শিরোনাম
সোমবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ষড়যন্ত্রকারীদের উপযুক্ত জবাব দেব

শিবচর ও মাওয়ায় বিশাল জনসভায় শেখ হাসিনা

রফিকুল ইসলাম রনি, বেলাল রিজভী ও লাবলু মোল্লা, শিবচর মাওয়া থেকে

ষড়যন্ত্রকারীদের উপযুক্ত জবাব দেব

শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটে গতকাল জনসভার একাংশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাত নেড়ে জনগণের অভিবাদনের জবাব দেন (নিচে) —বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছেন, তাদের যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। তিনি বলেন, এ সেতুর জন্য স্থানীয় ও বিদেশি ষড়যন্ত্রে যে অপমান আমাদের সহ্য করতে হয়েছে তা দেশের মানুষের জানা প্রয়োজন। আমাদের দেশে এমন কিছু মানুষ আছেন, যাদের কোনো দেশপ্রেম ও জনগণের প্রতি আস্থা নেই। তারাই এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, অবৈধভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে না থাকতে পেরে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে ব্যবহার করে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

গতকাল বিকালে শিবচর ও মাওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে গতকাল গোটা মাদারীপুর জেলায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। সকাল থেকেই মাদারীপুর এবং এর পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর ও ফরিদপুর জেলার নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে আসতে থাকেন। বেলা ২টার আগেই জনসভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ব্যাপক শোডাউন দেখান জনসভায়। প্রধানমন্ত্রী বেলা সোয়া ১১টায় হেলিকপ্টারে মাওয়ার দোগাছির পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১ এর মাঠে অবতরণ করেন। এরপর তিনি গাড়িতে করে যান সেতু এলাকায়। সেখানে পৌঁছে ১১টা ১৮ মিনিটে সেতুর নামফলক উন্মোচন করেন তিনি। পরে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ নির্মাণ ও মাওয়া প্রান্তে নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ উদ্বোধনের পর সেতুর নকশা দেখেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে পাশেই প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজা গোল চত্বরে সুধী সমাবেশে অংশ নেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবদুল আজিজ। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন ও সংসদ সদস্য মৃণালকান্তি দাস।  সমাবেশ শেষে মাদারীপুরের শিবচরে যান প্রধানমন্ত্রী। বিকালে কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটে জনসভায় যোগ দেন তিনি। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ৭ নম্বর খুঁটিতেই পাইল স্থাপনের কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে মূল সেতুর কাজের উদ্বোধন করেছিলেন। পদ্মা সেতুর ৪২টি খুঁটিতে ৪১টি স্প্যান বসবে। এর মধ্যে ১৪টি খুঁটি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। নদীতে ১৮০টি পাইল স্থাপন করা হয়েছে।

খুনিদের সঙ্গে ঐক্য ড. কামালের : নবগঠিত রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ড. কামাল হোসেন নৌকা থেকে নেমে এখন ধানের শীষের হাত ধরেছেন। তিনি জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলেন, অথচ আজ যে বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত, তিনি তাদের সঙ্গে ঐক্য গড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কামাল হোসেনকে শাবাশ জানাই, কারণ তিনি আমাদের দল ছেড়ে নৌকা থেকে নেমে ধানের শীষের মুঠো ধরেছেন। অবশ্য কামাল হোসেন এটা করতেই পারেন। কারণ তিনি কালো টাকা সাদা করতে পারেন। তারেক রহমান, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া কালো টাকা সাদা করার কারখানা তৈরি করেছেন। বিষয়টি ‘রতনে রতন চিনে, শিয়ালে চিনে কচু’। এ কারণেই তাদের সঙ্গে কামাল হোসেন গংরা হাত মিলিয়েছেন। বিডিআর বিদ্রোহ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দায়িত্ব গ্রহণের ২৫ দিনের মাথায় বিডিআর বিদ্রোহ হয়। ওইদিন সকাল ৭টায় তারেক রহমান তার মা খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে চলে যেতে বলেন। খালেদা জিয়া বেলা ১২টার আগে ঘুম থেকে ওঠেন না। আমরা জানতে চাই, খালেদা জিয়া ওই দিন কোথায় ছিলেন? ওইদিনই বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটে। ওই হত্যাকাণ্ডে বিএনপি-জামায়াতের হাত ছিল। বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা অফিসার মারা গেছেন। এ হত্যাকাণ্ডে তারা যে জড়িত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। তিন হাজার ৮০০ মানুষ আগুনে পুড়ে যায়। ৫০০ মানুষ মারা যায়। হাজার হাজার গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। যেসব মানুষ বেঁচে আছেন তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমি সাধ্যমতো সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছি। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি পারেন না এমন কোনো কাজ নেই। আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি এবং একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচার করেছি।

