বৃহস্পতিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া

আপিল করবে আসামি পক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আসামিপক্ষ। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। গতকাল রায়ের পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাবেন। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। এ মামলায় অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি দেশে ফিরলে এ মামলায় তার সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব। তারেক রহমান নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।’ সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘তারেক রহমানসহ বিএনপির অনেক নেতাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। হাওয়া ভবন এবং আবদুস সালাম পিন্টুর বাসা থেকে কোনো সাক্ষী এসে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন নাই। তারা ওইখানে বসে গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করেছেন, এর কোনো সাক্ষী নাই। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘মুফতি হান্নান ৪০০ দিন রিমান্ডে থেকে যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেই জবানবন্দি তিনি প্রত্যাহার করে বলেছেন, তারেক রহমানের সঙ্গে, বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তার কোনো দিন দেখাই হয় নাই। অথচ আজকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। বিএনপির বহু নেতাকে, আমাদের আবদুস সালাম পিন্টুকে এই মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, এ মামলায় তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস হবেন। আপনারা মনে রাখবেন, এ মামলায় বিএনপির আমলে যে তদন্ত করেছে, সেই তদন্তের ভিত্তিতেই মুফতি আবদুল হান্নান ও অন্যদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতেই এ মামলার সাক্ষী হয়েছে। কোনো সাক্ষী বলেন নাই, তারেক রহমান কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করেছেন, কোনো গোপন বৈঠক করেছেন। অথচ তাকে আজকে অন্যায়ভাবে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে।’ এ আইনজীবী আরও বলেন, ‘লুত্ফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, হারিছ চৌধুরী, তারেক রহমান কোনো অন্যায় করেন নাই। এই দেশে, এই দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য, স্বাধীনভাবে দেশ পরিচালনা করার জন্য, আইনের শাসনের জন্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য তারেক রহমান আজীবন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, ভবিষ্যতেও করে যাবেন।’ এদিকে এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর বলেছেন, তিনি ন্যায়বিচার পাননি। রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার জন্য গাড়িতে তোলার সময় চিৎকার করে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় লুত্ফুজ্জামান বাবর বলেন, ‘আমাকে কারাগারে নেওয়ার পর এ ঘটনায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে জড়িয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু আমি তাতে রাজি না হওয়ায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। এটি একটি ঘৃণ্য অপরাধ। আমি তাহাজ্জুতের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি, এই ঘৃণ্য অপরাধ যারা করেছে তাদের যেন শাস্তি হয়। আমি মনে করি, আদালত আমার প্রতি ন্যায়বিচার করেনি। তাদের বিচার আল্লাহ করবেন।’ এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক (তৎকালীন ডিজি) আবদুর রহিমের স্ত্রী শিরিন রহিম জানিয়েছেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তিনি। শিরিন রহিম বলেন, ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে এ মামলায় কোনো সাক্ষী ছিল না। তিনি একুশে আগস্টের ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।’ বিএনপি সরকারের সময় এনএসআইর পদে থাকায় আবদুর রহিমকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর