বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে সারা দেশ

শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই : ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে সারা দেশ

রাজধানীতে গতকাল সতর্ক অবস্থানে পুলিশ সদস্যরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘিরে সারা দেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে রায়ের আগে ও পরে সারা দেশের সড়কপথ, রেলপথ, নৌপথে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকাসহ সারা দেশে ঝটিকা মিছিল, এমনকি ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হতে পারে এমন খবর রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে।

তবে এ রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাজনিত কোনো হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার  মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, এই রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতার চেষ্টা করা হলে কঠোরভাবে তা দমন করা হবে। এদিকে যে কোনো ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ ও র‌্যাব থেকে মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুতি নিয়েছে। রয়েছে সতর্ক। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রায় ঘোষণা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির কোনো আশঙ্কা নেই। তবে কেউ যদি এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় তাহলে তাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। নিরাপত্তায় থাকবে জলকামান, এপিসি, সাউন্ড গ্রেনেডসহ অন্যান্য ব্যবস্থা। সব থানার পুলিশ ও র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়নের সদস্যরা প্রধান সড়কে প্রস্তুত থাকবেন। প্রস্তুত থাকবে বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিস। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে থাকবে অর্ধশতাধিক চেকপোস্ট। জাতীয় প্রেস ক্লাব, হাই কোর্ট, শাহবাগ, বাংলামোটর, ফার্মগেট, পল্টন, জিরো পয়েন্ট, মগবাজার, মালিবাগ, আজিমপুর মোড়সহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে পোশাকে পুলিশ-র‌্যাব থাকবে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য রাজধানীর প্রবেশদ্বারগুলোয় থাকছে র‌্যাব ও পুলিশের অন্তত ২০টি নিরাপত্তা-চৌকি। রায় ঘিরে জঙ্গি বা সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা নেই বলে নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, রায় ঘোষণার দিন আসামি ও ঢাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে আদালতের চারপাশের সড়কে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের বিশেষ আদালতে তল্লাশি চলবে, বসানো হবে চেকপোস্ট। এ ছাড়া রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে পুলিশ সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে। শহরজুড়ে থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি। এ মামলার সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র পর্যায়ের নেতারা জড়িত সে কারণে নয়াপল্টনসহ বিএনপি-অধ্যুষিত কয়েকটি এলাকায় বিশেষ নজরদারি থাকবে। রায়ের পর কেউ যাতে সড়কে নেমে যান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটাতে পারে, নাশকতা করতে না পারে সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ। নাশকতা হতে পারে এমন সম্ভাব্য স্পটগুলোতে আগে থেকেই পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা জানান, রায়কে কেন্দ্র করে কোনো হুমকি নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ও চেকপোস্ট থাকবে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, রায়কে কেন্দ্র করে কেউ যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সে জন্য সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পর্যাপ্তসংখ্যক র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবেন। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার এসআই ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত থানা পুলিশ হয়ে গোয়েন্দা পুলিশে যায়। এরপর মামলাটির তদন্তভার পায় সিআইডি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর