পৃথক পৃথক মামলায় আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ ছাড়া জামিন আবেদন মঞ্জুর না করায় জেলে যেতে হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে।
মানহানির দুই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গতকাল আত্মসমর্পণ করে হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। বিকালে হাই কোর্টে হাজির হয়ে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদন করলে তাকে পাঁচ মাসের আগাম জামিন দেওয়া হয়। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান। এ সময় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনও উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ। আদেশের পর জয়নুল আবেদীন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে জামালপুর ও ঢাকায় দুটি মামলা হয়েছে। এ দুই মামলায় হাই কোর্টে জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে ৫ মাসের আগাম জামিন দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বেসরকারি একটি টেলিভিশন টক-শোতে তিনি একটি মন্তব্য করেছিলেন। সে কারণে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মন্তব্যের জন্য ফোন করে মইনুল হোসেন ক্ষমা চেয়েছেন, লিখিতভাবে সরি বলেছেন। তারপরও মামলা হয়েছে, যা আমরা আশা করিনি। এ ছাড়া জামালপুরে যিনি মামলাটি করেছেন তিনি যুব মহিলা লীগের সদস্য। বোঝা যায় এর পেছনে একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।’ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ বলেন, ‘জামিন আবেদনের বিরোধিতা সত্ত্বেও আদালত তাকে (মইনুল হোসেন) জামিন দিয়েছে। হাই কোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।’ এদিকে আশুলিয়া থানায় চাঁদাবাজি ও জমি দখলের পৃথক দুই মামলায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আগাম জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ জামিন দেয়। অভিযোগপত্র দাখিল না করা পর্যন্ত জাফরুল্লাহর জামিন মঞ্জুর করে আদালত। জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর রাতে আশুলিয়া থানায় জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের মোহাম্মদ আলী ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আনিছুর রহমান। মামলার এজাহারে বলা হয়, আশুলিয়ার পাথালিয়া মৌজায় ৪.২৪ একর জমির মালিক মোহাম্মদ আলী, আনিছুর রহমান ও তাজুল ইসলাম। আসামিরা দীর্ঘদিন এ জমি দখলের চেষ্টা করছেন। ১৪ অক্টোবর আসামিরা ওই জমিতে হাজির হয়ে বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নির্দেশ অনুযায়ী এ জমি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে হস্তান্তর করতে হবে অথবা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ১ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে। বাদীরা এ টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা ভাঙচুর করেন। এরপর ১৯ অক্টোবর চাঁদা দাবি, ভাঙচুর ও জমি দখলের অভিযোগ এনে আশুলিয়া থানায় আরও একটি মামলা করা হয় জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে।
আমীর খসরু জেলে : চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, আইসিটি আইনের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। ছাত্রলীগ নেতা জাকারিয়া দস্তগীরের করা মামলায় চট্টগ্রামের নিম্ন আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন বিএনপির এই নেতা। গতকাল জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা আমীর খসরুকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।