সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা

খালেদার জামিন কেন বাতিল নয় : আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল হবে না, তা তার আইনজীবীদের কাছে জানতে চেয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ মামলার শুনানিতে খালেদার আইনজীবীদের কারণ দর্শানোর এই নির্দেশনা দিয়ে জবাব দেওয়ার জন্য ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। জামিন বৃদ্ধি করতে খালেদার আইনজীবীদের আবেদনের পর রাষ্ট্রপক্ষের বিরোধিতার প্রেক্ষাপটে আদালতের এই নির্দেশ আসে। রাজধানীর পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার চলছে। অন্য একটি দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এই কারাগারের একটি কক্ষেই বন্দী রয়েছেন খালেদা জিয়া। গতকাল শুনানিতে অন্যান্য দিনের মতো খালেদার জামিন বাড়ানোর আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। তার অসুস্থতা এবং হাই কোর্টে বিচার স্থগিতের আবেদনের কথা জানিয়ে আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার এ আবেদন করেন। কিন্তু ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪০(এ) ধারা অনুযায়ী খালেদাকে প্রতিনিধিত্ব করার মাধ্যমে এই আবেদন না করায় জামিন বৃদ্ধির সুযোগ নেই বলে এর বিরোধিতা করেন মামলার বাদীপক্ষ দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। কাজল বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) আদালতে অনুপস্থিত। ৫৪০(এ) ধারা মোতাবেক প্রতিনিধিত্ব করে আবেদন করেননি। যেহেতু করেননি, সেহেতু জামিন বৃদ্ধির সুযোগ নেই। এর জন্য তাকে প্রতিনিধিত্ব করে তারপর আবেদন করতে হবে। তারা আসছেন, খালেদা জিয়া আসেননি। তার জামিন চাইছেন, কিন্তু মামলার কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না।’ এ সময় খালেদার আইনজীবী মাসুদ তালুকদার আদালতে বলেন, ‘রিপ্রেজেনটেশন ও ডিফেন্ড ভিন্ন জিনিস। আমরা খালেদা জিয়াকে এখন এই মামলায় ডিফেন্ড করছি। তাকে রিপ্রেজেন্ট করছি না। কোনো আসামি জামিনে থাকলে বা আসতে অপারগ হলে তখন আদালতের আদেশে তাকে ডিসপেন্স করা হয়। তখন আদালতের আদেশেই তাকে রিপ্রেজেন্ট করা হয়।’ এ ক্ষেত্রে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা চলাকালে খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকা অবস্থায় তার হয়ে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার রিপ্রেজেন্ট (প্রতিনিধিত্ব) করার কথা উল্লেখ করেন এ আইনজীবী। মাসুদ তালুকদার বলেন, কেউ কারাগারে থাকলে তাকে অনুপস্থিত রেখে বিচারকাজ চালানোর সুযোগ থাকে না। আর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কোনো আদেশও আদালত থেকে দেওয়া হয়নি। এ সময় বিচারক খালেদার আইনজীবীদের কাছে জানতে চান, প্রতিনিধিত্ব না করলে তারা জামিন চাইছেন কেন? রিপ্রেজেন্টেশন ও ডিফেন্সের মধ্যে পার্থক্য কী? জবাবে মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘ডিফেন্ড মানে হচ্ছে তার হয়ে আমরা মামলা লড়ছি। তার অনুপস্থিতিতে তাকে রিপ্রেজেন্ট করছি না। তিনি তো কাস্টডিতেই আছেন।’ এ বিষয়ে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘আইনজীবীরা ওকালতনামার মাধ্যমে মামলার যাবতীয় কার্যক্রমে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবেন, এমন অনুমোদন দেওয়া হয়। সে কারণে তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে বাধা নেই। আর প্রতিনিধিত্ব না করলে জামিন বাড়ানোর সুযোগ নেই।’

কুমিল্লায় আট হত্যা মামলায় জামিন শুনানি ৩ অক্টোবর : কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, চৌদ্দগ্রামে বাসে আগুন দিয়ে আটজন হত্যা মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি পিছিয়েছে। রবিবার হত্যা মামলাটির শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ নম্বর আমলি আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন খালেদার আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু। জেলা পি পি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলাটির শুনানির তারিখ ছিল।

সর্বশেষ খবর