রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প ও সুনামি নিহত ৪০০

প্রতিদিন ডেস্ক

ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প ও সুনামি নিহত ৪০০

ইন্দোনেশিয়ায় গত শুক্রবার ভূমিকম্প ও সুনামিতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৮০ ছাড়িয়ে গেছে। দেশটির পালু শহরের সুলাওয়াসি দ্বীপে গতকাল আহতদের খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা দেওয়া হয়। —এএফপি

ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে চার শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছে প্রায় সহস্র মানুষ। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যার এ ঘটনায় উপকূলীয় পর্যটন শহর পালু পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে গতকাল ভোর পর্যন্ত কয়েক দফার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পালুসহ আশপাশ অঞ্চল। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। তবে কয়েক দফায় এ মাত্রা ৭ দশমিক ৭-এ উন্নীত হয়। এর উৎপত্তি ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ভূমিকম্পের পর ১০ ফুট উঁচু ঢেউ সুলাওয়াসি দ্বীপের পালু শহরকে তলিয়ে দেয়। পাহাড়সম উঁচু ঢেউ যখন উপকূলে আঘাত হানে তখন ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’ উপলক্ষে অনেকেই সৈকতে জড়ো হয়েছিল, যার বেশির ভাগই নিজেদের প্রাণ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। কেউ কেউ উঁচু গাছে চড়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন। গতকাল সমুদ্রতট থেকে অনেক মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এদিন সকালেও পরাঘাতে সুলাওয়াসি দ্বীপ একাধিকবার কেঁপে উঠেছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বিএনপিবির মুখপাত্র সুতোপো পুরও নুগরোহো বলেন, ‘ভূমিকম্পের পর যখন সুনামি সতর্কতা জারি করা হয় তখনো লোকজন সৈকতে তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল। তাই প্রকাণ্ড ঢেউ যখন উপকূলে আছড়ে পড়ে তখন তারা আর দৌড়ে নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি।’ উল্লেখ্য, পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় সুলাওয়াসি দ্বীপের পালু শহরের সৈকতে শত শত মানুষ শহরের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিচ ফেস্টিভ্যালের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। শুক্রবার রাতে ওই ফেস্টিভ্যাল শুরু হওয়ার কথা ছিল। গতকাল বিকালে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই সময় পর্যন্ত ৩৮৪ জনের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। আরও অনেকের লাশ বিধ্বস্ত ভবনগুলোর নিচে চাপা পড়ে অথবা নিখোঁজ ছিল। অনেক আহতেরও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তারা সুনামিতে ভেসে গিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এ সময় পর্যন্ত ৫৪০ জন আহতকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ভূমিকম্প ও সুনামিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ‘অত্যন্ত মারাত্মক’ বর্ণনা করে নুগরোহো বলেন, পালুর বেশির ভাগ বাড়িঘর, হাসপাতাল, শপিং মল ও হোটেল ধসে গেছে। সুনামিতে একটি সেতু ভেঙে ভেসে গেছে এবং ভূমিধসে পালুর প্রধান মহাসড়ক দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে পালু শহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার অভিযান। দেশটির প্রধান নিরাপত্তামন্ত্রী জানান, রাজধানী জাকার্তা থেকে ত্রাণবোঝাই কয়েকটি কার্গো উড়োজাহাজ পালু শহরে গিয়ে কাজ করছে। রানওয়ে ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পালু শহরের বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ত্রাণবাহী উড়োজাহাজগুলো যেন অবতরণ করতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, পালু ও দঙ্গল এলাকায় ৬ লাখ মানুষ বাস করে। তবে ভূমিকম্প ও সুনামির এলাকায় বাস করে প্রায় ২ লাখ মানুষ। এর আগেও কয়েকবার এ এলাকায় ভূমিকম্প আঘাত হানে। গত আগস্টের ভূমিকম্পে লমবুক পর্যটন কেন্দ্র এলাকায় অন্তত ৫০০ মানুষ নিহত হয়। তখন ধ্বংস হয়েছিল কয়েক ডজন গ্রাম।

সর্বশেষ খবর