বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

যুক্তফ্রন্টের দাবি ফটোকপি

যুক্তফ্রন্টের দাবি ফটোকপি

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন নতুন রাজনৈতিক জোট যুক্তফ্রন্ট যেসব দাবি তুলেছে, সেগুলো জামায়াতের দাবিরই ফটোকপি। তিনি বলেন, তাদের ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি সাংবিধানিক সংকট ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করে দেশে অস্বাভাবিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র। আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন, বাক-স্বাধীনতাবিরোধী কোনো আইন সংসদে পাস করবে না সরকার। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের দিন সেনাবাহিনী মোতায়েনে যুক্তফ্রন্টের দাবি সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার প্রক্রিয়া মাত্র। বিএনপি জোটের নেতা-কর্মীদের নামে থাকা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। এ ছাড়া তাদের কর্মীদের গ্রেফতার না করারও দাবি তুলেছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, জঙ্গি-রাজাকার রক্ষা, অপরাধীদের হালাল করা ও অস্বাভাবিক সরকার আনার চক্রান্ত এবং বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিন, দেশকে শান্তি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখুন। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্ট দেশের এই রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবেই মুখ বন্ধ রেখেছে। গত ১০ বছরে যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচাল করা-নির্বাচন বানচাল করা-দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দিতে যে সহিংসতা-নাশকতা-জঙ্গিসন্ত্রাস-আগুনসন্ত্রাস হয়েছে সে বিষয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া রহস্যজনকভাবে নীরবতা পালন করে এসেছে। তাদের এই নীরবতা সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাত-জঙ্গিসন্ত্রাস-আগুনসন্ত্রাসকেই সমর্থন দিয়ে গেছে।

ইনু বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্ট যে পাঁচ দফা দিয়েছে তা নতুন কিছু নয়, বিএনপি-জামায়াত-২০ দলীয় জোটের দাবিরই পুনরুল্লেখ ও প্রতিধ্বনিই মাত্র। তাদের পাঁচ দফা দাবি সাংবিধানিকভাবে ও আদালতের রায়ে মীমাংসিত বিষয়ের সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা সাংবিধানিক সংকট ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করে অস্বাভাবিক সরকার আনতে চাইছেন। তিনি বলেন, তারা ‘সব রাজনৈতিক দল’ শব্দের আড়ালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মামলা, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দণ্ডিত, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা-জঙ্গি সন্ত্রাস-আগুন সন্ত্রাসের মামলার অভিযোগে আটক বা দণ্ডিতদেরও মুক্তি চাওয়ার নামান্তর।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের পাঁচ দফা দাবি শুধু আগামী একটি নির্বাচন-কেন্দ্রিক। সামগ্রিক নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট দাবি নেই। তারা দেশের সবচেয়ে গুরুতর রাজনৈতিক সমস্যা জঙ্গি সন্ত্রাস বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে আড়াল করতে চেয়েছেন।

তিনি বলেন, সব কিছু দেখে এটা জলের মতো পরিষ্কার যে, বিএনপি-জামায়াত-২০ দলের মতোই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্ট মাঠে নেমেছে যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করা, আগুনসন্ত্রাসের বিচার বন্ধ করা, দুর্নীতির বিচার বন্ধ করা, সাংবিধানিক সংকট তৈরি করে অস্বাভাবিক সরকার আনা, জঙ্গি সন্ত্রাস ও তাদের মূল পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে হালাল ও রক্ষা করার জন্যই। তাদের আসল উদ্দেশ্য নির্বাচন নয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের নামে রাজনীতির মাঠে বর্তমানে সক্রিয় প্রবীণ রাজনীতিকদের প্রতি খালেদা-তারেক-বিএনপি-জামায়াত বাঁচাও এবং সাংবিধানিক সরকার আনো এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ত্যাগ করবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অভিযোগ শুনে আমি ব্যথিত হয়েছি, কারণ অভিযোগটি অসত্য। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু উন্মুক্ত আদালতে দীর্ঘ ১০ বছর বিচার চলেছে। খালেদা জিয়া সেখানে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন। রায়ে তার সাজা হয়েছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিকদের উদ্বেগের কিছু নেই। এ আইনের মাধ্যমে বাক-স্বাধীনতা হরণ করা হবে না। বাংলাদেশের সংবিধান প্রদত্ত বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা সাংবাদিকদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রেখেই সব আইন হবে। কোনো সাংঘর্ষিক আইন পার্লামেন্ট পাস করবে না, পাস করলেও তা আদালতে নাকচ হয়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর