শিরোনাম
রবিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাঁচ কাজে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ

বিরোধ মেটানো, নির্বাচন ও সরকারের উন্নয়ন প্রচার, আসনভিত্তিক কমিটি গঠন, ইশতেহার তৈরি, দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত

রফিকুল ইসলাম রনি

পাঁচ কাজে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ

তৃণমূলের বিরোধ মেটানো, নির্বাচনী ও সরকারের উন্নয়ন প্রচার, আসনভিত্তিক কমিটি গঠন, ইশতেহার তৈরি এবং প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে আওয়ামী লীগ। এ পাঁচ কাজে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার চেষ্টা করছে দলের শীর্ষ পর্যায়।

তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে জেলায় জেলায় সাংগঠনিক সফর অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ। ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর দেশের উত্তরাঞ্চলে ট্রেন সফর করেন দলের শীর্ষ নেতারা। গতকাল চট্টগ্রামের উদ্দেশে দলের তিন দিনব্যাপী রোড মার্চ শুরু হয়েছে। এ সময় পথসভাগুলোয় সরকারের উন্নয়ন প্রচার ও আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে কী করবে সেই ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে দলের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকারও নির্দেশ দেওয়া হয়। দলীয় সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দলীয় ঐক্যের ওপর। এজন্য যেসব জেলা-উপজেলায় বা সংসদীয় আসনে দলীয় কোন্দল রয়েছে, সেসব জেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে কথা বলছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত বৃহস্পতিবার পিরোজপুর জেলা নেতাদের ডেকে কথা বলেন তিনি। কিছু জেলা ও এমপিকে গণভবনে ডেকে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। শুক্রবার সকালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ার আগে নেতাদের সরকারের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে নির্বাচনী প্রচারণা জোরদার করতে নির্দেশ দেন তিনি। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাঠ পর্যায়ে বেশি সময় ব্যয় করার নির্দেশ দেওয়ায় এমপি-মন্ত্রীরা এলাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন।

গত শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা নেতা ও স্থানীয় এমপিরা এসব কমিটি গঠনে কাজ শুরু করেছেন। বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা এতে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন। তরুণ ও নারী ভোটারদের কাছে টানতে এবারে ইশতেহারে চমক থাকবে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ইশতেহার তৈরির কাজ করছেন। পাশাপাশি দলের মনোনয়ন চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে শতাধিক প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে চূড়ান্ত হবে কাদের ভাগ্যে জুটবে দলীয় মনোনয়ন। দলটির নেতারা বলছেন, প্রথম সারির নেতাদের নাম এমনিতেই চূড়ান্ত থাকে। কিন্তু এবার কিছুটা ব্যতিক্রম হতে পারে। আর সেই ব্যতিক্রম কী হবে তা বলার সময় এখনো হয়নি। দলীয় নেতারা জানান, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বা না করার ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়নে সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। তবে নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা আছে ধরে নিয়েই এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলকে ঐক্যবদ্ধ করা, সরকারের উন্নয়নের বার্তাগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য সামনে রেখেই আমরা সাংগঠনিক সফর করছি। গত সাড়ে নয় বছরে কী করেছি, আগামীতে আবারও ক্ষমতায় এলে কী করা হবে সেগুলো জনগণকে জানাচ্ছি।’ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠকে জেলা ও আসনভিত্তিক নির্বাচন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ছোটখাটো বিরোধ মীমাংসা, সরকারের উন্নয়ন প্রচার ও নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজে এখন আমরা মনোযোগী।’

সর্বশেষ খবর