সোমবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিলেট নিয়ে উত্তেজনা

সংলাপ চেয়ে সরকারকে পাঠানো হবে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

তফসিলের আগে সংলাপ চেয়ে সরকারকে চিঠি দেবে বিএনপি ও ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ ছাড়া আগামী ২৪ অক্টোবর সিলেটের জনসভায় লাখ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে চায় তারা। এ নিয়ে গতকাল বিকালে রাজধানীর মতিঝিলে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটি ও কো-অর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খুব শিগগিরই সরকার ও আওয়ামী লীগের কাছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা নিয়ে আলোচনার জন্য চিঠি পাঠানো হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বরাবর এ চিঠি পাঠানো হবে। বৈঠক করা হবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও। এ ছাড়া ২৬ অক্টোবর রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে সব পেশাজীবীর সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে। ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম ও ২ নভেম্বর রাজশাহীতেও জনসভা করার সিদ্ধান্ত হয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে। বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে প্রায় আড়াইঘণ্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য জানান জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি বলেন, ‘সরকারকে আমরা দাবি জানাব, তফসিল ঘোষণার পূর্বে বৈঠক করার জন্য আমরা যারা অংশী, আমরা যারা শরিক, আমরা যারা নির্বাচন করতে চাই তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করে যেন তফসিল ঘোষণা না করা হয়। সেজন্য আমরা ৭ দফা দাবি সরকার ও সরকারি দলকে চিঠি দিয়ে জানাব। একইভাবে আমাদের দাবি নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও আমাদের একটি প্রতিনিধি দল যাবে।’ কবে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলকে চিঠি দেবেন প্রশ্ন করা হলে আ স ম রব বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্যাডে লিখিতভাবে ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করে আমাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে চিঠি যাবে। তবে কবে দেওয়া হবে তা এখনো নির্ধারণ হয়নি।’ যুক্তফ্রন্ট নেতা আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘আজকে (রবিবার) সকালে চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে সিলেটের জনসভার আগেই তার মুক্তি দাবি করছি। আগামী ২৪ অক্টোবর সিলেটে রেজিস্ট্রি মাঠে জাতীয় যুক্তফ্রন্টের উদ্যোগে জনসভা হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন যুক্তফ্রন্টের শীর্ষ নেতা সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন ও প্রধান বক্তা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জনসভায় সভাপতিত্ব করবেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।’ জেএসডি সভাপতি আরও বলেন, ‘সরকারকে ধন্যবাদ জানাই তাদের এই শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ার জন্য। আমি আশা করি, আগামী ২৭ তারিখে চট্টগ্রামের জনসভারও তারা অনুমতি দেবে। রাজশাহীর জনসভার তারিখ ৩০ অক্টোবর থেকে পিছিয়ে ২ নভেম্বর করা হয়েছে। সুশীল সমাজ-বুদ্ধিজীবী-পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় হবে ২৬ অক্টোবর বিকাল তিনটায় হোটেল পূর্বাণী। এ ছাড়া শিক্ষকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবে ফ্রন্ট। যার সময়সূচি নির্ধারণ হয়নি।’

রাজধানীর মতিঝিলে গণফোরামের কার্যালয়ে এই বৈঠক বসে বিকাল ৫টায়। চলে আড়াই ঘণ্টা। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মওদুদ আহমদ, কো অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু,  মো. শাহজাহান, মনিরুল হক চৌধুরী ও হাবিবুর রহমান হাবিব, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, আবদুল মালেক রতন, শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের মোস্তফা মহসীন মন্টু, সুব্রত  চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোকাব্বির খান, আ ও ম শফিক উল্লাহ, মোশতাক আহমেদ, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমেদ, আ ব ম মোস্তফা আমিন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, মমিনুল ইসলাম, শহীদুল্লাহ কায়সার, ডা. জাহেদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছিলেন। গণফোরামের কার্যালয়ে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সাধারণ সম্পাদক  মোস্তফা মহসীন মন্টু।

অনুমতি না পেয়ে  হাই কোর্টে জাতীয় ঐক্য : এর আগে সিলেটে জনসভা করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করা হয়েছে। হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গতকাল সিলেটের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক আলী আহমেদ এ রিটটি দায়ের করেন। জনসভার অনুমতি না দেওয়া কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে। স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশপ্রধান, সিলেটের পুলিশ কমিশনারসহ পাঁচজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। আজ সোমবার রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিক। কামাল হোসেন রিট আবেদনের শুনানিতে অংশ নিবেন বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর