মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোট হবেই, ঐক্যফ্রন্ট ছাল-বাকলের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোট হবেই, ঐক্যফ্রন্ট ছাল-বাকলের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের চিরাচরিত বিষয়। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কম হয়নি। কিন্তু সবকিছু মোকাবিলা করেই আমরা এগিয়ে যেতে পারছি। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে তফসিল দেবে ঠিক সেই সময়েই নির্বাচন হবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আমরা সক্ষম হব। সে শক্তি আওয়ামী লীগ ও সরকার রাখে।

গতকাল বিকালে গণভবনে সৌদি আরব সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। লিখিত বক্তব্যের পর প্রায় ৪০ মিনিট সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা এবং সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে যথাসময়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে কিনা— সাংবাদিকের এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এখানে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাধীনভাবে। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে যারা সংশয় সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে যেন গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা না থাকে। আর ধারাবাহিকতা না থাকলে কিছু লোকের সুবিধা হবে। তাই তারা নির্বাচন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করতে চায়।

ঐক্যফ্রন্ট ছাল-বাকলের তৈরি : সাধুবাদ জানাই : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক স্বাধীনতা আছে, কথা বলার স্বাধীনতা আছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে একে সাধুবাদ জানাই। তিনি বলেন, কারা ঐক্য করেছে তা খেয়াল রাখতে হবে। দেখতে হবে কার কী অঙ্গভঙ্গি, কার কী বাচনভঙ্গি। এদের একজন মেয়েদের প্রতি কী ধরনের কটূক্তি করেছে তাও দেখেছেন। ঐক্যফ্রন্টে এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল যোগ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে না। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, এদের মধ্যে অনেকে আওয়ামী লীগে ছিল। তারা এখন জোট করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এখন ইমারজেন্সি নেই, মার্শাল ল নেই। গণতান্ত্রিক ধারায় তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সুতরাং এটাকে সাধুবাদ জানাই। নবগঠিত জোটের সাত দফা দাবি নিয়ে প্রশ্ন করলে শেখ হাসিনা বলেন, সাত দফা আর কত দূর যায়, তার জন্য অপেক্ষা করে আছি। তারপর আমি আমার বক্তব্য দেব।

তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন বিএনপির সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের জোট করার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ড. কামাল হোসেন জোট করেছেন কার সঙ্গে? ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যে আসামি তার নেতৃত্বে যে দল তার সঙ্গে। মানি লন্ডারিংয়ে যে অভিযুক্ত, এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তার সঙ্গে। আবার এতিমের অর্থ আত্মসাতের মামলা যিনি করেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে যিনি উপদেষ্টা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন তিনিও এ ঐক্যের সঙ্গে আছেন। এরা সব এক হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী, সাজাপ্রাপ্ত তারা এর মধ্যে আছে। রাজাকার, আলবদর বাহিনী সৃষ্টি করে ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তারাও এই গ্রুপে আছে। আমি দেখছি, কয়েকটা স্বার্থান্বেষী গ্রুপ এক হয়েছে। ড. কামাল হোসেনের উদ্দেশে তিনি বলেন, এত নীতিকথা বলেন, তিনি তো আমাদের সংবিধানের প্রণেতা। ’৭২-এর সংবিধানটা তিনি প্রণয়ন করেছিলেন। সংবিধানপ্রণেতা হয়ে ড. কামাল হোসেন ’৭২-এর সংবিধানের কোনো কোনো অনুচ্ছেদে এখন আপত্তি জানান কেন? তার হাতে সৃষ্টি, তিনি এখন আবার আপত্তি করেন কী কারণে? এটা কি তার গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনার ঐতিহ্য?

নির্বাচনকালীন সরকার এখন দরকার আছে কিনা ভেবে দেখা যাবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় সংসদে থাকা বিরোধী দলগুলো চাইলে নির্বাচনকালীন সরকার হবে, না চাইলে হবে না। গত নির্বাচনের আগে আমরা সব দলকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তখন আমাদের আহ্বান সত্ত্বেও তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপি সাড়া দেয়নি। নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট হবে কিনা বা হলে কেমন হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, কাকে বাদ দিয়ে যে মন্ত্রিসভা ছোট করব, তা খুঁজে পাচ্ছি না। বড় থাকলে কী সমস্যা আছে? তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় ছোট মন্ত্রিসভা ও তখনকার বিরোধী দলকে নিয়ে সব দলের সরকার গঠনের কথা বলেছিলাম। এখন এটা দরকার আছে কিনা দেখা যাবে।

