বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা

যুক্তিতর্ক ছাড়াই রায় চায় রাষ্ট্রপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিনটি ধার্য তারিখে আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন না করায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায়ের দিন নির্ধারণের আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে যুক্তিতর্ক বাদ দিয়েই রায় ঘোষণার এ আবেদন জানান। পরে বিচারক ড. মো. আক্তারুজ্জামান এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রবিবার দিন ঠিক করেন। একই সঙ্গে বিচারকের প্রতি দুই আসামির অনাস্থার কথা জানিয়ে  সময়ের আবেদনের বিষয়ে আদেশের জন্যও একই দিন ধার্য করেন বিচারক। রাজধানীর পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে মামলাটির বিচার চলছে। অন্য একটি মামলায় দণ্ড নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এই কারাগারেই বন্দী রয়েছেন এ মামলার প্রধান আসামি ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দেওয়া সময়ের তৃতীয় দিন গতকাল বেলা ১১টা থেকে ৪০ মিনিটের মতো আদালতের কার্যক্রম চলে। যুক্তিতর্ক ছাড়াই রায়ের তারিখ নির্ধারণের পক্ষে যুক্তি দিয়ে দুদকের আইনজীবী কাজল আদালতে বলেন, ‘আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে আসছেন, সব ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, কিন্তু যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন না। ফৌজদারি কার্যবিধির চ্যাপ্টার ২০ অনুযায়ী এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ না থাকলেও তাদের সে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’ বিচার বিলম্বিত করার জন্য আসামিপক্ষ আদালতে বার বার সময় বাড়ানোর আবেদন করে যাচ্ছে মন্তব্য করে কাজল বলেন, ‘সুবিচার ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে রায়ের তারিখ নির্ধারণের আবেদন আমরা করছি।’ আদালতের বাইরের চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও পরামর্শে আসামিপক্ষ একগুঁয়ে আচরণ করছে বলেও মন্তব্য করেন দুদকের আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষের এই বক্তব্যের বিরোধিতায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘প্রসিকিউশন বলছে, আমরা ন্যায়বিচার ব্যাহত করছি।

অথচ আমরা প্রতি তারিখেই আদালতে আসছি, আদালতে আমাদের আর্জি জানাচ্ছি। আমাদের সময়ের আবেদন না মঞ্জুর হওয়ার পরও বার বার আসছি, আমরা আদালতের কাছেই তো আসব।’ এই বিচারকের রুলিংয়েই মামলায় যুক্তিতর্ক চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বলা হচ্ছে এই মামলার আইনে যুক্তিতর্ক ?উপস্থাপনের সুযোগ নেই। কিন্তু আপনিই তো রুলিং দিয়ে বলেছেন, আপনি যুক্তিতর্ক শুনবেন। যুক্তিতর্ক চলছেও। আর যুক্তিতর্ক ছাড়াই রায় ঘোষণার আবেদন গ্রহণ করা হলে বিচার সম্পর্কে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে।’ এদিকে খালেদার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তির আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। পাশাপাশি তার সিনিয়র আইনজীবী আবদুর রেজাক খানের অসুস্থতার কথা জানিয়ে শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আসামি মনিরুল ইসলাম খানের স্থায়ী জামিন বহাল রাখার আবেদন করেন তার আইনজীবী আক্তারুজ্জামান। অন্যদিকে খালেদার জামিন বাড়ানো ও মনিরুলের জামিন বহালের আবেদন নাকচ করার আবেদন করেন দুদকের আইনজীবী কাজল। পরে বিচারক খালেদার জামিন বাড়ানোর আবেদন মঞ্জুর করেন এবং মনিরুলের জামিন ৩০ তারিখ পর্যন্ত বহাল রাখেন। এর আগে সোমবার আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুলের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম ও আক্তারুজ্জামান বিচারকের প্রতি অনাস্থার আবেদন নিয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্য ২০ দিনের সময় দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। গতকাল এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকলেও তা দ্বিতীয়বারের মতো পিছিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করে দেন বিচারক।

সর্বশেষ খবর