয়, সামনের ম্যাচে আফগান স্পিনার রশিদ খান ও মুজিব-উর-রহমানকে নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ দেখছেন না প্রথম ম্যাচে ৬৩ রানের ইনিংস খেলা মিথুন। অবশ্য গতকাল শ্রীলঙ্কার পরাজয়ে      বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান দুই দলেরই সুপার ফোর নিশ্চিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, ভারতের বিপক্ষে যতটা সাবলীল টাইগাররা, ঠিক উল্টো আফগানিস্তানের বেলায়। আফগান জুজুতে কম্পমান না থাকলেও সতর্ক থাকেন সব সময়। জুনে ভারতের দেরাদুনে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়ে কিছুটা নার্ভাস বাংলাদেশ। ওই সিরিজে টাইগারদের একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন বর্তমান সময়ের সেরা লেগ স্পিনার রশিদ খান। রশিদের গুগলি, ফ্লিপার ও লেগ স্পিনে কম্পমান থাকেন যে কোনো ব্যাটসম্যান। মুজিব একটু বেশিই বৈচিত্র্যময় স্পিনার। ওভারের ৬ বল করেন ছয় রকম। দুই স্পিনারই আফগানিস্তানের মূল শক্তি। তার ওপর বর্ষীয়ান মোহাম্মদ নবীও কম যান না। এদের ওপর ভর করেই হার্ডল ডিঙাতে মরিয়া নবাগত টেস্ট খেলুড়ে দেশটি। টি-২০ সিরিজ হারলেও ওয়ানডেতে বাংলাদেশ বেশ শক্তিশালী। র্যাংকিংয়ে এগিয়ে অনেক। দুই দলের পাঁচ মুখোমুখিতে তিনবার হেসেছেন টাইগাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিথুনরা খেলবেন শ্রীলঙ্কাকে হারানোর আত্মবিশ্বাস নিয়ে। আত্মবিশ্বাসী মিথুন তাই ভীত নন আফগান স্পিনারদের নিয়ে, ‘আমি মনে করি ভয় জিনিসটা সবচেয়ে বড় শত্রু। কাজেই ভয় কাটাতে হবে। ওদের দু-তিন জন বিশ্বমানের স্পিনার রয়েছেন। কিন্তু তারা না খেলার মতো নন। আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে কীভাবে তাদের মোকাবিলা করা যায়। ওদের বিপক্ষে ভালো খেলার জন্য গেম প্ল্যানটা খুব জরুরি। আমি মনে করি নরমাল খেলা খেলতে পারলেই জিততে পারব।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩৭ রানের পর্বতসমান জয়ে এখন গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই চ্যাম্পিয়ন। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেরা চারে খেলার আত্মবিশ্বাসী মিথুন, ‘আত্মবিশ্বাসী না থাকার কোনো কারণ নেই। এখন আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো খেলার পর আমাদের সবকিছুই পজিটিভ।

.কাজেই চিন্তা করার কিছু নেই। সত্যি বলতে, ভালো খেলার বিকল্প নেই। জিততে হলে ভালো খেলতেই হবে।’

দ্বীপরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলার আগে আরও তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন মিথুন। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস ছিল না একটিও। ৩ রানে ২ উইকেটের পতনের পর খেলতে নামেন ক্যারিয়ারের চার নম্বর ম্যাচ খেলতে নামা মিথুন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৩১ রান যোগ করেন সেঞ্চুরিম্যান মুশফিকের সঙ্গে। ৬৩ রানের ইনিংসটিকে তাই এগিয়ে রাখলেন তিনি, ‘মাত্র তো খেলা শুরু করলাম। তবে এ ইনিংসটাকেই আমি এগিয়ে রাখব। ক্যারিয়ার লম্বা করতে আমাকে আরও অনেক ম্যাচ খেলতে হবে। সবসময়ই আমার চেষ্টা থাকবে দলের সাফল্যে অবদান রাখা।’ তামিম নেই। দলের শক্তি কমেছে বহুলাংশে। তামিমের অনুপস্থিতিকে সেভাবে না দেখে মিথুন বলেন, ‘তামিম ভাই না থাকাটা অবশ্যই বড় ধাক্কা। অ্যাক্সিডেন্ট বলেকয়ে আসে না। ওটা নিয়ে না ভেবে আমাদের সামনের দিকে তাকিয়ে খেলতে হবে।’ ১৯৮৬ থেকে নিয়মিত এশিয়া কাপ খেলছে বাংলাদেশ। ২০১২ ও ২০১৬ সালে রানার্স-আপ। কিন্তু এবারই প্রথম ফেবারিটের তকমা পরে খেলছে। তা আবার ৩ হাজার ৬৪১ কিলোমিটার দূরে মরুরাজ্যের প্রচণ্ড গরমে। এখন সময়ই বলবে কতটা ফেবারিট মিথুনরা।

সর্বশেষ খবর