সোমবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাড়ে চার কোটি যুবকের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাড়ে চার কোটি যুবকের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আমাদের জাতীয় নির্বাচন সমাগত। যুব ভোটারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি। তাদের মধ্যে ২০০৮ সালের পর ভোটার হয়েছেন তিন কোটির বেশি। জাতীয় নেতৃত্বকে এই যুবসমাজের কথা শুনতে হবে। তাদের এ কথাগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে স্থান দিতে হবে। প্রাক-নির্বাচনী আলোচনায় প্রাধান্য দিতে হবে। তাদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের পর যুবসমাজের মনের কথাগুলো, যা ইশতেহারে স্থান পাবে, সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে বলেও মত দেন এই অর্থনীতিবিদ।

গতকাল রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘সিটিজেন প্লাটফর্ম ফর এসডিজিস, বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ও এজেন্ডা ২০৩০-তারুণ্যের প্রত্যাশা’ শীর্ষক যুব সম্মেলন-২০১৮’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বিভিন্ন সংগঠনের জোট ‘সিটিজেন প্লাটফর্ম ফর এসডিজিস, বাংলাদেশ’রও আহ্বায়ক।

যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী বলেন, এখনো অনেক কিছু করার বাকি আছে। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসডিজি বাস্তবায়নে তরুণ সমাজের বড় একটা দায়িত্ব আছে। তরুণ সমাজ সমস্যাগুলো তুলে ধরে সমাধান করে। তার মতে, চ্যালেঞ্জ যদিও অনেক রয়েছে। আমাদের স্বপ্ন নিয়ে আমরা সবাই একমত। স্বাধীনতার স্বপ্ন পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। তবে কিছুই হয়নি, এটা ঠিক নয়। ১০ বছর আগের বাংলাদেশ ও আজকের বাংলাদেশ এক নয়।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফির ওপর ভ্যাটের আন্দোলন ও সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলন আমাদের অনুপ্রাণিত করে। তারা যখন বলেন, রাষ্ট্রের মেরামত চলছে, তখন আমাদের সেই রাষ্ট্রকে দেখার বড় আগ্রহ জাগে। তিনি বলেন, আউট সোর্সিং তালিকায় বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয়। শ্রমশক্তি যুবকদের ১০ জনে একজন বেকার। প্রবাসী যুবকদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মর্যাদা আমরা দিতে পারছি না। মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব আছে যুবসমাজের ভিতরে।

তিনি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলেন, যুবসমাজের মধ্যে মাদকাসক্তির একটা বড় প্রভাব আছে। যুবসমাজের প্রত্যাশার প্রতি মনোযোগী হই, তাদের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে নীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে মনোযোগী হই, তবেই আমরা বাংলাদেশের চেহারা আরও দ্রুততার সঙ্গে বদলে দিতে পারব।

যুব সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের পক্ষে বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, আজকে আমরা একটা সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতির মধ্য দিয়ে চলেছি। এটা আমাদের পাওনা ছিল না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মানব উন্নয়ন সূচকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। নানা ধরনের সামাজিক সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তা গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলেন, আমাদের অনিয়মগুলো বাদ দিয়ে নিয়মে চলতে হবে। এখানে আইন আছে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। এ ছাড়া যুব সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, সম্মানিত অতিথি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন প্রমুখ। পরে সম্মেলনের দিনব্যাপী বিভিন্ন অধিবেশনে বক্তব্য দেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. রাশেদা কে চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মনজুর প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর