শুক্রবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ ভারত-পাকিস্তান থেকে এগিয়ে

প্রতিদিন ডেস্ক

মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ ভারত-পাকিস্তান থেকে এগিয়ে

বৈশ্বিক মানবসম্পদ সূচক বা হিউম্যান ক্যাপিটাল ইনডেক্সে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের করা নতুন এক সূচক অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও নেপাল ছাড়া সবার  চেয়ে ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ। সূত্র : রয়টার্স।

বিশ্বব্যাংকের ১৫৭টি সদস্য রাষ্ট্রের ওপর জরিপ করে এই তালিকাটি করা হয়েছে। এতে কোনো দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বেঁচে থাকার অন্য অনুষঙ্গগুলো বিবেচনা করা হয়েছে। তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর। এরপর যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও হংকং। আর তালিকার তলানিতে রয়েছে আফ্রিকার দেশ শাদ ও দক্ষিণ সুদান।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া একজন শিশু বড় হয়ে কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীল হওয়ার সম্ভাবনা ৪৮ শতাংশ। ভারতে এই হার ৪৪ শতাংশ আর পাকিস্তানে ৩৯ শতাংশ। তবে শ্রীলঙ্কা ও নেপালে এই হার যথাক্রমে ৫৮ ও ৪৯ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ১০০ জনের মধ্যে ৯৭ জন শিশুই ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। ভারত ও পাকিস্তান এই হার  ৯৬ ও ৯৩ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে ৯৯ জন। বাংলাদেশে প্রতি ১০০ শিশুর মধ্যে ৬৪ জন  কোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই বেড়ে ওঠে। ভারতে এই সংখ্যা ৬২, পাকিস্তানে ৫৫, শ্রীলঙ্কায় ৮৩। বাংলাদেশে চার বছর বয়সী শিশু স্কুল শুরু করলে ১৮ বছর হওয়ার আগে স্কুলজীবনের ১১ বছর শেষ করতে পারে। ভারতে শেষ হয় ১০ দশমিক ২ বছরে। পাকিস্তানে ৮ দশমিক ৮ বছর। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে এটি ১৩ বছর। এই শিক্ষার মান বুঝতে বিশ্বব্যাংক হারমোনাইজড টেস্ট স্কোর পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, সেখানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদেও স্কোর ৩৬৮। এই মানদণ্ডে শ্রীলঙ্কার শিশুদেও স্কোর ৪০০, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি। নেপালে এই স্কোর ৩৬৯, ভারতে ৩৫৫, পাকিস্তানে ৩৩৯।  মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের নারীরা পুরুষের চেয়ে এগিয়ে। আর প্রাপ্তবয়স্কদের বেঁচে থাকার হার বাংলাদেশ ৮৭ শতাংশ। ১৫ বয়সীদের মধ্যে ৮৭ শতাংশই ৬০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকেন। আর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ৬৪ শতাংশ শিশুই স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে। স্বাভাবিকভাবে বড় হওয়া প্রক্রিয়া ও বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩৬ শতাংশ শিশুর। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে বার্ষিক বৈঠকে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। এতে বলা হয়, বর্তমানে জন্ম নেওয়া বিশ্বের ৫৬ শতাংশ শিশু কর্মক্ষেত্রে তাদের পূর্ণ বিকাশ করতে পারবে না। আর এজন্য সংশ্লিষ্ট সরকারই দায়ী। স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তাদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, এই তালিকার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রয়োজনীয় খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, এটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু কোথায় বরাদ্দ বাড়ানো দরকার সেই তথ্য প্রকাশ না করে আমরা থাকতে পারি না। তিনি বলেন, মূলত বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই এমনটা করা হয়েছে। কারণ এর সঙ্গে উৎপাদন হার, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জড়িত।

সর্বশেষ খবর