ড. ইউনূসের কথায় অর্থায়ন বন্ধ করেছিল বিশ্বব্যাংক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, ২০০১ সালে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। কিন্তু বিএনপি সরকার সে কাজ বন্ধ করে দেয়। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে কাজ শুরু করলে ড. ইউনূস অবৈধভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে না থাকতে পেরে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করেন। কোনো মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম থাকলে কেউ দেশের এত বড় সর্বনাশ করতে পারে? সুদের টাকায় যিনি ধনী হতে পারেন, তার ভিতর দেশপ্রেম থাকবে না এটিই স্বাভাবিক।

বেআইনিভাবে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আইনে আছে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত যে কেউ এমডি থাকতে পারবেন। ৭০ পেরিয়ে যাচ্ছে তখনো তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি। এই ব্যাংকটা সরকারি পয়সায় করা। ’৯৮ সালের বন্যায় ব্যাংকটি খুব বিপদে পড়ে। আমরা গ্রামীণ ব্যাংককে ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছিলাম। সবচেয়ে দুর্ভাগ্য, ৭০ বছর বয়সেও তিনি এমডি। কোনো অনুমোদন ছাড়াই তিনি এমডির পদ দখল করে থাকলেন। প্রতি মাসে সরকারি বেতনও নেন। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়ে বলা হলো, আপনি বেআইনিভাবে এমডি পদে থাকতে পারবেন না। তিনি বলেন, আমরা ড. ইউনূসকে অসম্মান করতে চাইনি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী তার সঙ্গে দেখা করলেন। তারা প্রস্তাব দিলেন, আপনি এমডি পদ থেকে সরে যান। আমরা আপনাকে গ্রামীণ ব্যাংকের ইমেরিটাস উপদেষ্টা করে রাখব। ড. ইউনূস এ প্রস্তাব মানলেন না। তিনি মামলা করে দিলেন। একটা মামলা হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে। আরেকটা মামলা হলো অর্থমন্ত্রীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে। কিন্তু মামলায় ড. ইউনূস হেরে গেলেন। ড. ইউনূস যে ১০ বছর অতিরিক্ত বেতন নিয়েছেন কোর্ট চাইলে তা ফেরত নিতে পারত। কিন্তু আমাদের দিক থেকে কোনো দাবি ছিল না। কোর্ট ড. ইউনূসকে বলে দিল, আপনি থাকতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূস ক্ষেপে গেলেন। হিলারি ক্লিনটন ওই সময়ে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আমাকে ফোন করলেন, ড. ইউনূসকে যেন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে রাখি। আমি বললাম, আইনে এটা নেই। আমি কী করে রাখব? ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী শেরি ব্লেয়ার আমাকে ফোন করলেন। এভাবে আরও অনেকেই। কিন্তু এটি তো আইনে পড়ে না। আইনের বাইরে আমরা কী করব? তাছাড়া আইন সংশোধন করব? সেই প্রস্তাবও তো আমাদের কেউ দেয়নি। শেখ হাসিনা বলেন, ড. ইউনূস মামলায় হেরে যাওয়ার পর অনেকেই আমার কাছে আসতেন। অনেক সময় আমেরিকান অ্যাম্বাসেডর যারা আছেন তারা এসেও হুমকি দিতেন। ইউনূসকে এমডি পদ থেকে সরালে পদ্মা সেতু হবে না। অনেক দিক থেকে হুমকি ছিল। কিন্তু আমার প্রশ্ন, নোবেল প্রাইজ যিনি পেয়েছেন তিনি কেন ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়তে পারেন না। সেই জায়গায় এত লোভ কেন। এরপর স্বনামধন্য এক এডিটরও ইউনূস-হিলারির সঙ্গে দেখা করলেন। হিলারি সব কথা শুনে বিশ্বব্যাংকের প্রধানকে বলে দেন যেন পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশকে কোনো টাকা দেওয়া না হয়। বিশ্বব্যাংক এই টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক থেকে বলা হলো, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। তাদের একজন ইন্টেগ্রিটি অফিসার যিনি একজন ব্রিটিশ, বাংলাদেশে এসে এখানে-সেখানে বলে বেড়ালেন, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। তিনি বলেন, ড. মশিউর রহমান বিশ্বব্যাংকে চিঠি পাঠালেন। আমরা জানতে চাইলাম, কোথায় দুর্নীতি হয়েছে তা জানতে চাই। তারা কিছু কাগজ নিয়ে এলো। ২০০১-০৬ পর্যন্ত। আমি বললাম এরা আমার মন্ত্রী না। পদ্মা সেতুর কোথায় দুর্নীতি হয়েছে আপনারা সেটা দেখান। তারা দেখাতে পারলেন না। আমরা চিন্তা করলাম পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থায়নে করব। কারও সাহায্য নেব না। শেখ হাসিনা বলেন, ’৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন মোবাইল খাতকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিই। ওই সময় ড. ইউনূস এসে আমার কাছে বললেন, তাকে একটা ফোন কোম্পানি দিলে তিনি ব্যবসা করতে চান। তিনি বললেন, এই ফোন কোম্পানি থেকে লাভের টাকা গ্রামীণ ব্যাংকে যাবে এবং এই টাকায় দরিদ্র মানুষ উপকার পাবেন। আমরা তিনটি কোম্পানিকে ফোন দিই। ড. ইউনূসকে দিলাম গ্রামীণ ফোন। কিন্তু এই ফোনের লভ্যাংশের একটা টাকাও গ্রামীণ ব্যাংক পায়নি।  তিনি বলেন, এ প্রকল্পকে কেন্দ্র করে আমাদের অনেক বাধা পাড়ি দিতে হয়েছে এবং অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে। এমনকি আমার পরিবারের সদস্যদেরও সুনাম বিনষ্টের চেষ্টা হয়েছে। শেষে কানাডার একটি ফেডারেল কোর্টে সব অভিযোগই মিথ্যা প্রমাণিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংকের গড়িমসিতে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন দুই বছর পিছিয়ে গেছে। আমাদের কিছু মানুষসহ অনেকের মাঝে এ ধারণা হয়েছিল, বিশ্বব্যাংকের টাকা ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে এই সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। সে সময় কেবলমাত্র মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন এবং তিনি এ প্রকল্পের প্রোফাইল তৈরির জন্য তার একজন উপদেষ্টাও পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু আমার পিতার মতো আমারও বাংলাদেশের জনগণের শক্তির ওপর অগাধ আস্থা রয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তারাই আমার সবচেয়ে বড় সাহায্যকারী। জনগণের অনুপ্রেরণায় ও তাদের শক্তির ওপর আস্থাশীল হয়ে আমরা এই মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুকে ‘গর্বের সেতু’ উল্লেখ করে বলেন, সেতুটি সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুর উপরের ডেক দিয়ে মোটরযান ও নিচের ডেক দিয়ে রেল চলাচল করবে। সেতুটি নির্মিত হলে দক্ষিণ অঞ্চলের ১৯টি জেলার সঙ্গে সরাসরি রাজধানীর সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এই জেলাগুলোর জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রাক্কলিত ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ের এই পদ্মা সেতু জাতীয় অর্থনীতিতে ১.২ শতাংশ জিডিপি অর্জন করবে এবং ০. ৮৪ শতাংশ দারিদ্র্য হ্রাস পাবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলছে। এর সামগ্রিক কাজ ৬০ শতাংশ এবং মূল সেতুর ভৌতিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৭০ শতাংশ। পঞ্চম স্প্যান লাগানোর পর মোট ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর মূল স্থাপনার ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। প্রমত্ত পদ্মা নদীর ব্যবস্থাপনাকে কঠিন চ্যালেঞ্জিং কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে স্থায়ী নদী সুরক্ষার ৪৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ’ শেষ হবে। তিনি বলেন, দেশের আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এ প্রকল্পের উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। আমি বিশ্বাস করি সেতুর উদ্বোধনের দিন থেকে মোটরযানের সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনও চলাচল করবে। শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সামসুদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের পরিচালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সালমান এফ রহমান, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, স্থানীয় এমপি নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, বি এম মোজাম্মেল, এনামুল হক শামীম, কর্নেল (অব.) শওকত আলী, নাঈম রাজ্জাক প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী কাল সৌদি আরব যাচ্ছেন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনের সফরে আগামীকাল সৌদি আরব যাচ্ছেন। পরদিন তিনি সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে রিয়াদে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, দুই শীর্ষ নেতার আলোচনায় ব্যবসা ও বিনিয়োগ, সৌদিতে বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ  দেশটিতে বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগ ও তাদের সুরক্ষার বিষয়টিতে  বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। বিশেষ করে, যেসব বাংলাদেশির ফিরে আসার ঝুঁকি আছে, তাদের সেখানে কাজের সুযোগ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ। এ বিষয়টির পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সৌদি সমর্থন, সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক  জোটের কর্মকাণ্ডের মতো দ্বিপক্ষীয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় আসতে পারে।

এবার সৌদি সফরের সময় ১৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন। একই দিনে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। পরদিন পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন তিনি।

সর্বশেষ খবর