একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ, কীভাবে সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে এবং সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হওয়ায় সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে কী করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, দেড় মাস পর নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক সভা হবে আজ। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ‘নির্বাচন ভবনে’ বেলা ১১টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে তার সভাকক্ষে ৩৬তম এই বৈঠক হবে। সর্বশেষ ৩০ আগস্ট কমিশন সভা বসেছিল আরপিও সংশোধন নিয়ে। সেই ৩৫তম সভায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সভা বর্জন করেছিলেন। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ইসিতে মতভিন্নতা ও কর্তৃত্ব নিয়ে অসন্তোষের মধ্যে দেড় মাস ধরে কোনো বৈঠক হয়নি। পরে পরিস্থিতি প্রশমিত হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রস্তুতিও এগিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে পদোন্নতিও দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের।
এদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের জোর প্রস্তুতির মধ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সাক্ষাৎ চেয়েছে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। ৩০ অক্টোবর থেকে সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হওয়ায় চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে চায় সাংবিধানিক সংস্থাটি।ভোট প্রস্তুতির সভা আজ : ৭ অক্টোবর ইসির উপসচিব (সংস্থাপন) মো. মঈন উদ্দীন খান স্বাক্ষরিত সভার নোটিসে বলা হয়েছে, ১৫ অক্টোবর সকালে ৩৬তম কমিশন সভা হবে। এর অন্যতম আলোচ্যসূচি হচ্ছে একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিতকরণ। এ ছাড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ভোটার তালিকায় আলাদা লিঙ্গ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য ভোটার তালিকা বিধিমালা ও সংশ্লিষ্ট ফরম সংশোধনের বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা হবে। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজকের সভায় ভোটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, কমিশন সভায় ভোটের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। বিশেষ করে অন্তত ৯৬টি কর্মপরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নসূচির লক্ষ্যমাত্রা কমিশনকে অবহিত করা হবে। নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরুর পর সভায় ভোটের তারিখ নির্ধারণ নিয়ে ফের কমিশন সভা আহ্বান করা হবে।
ইতিমধ্যে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, ‘ভোটের প্রস্তুতির প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ গুছিয়ে আনা হয়েছে। যথাসময়ে তা কমিশনকে অবহিত করা হবে। কোনো টাইম ফ্রেম নির্দিষ্ট করা হয়নি। তবে একটা সময় ধারণা করা হচ্ছে। যেহেতু ৩০ অক্টোবর আমাদের সময় (নির্বাচনের ক্ষণ গণনা) শুরু হবে, এরপর যে কোনো সময় তফসিল করতে পারে কমিশন। আমাদের প্ল্যান নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে করার।’
তফসিলের আগে বঙ্গভবনে যাচ্ছে ইসি : ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভোটের প্রস্তুতি তুলে ধরবে কমিশন। পরে যে কোনো দিন সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। আর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় চেয়ে চিঠিও দিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। জানা গেছে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে তথা ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ইসির পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতি যখন সময় দেবেন, তখনই কমিশন বঙ্গভবনে যাবে সাক্ষাৎ করতে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেত্বত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির সচিব রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতে পারেন।