বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সম্প্রচার কমিশনে খবরদারির ক্ষমতা কেন মন্ত্রণালয়ের হাতে?

জুলকার নাইন

সম্প্রচার কমিশনে খবরদারির ক্ষমতা কেন মন্ত্রণালয়ের হাতে?

শফিউল আলম ভূইয়া

প্রস্তাবিত সম্প্রচার আইন, ২০১৮-তে সম্প্রচার কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়কে খবরদারি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু জে এম শফিউল আলম ভূইয়া। তিনি বলেন, সম্প্রচার কমিশনের যে কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে আপত্তি থাকলে তথ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করতে পারবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ খবরদারির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাহলে আমরা কি তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সম্প্রচার কমিশন পেতে যাচ্ছি? গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। অধ্যাপক শফিউল আলম ভূইয়া বলেন, সম্প্রচার আইনের সবচেয়ে শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ পাওয়া হলো সম্প্রচার কমিশন। সম্প্রচারমাধ্যমকে দেখাশোনা করার জন্য কাজ করবে এ কমিশন। সম্প্রচারমাধ্যমের কারও বিষয়ে অভিযোগ বা মামলা করতে হলে সম্প্রচার কমিশনের অনুমতি নিতে হবে। চাইলেই সরাসরি গিয়ে মামলা করা যাবে না। এটা আইনের অত্যন্ত ভালো দিক। কিন্তু সেই সম্প্রচার কমিশনকে সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়ের অধীন রাখাটা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে তা ভেবে দেখার মতো বিষয়। আবার সম্প্রচার কমিশন বা কমিশনারের মর্যাদার বিষয়টি এ আইনে এখনো স্পষ্ট হয়নি। হয়তো বিধি-প্রবিধি প্রণয়নের সময় এগুলো উল্লেখ থাকবে। তিনি বলেন, সম্প্রচারব্যবস্থার উন্নয়ন, অরাজকতা প্রতিরোধ ও সম্প্রচারমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ করতে এ আইন অত্যাবশ্যক। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া সম্প্রচার আইন, ২০১৮-এর খসড়া প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সম্প্রচার ব্যবস্থাপনার কাজ গতিশীল করতে, লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন, বাতিল ও বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এ আইনের আওতায় সাত সদস্যের একটি সম্প্রচার কমিশন গঠিত হবে। পাঁচ সদস্যের একটি সার্চ কমিটি কমিশনের জন্য সদস্য নির্বাচন করবেন। কমিশন সম্প্রচারব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও গতিশীল, মান উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ণয়ে কাজ করবে। সেই সঙ্গে সম্প্রচার যন্ত্রপাতির লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও বাতিলের জন্য সুপারিশ করবে। বলা হয়েছে, সরকারের অনুমতিসাপেক্ষে কমিশনই সম্প্রচার লাইসেন্স দেবে। তবে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আপত্তি থাকলে তথ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করতে পারবে। অধ্যাপক শফিউল আলম ভূইয়া বলেন, যে কোনো ধরনের আপিলের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতকে বিবেচনা করা উচিত, কোনো মন্ত্রণালয় নয়।

সর্বশেষ খবর