শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোটে যাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

ড. কামালের নেতৃত্বে ২৫ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক, জিজ্ঞাসা প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, খালেদা মুক্তি না পেলে কী হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটে যাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি সরকারকে মানতে হবে।

গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেক শোরে ২৫টি দেশের কূটনীতিকদের এ তথ্য জানান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোক্তা ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, পরিবেশ পেলে অবশ্যই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোটে অংশ নেবে। বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে শুরু হওয়া বৈঠক প্রায় এক ঘণ্টা চলে। বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি ও ক্ষমতায় গেলে ১১ দফা লক্ষ্য কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়।

বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকে সূচনা বক্তব্য দেন। এরপর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য উপস্থাপন করেন। এ সময় কূটনীতিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন তিনি। মঞ্চে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ছাড়াও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। ঢাকায় অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইজারল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, ভিয়েতনাম, কানাডা, তুরস্ক, মরক্কো, ভিয়েতনাম, ডেনমার্ক, গ্রিস, নরওয়েসহ ২৫ দেশের কূটনীতিকরা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পূর্ব শর্তাবলি, ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয় সম্পর্কিত কূটনীতিকদের আটটি প্রশ্নের জবাব দেন ড. কামাল হোসেন। বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিটি দল থেকে ১০ জন করে প্রতিনিধি অংশ নেন। তবে বিএনপির প্রতিনিধি ছিলেন ২০ জনেরও বেশি।

বৈঠকে অংশ নেওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে ঐক্যফ্রন্টের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আপনাদের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান কে? জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চলছে যৌথ নেতৃত্বে। এখানে একক কারও নেতৃত্ব নেই। সবার মতামতের ভিত্তিতেই ফ্রন্ট পরিচালিত হচ্ছে। কূটনীতিকরা প্রশ্ন করেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? এর উত্তরে ড. কামাল হোসেন জানান, বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র বিদ্যমান। আর সংসদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নির্ধারণ করেন সংসদ সদস্যরা। সুতরাং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে রীতি অনুযায়ী সংসদ সদস্যরাই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবেন। এর সঙ্গে আরেক কূটনীতিক সম্পূরক প্রশ্ন করেন, রাষ্ট্রপতি কীভাবে নির্বাচিত হবেন? জবাবে ড. কামাল বলেন, এটাও পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। বাংলাদেশের সংবিধান তা-ই বলে।

রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তিনি কারাগারে থাকলে ঐক্যফ্রন্ট জাতীয় নির্বাচনে যাবে কিনা তাও জানতে চান কূটনীতিকরা। এ প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল কূটনীতিকদের জানিয়েছেন, নির্বাচনের পরিবেশ পেলেই নির্বাচনে যাব। কীভাবে পরিবেশ পাব তা আমাদের সাত দফা দাবির মধ্যে তুলে ধরেছি। আমরা তো নির্বাচনে যেতেই চাই। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। নির্বাচনে যাব বলেই তো পরিবেশটা চাই। আর নির্বাচনে না গেলে তো পরিবেশ চাওয়ার দরকার নেই। কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, জামায়াতে ইসলামী আপনাদের ফ্রন্টে আছে কিনা? জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা শুরু থেকেই ঘোষণা দিয়েছি, স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। আমাদের এখানে যারা রয়েছেন, সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। জামায়াতের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া জামায়াতের তো নিবন্ধনই নেই। সুতরাং তাদের নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্যও নেই।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবিগুলো সংবিধানসম্মত কিনা— জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের জনগণের জন্যই সংবিধান। বার বার সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়েছিল। অথচ তা সংবিধানে ছিল না। করা হয়েছিল জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে। বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্য কূটনীতিকদের কাছে ব্রিফিং করেছেন ড. কামাল হোসেন। আজকে আমরা শুধু বাংলাদেশে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনার-কূটনীতিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। আমদের শীর্ষ নেতা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ড. কামাল হোসেন সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের প্রশ্নের জবাবও তিনি দিয়েছেন। অত্যন্ত সফলভাবে এই মতবিনিময় সম্পন্ন হয়েছে। ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচনের স্বার্থে সাত দফা দাবি তুলে ধরেছি। এগুলো কূটনীতিকদের কাছেও তুলে ধরা হয়েছে।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজউদ্দিন আহমদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লা বুলু, আবদুল মান্নান, শাহজাহান ওমর, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, জয়নুল আবেদিন, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, ড. শাহিদা রফিক, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়াল, জেবা খান, মীর হেলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, জেএসডির তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের মোস্তফা মহসীন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা আমিন, নাগরিক ঐক্যের এস এম আকরাম, আতিকুর রহমান, মমিনুল ইসলাম, শহীদুল্লাহ কায়সার, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কূটনীতিকদের কাছে হস্তান্তর করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফায় যা আছে :

১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।

২. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

৩. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতার ব্যক্তিদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করতে হবে।

৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে।

৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনাস্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশের কোনো প্রকার বিধিনিষেধ আরোপ না করা। নির্বাচনের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।

৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও কোনো ধরনের নতুন মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

১১ দফা লক্ষ্যে যা আছে :

১. মহান মুক্তিসংগ্রামের চেতনাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিদ্যমান স্বেচ্ছাচারী শাসনব্যবস্থার অবসান করে সুশাসন, ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করা। এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক নির্বাহী ক্ষমতা অবসানকল্পে সংসদে, সরকারে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ ও ন্যায়পাল নিয়োগ করা।

২. ৭০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের যুগোপযোগী সংশোধন করা। জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাসহ সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগদানের জন্য সাংবিধানিক কমিশন ও সাংবিধানিক কোর্ট গঠন করা।

৩. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা এবং স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারক নিয়োগের নীতিমালা প্রণয়ন ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা।

৪. দুর্নীতি দমন কমিশনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত করা, দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দুর্নীতিকে কঠোর হাতে দমন। ৫. দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারত্বের অবসান ও শিক্ষিত যুবসমাজের সৃজনশীলতাসহ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়োগদানের ক্ষেত্রে মেধাকে যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় কোটা সংস্কার করা। ৬. সব নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করার বিধান করা, কৃষক শ্রমিক ও দরিদ্র জনগণের শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান ও পুষ্টি সরকারি অর্থায়নে সুনিশ্চিত করা এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। ৭. জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে দুর্নীতি ও দলীয়করণের কালো থাবা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের সার্বিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও কাঠামোগত সংস্কার সাধন করা। ৮. রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জনগণের আর্থিক সচ্ছলতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, জাতীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সুষম বণ্টন, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূরীকরণ ও জনকল্যাণমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। নিম্ন আয়ের নাগরিকদের মানবিক জীবনমান নিশ্চিত করা এবং দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বেতন-মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা। ৯. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গঠন এবং প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা ও নেতিবাচক রাজনীতির বিপরীতে ইতিবাচক সৃজনশীল এবং কার্যকর ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা। কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেওয়া। ১০. ‘সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব— কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’, এই নীতির আলোকে জনস্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তাকে সমুন্নত রেখে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা এবং প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে পারস্পরিক সৎ প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্ব ও সমতার ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ১১. বিশ্বের সব নিপীড়িত মানুষের ন্যায়সংগত অধিকার ও সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত ও পুনর্বাসনের কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীর আধুনিক প্রশিক্ষণ এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, প্রযুক্তি ও সমরসম্ভারে সুসজ্জিত, সুসংগঠিত ও যুগোপযোগী করা।

সর্বশেষ খবর