সোমবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

মন্ত্রিসভায় এখনো আলোচনার আশা তথ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হবে বলে আশা করছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি গতকাল সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ বিষয় নিয়ে যে কোনো সময় মন্ত্রিসভায় আলোচনা হবে। আলোচনা করলে আবারও এডিটর্স কাউন্সিল ও সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হব। আলোচনাটা চালু আছে, বন্ধ হয়ে যায়নি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে যে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে আলোচনার মধ্য দিয়ে সেসব বিষয়ে একটা দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সক্ষম হব বলে বিশ্বাস করি। সুতরাং তিন মন্ত্রী কথা রাখেননি— এ মন্তব্যটা আমাদের কাছে  হৃদয়বিদারক মন্তব্য, দুঃখজনক। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সম্পাদক পরিষদের আপত্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রিসভায় আলোচনার পরিবেশ ছিল না বলে হয়নি। সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন কর্মসূচির বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তো গণতান্ত্রিক পরিধির ভিতর কাজ করছি। সাংবাদিকরা মানববন্ধন করবেন, কোনো দাবি লিখিতভাবে করতে পারেন, সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারেন, মিছিল, মানববন্ধন করতে পারেন— এগুলো সব দাবি তোলার পন্থা। এগুলো গণতান্ত্রিক পন্থা, সেই পন্থা অবলম্বন করলে আমাদের তো এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নেই। আমরা শুধু বলব যে আপনি মানববন্ধন করুন, আর মানববন্ধন না করুন— আমরা আলোচনায় আছি, আলোচনার ভিতরে থাকব। তিনি বলেন, বিলে সই করা রাষ্ট্রপতির রুটিন কাজ। আইন পাস হওয়ার পরও এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ সব সময় থাকে, এখনো রয়েছে। আমাদের কাজ যদি সংশোধন করতে হয় করব, সংসদ তো আছে। সরকার তো আছে, সুতরাং আলোচনাটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সম্পর্কে হাসানুল হক ইনু বলেন, জঙ্গি, সন্ত্রাসী, জামায়াত, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী ও স্বীকৃত চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দেশ উদ্ধারের ঘোষণা জাতির সঙ্গে ঠাট্টা-মশকরা। ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা ও ১১ দফার লক্ষ্য আসলে গণতন্ত্রকে জিম্মি করা। যার মূল উদ্দেশ্য জঙ্গিসঙ্গী ও দুর্নীতিবাজসহ সব অপরাধীদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে এনে অস্বাভাবিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এ কারণেই তাদের এই ঐক্য আসলে জোট নয়, একটি ষড়যন্ত্রের ঘোঁট।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে কূটনীতিকদের জানালো সরকার : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগ ও সংশোধনে বিভিন্ন মহলের দাবির মধ্যেই গতকাল ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের এ আইন সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে সরকার। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে ওই আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সঙ্কুচিত করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় কয়েকটি দূতাবাস বিবৃতি দিয়েছিল। তবে সরকারের বক্তব্য হলো, এ আইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে না। বরং ডিজিটাল প্লাটফর্ম অপপ্রচার রোধে এটি ভূমিকা রাখবে। ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ আইন সংশোধন করার আশ্বাস দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানা যায়নি। তবে ইউরোপীয় কূটনীতিকরা কয়েক মাস আগেই এ আইন নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা সরকারকে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, গতকাল কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে ঢাকার বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মিশনের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। সরকারের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকও ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর