বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোটকেন্দ্র বাড়ছে, ইভিএমের চিন্তা

মতবিরোধ থাকলেও নির্বাচন করা কঠিন হবে না : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটকেন্দ্র বাড়ছে, ইভিএমের চিন্তা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের চার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে ভোটার তালিকার ভুলত্রুটি যাচাই; ভোটকেন্দ্র স্থাপন-সংস্কার; ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতি এবং আংশিকভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্ধারিত তালিকার বাইরে অতিরিক্ত ৫ ভাগ ভোট কেন্দ্র প্রস্তুত এবং ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে নির্দলীয় লোক নিয়োগের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। আর মাঠ কর্মকর্তরাও ইসির কাছে বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন।

গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। সভায় ইসি কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুপারিশ করায় এ-সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব তালুকদারকে ধন্যবাদ জানান সিইসি। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। এ ছাড়া ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যাতে কোনোভাবেই রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা তালিকায় না থাকে। এ ছাড়া আসন অনুযায়ী নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রের বাইরে ৫ ভাগ করে ভোটকেন্দ্রের তালিকা অতিরিক্ত তৈরি করে রাখতে বলা হয়েছে। তারা বলেন, মাঠ কর্মকর্তারাও ইসির কাছে বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে ভোট কেন্দ্রে যাতায়াত সমস্যা, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কঠিন, পাহাড়ি এলাকায় ভোটের মালামাল পৌঁছানো ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। বৈঠকে মাঠ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘ভোট আমাদের পবিত্র আমানত। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই আমানতের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ইসি পদোন্নতি প্রদান শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে যোগ্য কর্মকর্তাদের আইনানুগভাবে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

মতবিরোধ থাকলেও নির্বাচন করা কঠিন হবে না : নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার কাজ কঠিন হবে না বলে মন্ত্মব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরম্নল হুদা। গতকাল নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্ত্মব্য করেন।

সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার ‘বক্তব্য রাখতে না দেওয়ার’ প্রতিবাদে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে সভা বর্জন করেন মাহবুব তালুকদার। বাকস্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। সভায় বক্তব্য উপস্থাপন করতে না দেওয়ায় তিনি অপমানিত বোধ করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলন করেন। তালুকদারের সভা বর্জন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘ওটা গতকালের ঘটনা। এ নিয়ে তো গণমাধ্যমে সব রিপোর্ট হয়েছে। ওটা নিয়ে আমি কথা বলব না। আমাকে আর ইনসিস্ট করবেন না।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকের বিষয়ে সিইসি বলেন, ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ সহ তিনচারটি বিষয়ে তারা কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সার্বিকভাবে পরিস্থিতি সন্ত্মোষজনক। কোথায়, কীভাবে নির্বাচনসামগ্রী নেওয়া হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা তারা পাচ্ছেন। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে কোনো বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর জানতে পারব সরকারের অবস্থান কী থাকবে, এমপিদের অবস্থান কী থাকবে। এটা নিয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা দেখি সরকার এমপিদের কীভাবে রাখে।’ আচরণবিধিতে কোনো পরিবর্তন আনবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আচরণ বিধিতে কিছু পরিবর্তনের উদ্যোগ নেব। তবে কী তা এখন মনে নেই। নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম তৈরি করেছেন। সামনে তিন-চার দিন পর আমাদের কমিশন সভা আছে। সেদিন এটি দেখা হবে।’ মাঠ কর্মকর্তারা নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে কী বলেছেন জানতে চাইলে সিইসি বলেন, তারা বলেছেন তাদের যে দায়িত্ব সেগুলোর ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা, পুলিশের সহযোগিতা, জেলা পরিষদের সহযোগিতা এগুলো তারা যথেষ্ট পাচ্ছেন এবং তাদের এ পর্যন্ত্ম যে প্রস্তুতি তা ভালো। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর