শুক্রবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সৈয়দ আবুল হোসেনের খোলা চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সৈয়দ আবুল হোসেনের খোলা চিঠি

সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার সুনাম ও সুখ্যাতি ক্ষতিগ্রস্ত করতে নতুনভাবে প্রপাগান্ডা শুরু করেছে। আমার স্বাক্ষর সুপার ইম্পোজ করে গায়েবি চিঠি পুনরায় প্রচার করে আওয়ামী লীগ ও জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির  চেষ্টা করছে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক খোলা চিঠিতে তিনি এ কথা বলেন। সৈয়দ আবুল হোসেন বলেন, ১/১১-এর সময় প্রচারিত সেই গায়েবি চিঠির ভাষা, আঙ্গিক এবং শব্দাবলি দেখলেই বুঝা যায়, চিঠিটি কত অসাড়, মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। গায়েবি পদত্যাগপত্রের সেই ভাষাও আমার ব্যক্তি চরিত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত। ১/১১-এর সময় আমি পদত্যাগ করলাম অথচ শেখ হাসিনা তা জানেন না, আমি জানি না, আওয়ামী লীগের তখনকার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ ভাই জানেন না। আওয়ামী লীগ অফিসেও এ ধরনের চিঠি জমা হয়নি। তাহলে এটাকে গায়েবি চিঠি ছাড়া কী বলা চলে। এটা যে তখনকার স্বার্থান্বেষী মহলের বানানো তা মিথ্যা পদত্যাগপত্রের ভাষাই প্রমাণ করে। সৈয়দ আবুল হোসেন চিঠিতে বলেন, আমি শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৯৯০ সালে রাজনীতিতে এসেছি। আমি শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও আদর্শের রাজনীতি করি। রাজনীতিতে দল ও আদর্শের সঙ্গে কখনো বেঈমানি করিনি। দলের প্রতি, নেত্রীর প্রতি সর্বদা বিশ্বস্ত থেকেছি। মন্ত্রী থাকাকালীন সরকারি কাজে সততা ও স্বচ্ছতা প্রতিপালন করেছি। রাজনীতির বাইরে আমি সত্ভাবে ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন করেছি। এলাকার শিক্ষার প্রসারে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। এলাকায় নানামুখী উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন করেছি। সর্বোপরি, মানুষের সেবা করেছি। সেবা করে চলেছি। আমি আমার কাজে শতকরা একশ ভাগ স্বচ্ছ। কখনো কোনো অনিয়ম করিনি, কোনো অবৈধ কাজ করিনি। আদর্শের সঙ্গে আপস করিনি। যত দিন বেঁচে থাকব, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও কল্যাণের রাজনীতি করে যাব। সৈয়দ আবুল হোসেন বলেন, এ কথা সত্যি যে এলাকার উন্নয়ন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও সরকারে মন্ত্রী হিসেবে যোগ দেওয়ার পর আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার হয়েছে। ১৯৯০-২০১৪ আমি পর পর চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। এ সময় রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নানা অপপ্রচার চালিয়েছে, হয়তো এখনো চালাচ্ছে। হয়তো এ অপপ্রচার তাদের। মূলত আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ছিল বায়বীয় ও ভুল ধারণা প্রসূত। পদ্মা সেতু প্রস্তুতিপর্বে নানা মিথ্যা অভিযোগ, যোগাযোগমন্ত্রীর অফিস মেরামত, যোগাযোগমন্ত্রীর জন্য গাড়ি ক্রয়, কালকিনিতে বাড়ি নির্মাণ, সড়ক দুর্ঘটনায় যোগাযোগমন্ত্রী দায়ী, দুটি পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়, সব ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার গড়া প্রতিষ্ঠান সাকো প্রভাব বিস্তার করে ব্যবসা পাওয়া সংক্রান্ত আমার কোম্পানির এক কর্মকর্তা জাল স্বাক্ষর সংবলিত চিঠি, আমার স্বাক্ষর জাল করে ব্যবসা সংক্রান্ত জাল চিঠি প্রচার করে আমার ইমেজ নষ্টের নানা অপচেষ্টা বিভিন্ন সময়ে হয়েছে। এসব অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি শ্বেতপত্রে উল্লেখ করে এসব বিষয় সম্পর্কে তদন্ত করে। বিএনপির তদন্তেই সব মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে ১/১১-এর সময় আমাকে আটক করতে না পেরে নানা ছলচাতুরির আশ্রয়  নেওয়া হয়। আমার সাকো অফিস ও বাড়ি তল্লাশি করা হয়। সাকো কর্মকর্তাদের নির্যাতন করা হয়। আওয়ামী লীগ থেকে আমার গায়েবি পদত্যাগপত্র, আমার স্বাক্ষর সুপার ইম্পোজ করে প্রচার করে। ১/১১-এর সময় আমার জন্ম থেকে উত্থাপিত এসব মিথ্যা অভিযোগ এবং পদ্মা সেতুর মিথ্যা অভিযোগ দেশি-বিদেশি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির আমলে, ১/১১-এর সময় এবং পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও স্বার্থান্বেষী গ্রুপের ষড়যন্ত্রের বিষয় নিয়ে দেশি ও আন্তর্জাতিক তদন্ত হয়েছে। আমার আয়-ব্যয়, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগের গ্লোবালি তদন্ত হয়েছে। দুদক ও বিদেশি তদন্ত ও কানাডার আদালতসহ সব তদন্তে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি। মনে রাখতে হবে, মিথ্যা কোনো দিন স্থায়ী হয় না। সত্য প্রকাশ হয়ই, সত্যের জয় হয়ই। চিঠিতে সৈয়দ আবুল হোসেন অনুরোধ করেন, এ ধরনের ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকুন। মিথ্যা প্রমাণিত বিষয় পুনঃপ্রচার বন্ধ করুন। কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ যা বার বার করা তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত তা আবার টেনে এনে আমাকে বিব্রত, আমার মর্যাদা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবেন না।

সর্বশেষ খবর