শিরোনাম
শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রবাসী বাংলাদেশিদের বীমা করাতে চায় সৌদি কোম্পানি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

সৌদি আরব প্রবাসী বেশির ভাগ বাংলাদেশি নির্মাণশিল্প ও কারখানার মতো ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এদের অনেকেই আহত এমনকি নিহত হন। আইন থাকার পরও কেবল বীমা পলিসি না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী পরিবারগুলো সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। এ অবস্থায় সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বীমা পলিসি করার আগ্রহ দেখিয়ে রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রস্তাব দিচ্ছে দেশটির বীমা কোম্পানিগুলো।

দূতাবাস থেকে সম্প্রতি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মোট চারটি বীমা কোম্পানি প্রবাসী বাংলাদেশিদের পলিসি করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে সৌদি অ্যারাবিয়ান কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি (সাইকো) ও গালফ ইন্স্যুরেন্স গ্রুপের বুরুজ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির (বুরুজ-গিগ) প্রস্তাব দুটিকে উপযুক্ত বলে মনে করছে রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাঠানো ওই চিঠিতে অ্যাম্বাসাডর গোলাম মসিহ বলেন, সৌদি আরবে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করেন, তাদের জন্য নানা ধরনের বীমাসুবিধা রয়েছে। দুর্ঘটনা ঝুঁকি, মৃত্যুঝুঁকি, চিকিৎসা ঝুঁকিসহ নানা ধরনের বীমাসুবিধা দেয় নিয়োগদাতা কোম্পানিগুলো। তবে গত ৪৫ বছরের অভিজ্ঞতা হচ্ছে এ ধরনের বীমাসুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নানা ভোগান্তির শিকার হন।

সৌদি অ্যাম্বাসাডর জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের বীমাসুবিধা নিয়ে তিনি দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি প্রবাসীদের পলিসি করাতে বাংলাদেশি কোনো বীমা কোম্পানি যাতে রিয়াদে শাখা খুলতে পারে সেই প্রস্তাব দেন। তবে সৌদি আরবের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, তাদের দেশের আইন অনুযায়ী অন্য দেশে নিবন্ধিত কোনো কোম্পানি সৌদি আরবে বীমা পলিসি করাতে পারে না।

এ অবস্থায় সৌদি আরবের চারটি বীমা কোম্পানি বাংলাদেশের বীমা কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে (জয়েন্ট ভেঞ্চার) প্রবাসীদের বীমা পলিসি করানোর বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে দুটি কোম্পানির প্রস্তাব দূতাবাসের কাছে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। দূতাবাস বলছে, বাংলাদেশের জীবন বীমা কোম্পানি যৌথভাবে সৌদি আরবের বীমা কোম্পানির সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বীমা পলিসি করানোর বিষয়ে কাজ করতে পারে। প্রস্তাব পর্যালোচনা করতে ইডরার একটি প্রতিনিধি দলকে সৌদি আরব সফরে যাওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে চিঠিতে।

জানতে চাইলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সদস্য গোকুলচাঁদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসের চিঠি দেখেছি। সৌদি আরবের দুটি বীমা কোম্পানি জয়েন্ট ভেঞ্চার পদ্ধতিতে সেখানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পলিসি করাতে চায়। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এ ছাড়া আমাদের প্রচলিত আইনে কী আছে তাও দেখতে হবে।’ ইডরার এই সদস্য জানান, প্রবাসে কর্মসংস্থানের জন্য যেতে ইচ্ছুক সব বাংলাদেশিকে যাতে বাধ্যতামূলক বীমার আওতায় আনা যায় সে বিষয়ে তারা একটি নীতিমালা করছেন। শিগগিরই তা চূড়ান্ত হবে। সেই নীতিমালা হয়ে গেলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের আর বীমাসুবিধা পেতে ঝামেলায় পড়তে হবে না।

সর্বশেষ খবর