নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে ১০ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল সকালে রাজধানীর হাউস বিল্ডিংয়ের সামনের রাস্তায় সমাবেশ শেষে একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা  মো. নাসির উদ্দিনের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেয়। দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম  হেমায়েত উদ্দিন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারী মাসউদ। স্মারকলিপির ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— তফসিল ঘোষণার আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন এবং নির্বাচনের দিন সশস্ত্র বাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া, নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, গণমাধ্যমে সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানি বন্ধ, দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ রাখা। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ  রেজাউল করীম পীর চরমোনাই বলেন, দেশবাসী আর কোনো তামাশার নির্বাচন মেনে নেবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের বিল পাস করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে একজন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। দলীয় আজ্ঞাবহ কমিশনের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নিবন্ধিত সব দলের মতামতের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। পীর চরমোনাই বলেন, এসব দাবি পূরণের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তাই জাতির অভিভাবক হিসেবে তিনি দাবিগুলো পূরণ করে জাতিকে সামনের একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করবেন। পীর সাহেব বলেন, রাজনৈতিক নৈরাজ্য ও প্রতিহিংসার আগুন  যেভাবে ধেয়ে আসছে, তা যদি নির্মূল করা না যায় তাহলে বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ দেশের মতো আমাদের দেশেও গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। তার আলামতই দিন দিন প্রকট হচ্ছে। আর এ সুযোগে আমাদের দেশে বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী অপশক্তি ঘাঁটি গেড়ে বসার সুবর্ণ সুযোগ পাবে। যার ফলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর উদ্যোগ রাষ্ট্রপতির কাছে দেশবাসী প্রত্যাশা করে। পীর সাহেব বলেন, এরপরও দাবি পূরণ না হলে কঠিন  থেকে কঠিন কর্মসূচি দিয়ে দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করা হবে।