সোমবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

অভিযোগ ভিত্তিহীন, আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

অভিযোগ ভিত্তিহীন, আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি

বিশ্বব্যাপী যৌন নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন ‘মি-টু’ এর ধারাবাহিকতায় নয়াদিল্লির কয়েকজন নারী সাংবাদিকের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর। অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে উড়িয়ে দিয়েছেন তার পদত্যাগ নিয়ে চলতে থাকা জল্পনা-কল্পনাও। অভিযোগ ওঠার সময় নাইজেরিয়ায় সরকারি সফরে থাকা এম জে আকবর গতকাল দেশে ফিরে বিবৃতি দিয়ে তার এ অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেক অভিযোগকারিণীর বিষয়ে আলাদা আলাদা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভারতীয় দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ এবং ‘এশিয়ান এজ’-এর সাবেক সম্পাদক এম জে আকবর।

ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, স্বনামখ্যাত সম্পাদক থেকে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া এম জে আকবরের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে সাংবাদিকতায় সদ্য যোগ দেওয়া কয়েকজন তরুণী অশোভন আচরণের অভিযোগ তোলেন। তখন আফ্রিকার কয়েকটি দেশ সফরে ছিলেন প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর। রামানি নামে এক নারী সাংবাদিক প্রথম অভিযোগ তোলেন গত ৮ অক্টোবর। এরপর একে একে অভিযোগ করেন প্রেরণা সিং বিন্দ্রা, গাজালা ওহাব, সুতপা পাল, অঞ্জু ভারতী, সুপর্ণা শর্মা, শোমা রাহা, মালিনী ভুপতা, কণিকা গাহলুত, কাদম্বরী এম ওয়াদে, মাজলি ডি পুইয়ে কাম্প এবং রুথ ডেভিড নামে আরও কয়েকজন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আলোড়ন তোলে। সর্বশেষ গত দুই দিন ভারতজুড়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল, দেশে ফিরেই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন এম জে আকবর। তাই গতকাল দেশে ফিরে নয়াদিল্লির বিমানবন্দরে নানান প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। পরে বিবৃতি দিয়ে নিজের অবস্থান জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

বিবৃতিতে এম জে আকবর বলেন, ‘আমার  বিরুদ্ধে তোলা অশালীন আচরণের অভিযোগ মিথ্যা-বানোয়াট। বিদেশে থাকায় আমি আগে জবাব দিতে পারিনি। কোনো প্রমাণ ছাড়া মিথ্যা  অভিযোগ করা এখন কিছু মানুষের মধ্যে সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এখন আমি দেশে ফিরে এসেছি। এবার আমার আইনজীবীরা যা করার করবেন। আর কয়েক মাস বাদে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এমন অভিযোগ উঠল কেন? এর নেপথ্যে কোনো কারণ আছে কি? উত্তর আপনারাই দেবেন। এসব অভিযোগ আমার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করেছে। মিথ্যার হাত পা  হয় না কিন্তু তার মধ্যে বিষ থাকে। এই অভিযোগ হতাশাব্যঞ্জক। আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। এম জে আকবর বলেন, প্রিয়া  রামানি এক বছর আগে এই ব্যাপারটা শুরু করেছেন। আগে আমার নাম করেননি। এখন করছেন। একটি টুইটের জবাবে তিনি  নিজেই বলেছেন আমার নাম আগে বলেননি কারণ আমি কিছু করিনি। আমি যদি কিছু না করে থাকি তাহলে এগুলো চারপাশে কী ঘটছে এবং কেন ঘটছে? এরকম পরিস্থিতি আগে কখনো তৈরি হয়নি। আমি তাকে কখনো স্পর্শ করিনি। সোমা রাহারও বলে দেওয়া উচিত আমি কিছু করিনি। অঞ্জু ভারতী বলেছেন আমি সুইমিং পুলে পার্টি করছিলাম। আদতে আমি সাঁতার কাটতেই জানি না! গাজালা অয়াহাবও আমার বিরুদ্ধে  অভিযোগ করেছেন। আমি তার সঙ্গে একটিমাত্র জায়গায় কাজ করেছি। সেটি হলো এশিয়ান এজ। সে সময় সম্পাদকীয় টিম  একটা ছোট হলে বসে কাজ করত। আমার জন্য চারদিক প্লাইউড দিয়ে ঘেরা ছোট একটা কিউবিকল ছিল। বাকিরা বসতেন মাত্র  দুফুট দূরে। তাই ওইটুকু জায়গায় কিছু হবে এটা ধরে নেওয়া যায় না। তাছাড়া এমন কিছু হলে কেউ জানবে না, সেটাও হতে  পারে না! এই অভিযোগ মিথ্যা, বানানো এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সর্বশেষ খবর