এখন মন্ত্রিসভার আকার ছোট করতে সমস্যা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে আমরা এত প্রকল্প পাস করেছি, সেসব কাজ শেষ করা দরকার। এখন কয়েকটি মন্ত্রণালয় একজনের হাতে দিলে তিনি পারবেন কিনা, দু-তিন মাসের মধ্যে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। এখন কাজগুলো করতে গেলে কাউকে সরিয়ে দিলে কাজগুলো ব্যাহত হবে কিনা, এ সমস্যাটা রয়ে গেছে। আমি কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে চাই এবং সবাই যার যার মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো করছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভা ছোট করা হয় না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ইত্যাদি দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র আছে। আমি ওইসব দেশের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা তো কোনো পরিবর্তন করে না। তারা তো বলেছে, তেমনটা করার তো কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। এখন দেখা যাক... অপজিশন যদি চায় তখন করব। আর না চাইলে কিছু করার নেই।

ব্যারিস্টার মইনুল ইংরেজি খাওয়াটা শিখেছেন, ভদ্রতাটা শেখেননি : ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের সাম্প্রতিক এক মন্তব্য প্রসঙ্গে এক নারী সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একজন নারী সাংবাদিককে তিনি যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন তা অত্যন্ত জঘন্য, বাজে। তার বাচনিক ভঙ্গি, অ্যাটিচিউড সবই খারাপ। তার কাছে কী আশা করব? ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তো পাকিস্তানের দালালি করেছেন। ইত্তেফাকের সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন চৌধুরীকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল রাজাকাররা। এজন্যও তিনি কম দায়ী নন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর খুনি মোশতাক যে দল করেছিল, সেই দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ব্যারিস্টার মইনুলের। উনি কিন্তু পরে একটা দলও করেছিলেন। জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনি যারা, তাদের নিয়ে তিনি দল করেছিলেন। ইত্তেফাকেও তো মার্ডার করে ভাইকে (বর্তমান পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু) ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন। তাদের যে জমি, সেটা নিয়েও ঝামেলা রয়েছে। তাদের জমি নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে মামলা আছে। আপনারা সাংবাদিকরা খুঁজে বের করে দেখেন। তার আসলে গুণের শেষ নেই। তিনি বলেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বাবা তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার পরিবারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সুসম্পর্কের সুবাদে মইনুল হোসেনের জীবনের অনেক তথ্যই জানেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উনি সেই আমলে ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন ব্যারিস্টারি পড়তে। এইটা তো কম কথা না। মানিক মিয়া— উনাকে আমরা মানিক কাকা বলে ডাকতাম। তো কাকা তাকে ব্যারিস্টারি পড়তে পাঠালেন। তিনি ব্যারিস্টারি পাস করে ‘সাহেব’ হয়ে ফিরলেন। তিনি আর বাংলাদেশি খাবার খেতে পারেন না, তার সাহেবি খাবার দরকার। শেখ হাসিনা বলেন, মানিক কাকা মায়ের কাছে এসে আফসোস করেন। বলেন, ছেলে তো ইংরেজি খাবার ছাড়া কিছু খায় না। তো তার জন্য তখন আলাদা বাবুর্চি রাখতে হলো। সেই যুগে মানিক কাকা ছেলের জন্য ১০০ টাকা দিয়ে বাবুর্চি রাখলেন। ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়ে মইনুল হোসেন ইংরেজি খাওয়াটা শিখলেন; কিন্তু তাদের ভদ্রতাটা শেখেননি, কথা বলা শেখেননি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এসব কথা সবার জানার কথা নয়। আরও জানি, এখন বলব না, পরে বলব।

মইনুলের জামিন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী করবে? বিচার বিভাগ স্বাধীন। আমরা সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ করি না। মামলা হওয়া মাত্রই মইনুল হোসেন উচ্চ আদালতে গিয়ে বসে থাকলেন, তাকে পাঁচ মাসের জামিনও দেওয়া হলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তো বিচারালয়ে গিয়ে হামলা কিংবা কাউকে গ্রেফতার করে আনতে পারে না। এর পরই তিনি বলেন, কেবল দুটি মামলায় জামিন হয়েছে। নারীরা বসে বসে কী করছেন? দুটি মামলায় জামিন হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আরও মামলা হতে পারে। মামলা করেন, আমরা যা করার তা করব।

জামায়াতের লোক বলায় ওই নারী সাংবাদিককে আইনি নোটিস দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রশিবিরের অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন গিয়েছিলেন, এর ভিডিও তো আছেই। জামায়াত তিনি সমর্থন করেন না, তা কীভাবে বলবেন? আমি তো বললাম, শিবিরের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেছেন, তাদের আপনজন বলেছেন। এতেই প্রমাণ হয় তিনি জামায়াত, এর চেয়ে প্রমাণ আর কী লাগবে?

মন্ত্রী, পরিবহন নেতাদের পিটুনি দিলে কি সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হবে : নিরাপদ সড়ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্ররা আন্দোলন করল। কিন্তু এ আন্দোলন হওয়ার পরও তো মানুষ সচেতন হয়নি। এখনো গাড়ি চললে ফাঁক-ফুক দিয়ে লোকজন বের হচ্ছে। ফুটপাথ আছে, আন্ডারপাস আছে, ফুটওভার ব্রিজ আছে। কিন্তু দেখা গেল স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে মায়েরা গাড়ির সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করব সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো খুঁজে বের করুন। ঢাকায় দুই স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনায় বাসচালকের দোষ ছিল, সেটা স্বীকার করি। বাস তাদের ওপর উঠে যায়। কিন্তু অন্যান্য যেসব দুর্ঘটনা হচ্ছে তারা ফুটপাথে ছিল কিনা? এগুলো দেখতে হবে। তিনি বলেন, অনেকে ড্রাইভারদের দোষ দেন। মন্ত্রী, পরিবহন মালিক, শ্রমিক নেতাদের পিটুনি দিলেই কি চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে লোক দৌড় মারা বন্ধ হয়ে যাবে? যারা আন্দোলন করল, তারাই দেখি রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে, চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছে। অথচ কাছেই ফুটওভার ব্রিজ। তারা বয়স্ক না, ইয়ং। শেখ হাসিনা বলেন, সড়ক আইন পাস করেছি। চাইলেই তো হঠাৎ করে যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। যান্ত্রিক ব্যাপার, থামাতে গেলেও তো সময় লাগে। যারা রাস্তা পার হচ্ছেন তাড়াহুড়ো না করে আমাদের উচিত হাতে একটু সময় নিয়ে বের হওয়া। আপনারা এ বিষয়টি তুলে ধরুন।

ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছি, দারিদ্র্যমুক্ত করাটাই লক্ষ্য : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়াটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা যদি আবার ক্ষমতায় আসতে পারি তাহলে এ উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ২০০৮ সালে যে নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলাম, তাতে যা যা অঙ্গীকার করেছিলাম তার চেয়ে অনেক বেশি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। এরপর ২০১৪ সালেও আমরা বলেছিলাম এ অগ্রযাত্রা এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটা ডেল্টা প্ল্যান দিয়েছি। অর্থাৎ শত বছরের বাংলাদেশ কীভাবে গড়ে উঠবে তার একটা পরিকল্পনা করেছি। আমরা ২১০০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চাই, সেই পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি এবং আমরা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

আমরা এখন সৌদি আরবকেও সহযোগিতা করছি : এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় কেবল শ্রমিক পাঠানোর জন্যই সৌদি আরবের ওপর বাংলাদেশ নির্ভরশীল থাকলেও এখন দেশটি থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য আহ্বান জানানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, সম্ভাব্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশও এখন সৌদি আরবকে সহযোগিতা করছে। এখন তো পরিস্থিতি বদলেছে। আগে তো শুধু সৌদি আরবে আমাদের কর্মী নেওয়ার আবেদন করতাম। আমরা বলতাম, আরও লোক নেন। কিন্তু আমরা এখন তাদের বলছি, আপনারা আসেন, এখানে বিনিয়োগ করেন। নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো, সাংস্কৃতিক বিনিময় এসব নিয়ে এখন কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এরই মধ্যে আমরাও সৌদি আরবকে সহায়তা করছি। তাদের সীমান্ত এলাকাগুলোয় প্রচুর মাইন আছে। এসব মাইন অপসারণে তারা আমাদের সহায়তা চেয়েছে। আমরা তো এসব কাজে পারদর্শী। সে ক্ষেত্রে আমরা মাইন অপসারণের কাজ দিয়েই সহযোগিতা শুরু করেছি। তাদের প্রতিরক্ষা খাতে কিছু নির্মাণকাজ রয়েছে, সেগুলোতেও আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী তাঁর লিখিত বক্তব্যে সৌদি আরব সফরের বর্ণনা দেন। তিনি সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে তাঁর একাধিক বৈঠকে আলোচিত বিষয় নিয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সাক্ষাতের সময় বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ সৌদি আরবকে আমার দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে উল্লেখ করেন। এ সময় সৌদি বাদশাহ বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশে আসার আগ্রহ দেখিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর