সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জিয়াকে সামনে রেখেই পথ চলতে চাই

মাহমুদ আজহার

জিয়াকে সামনে রেখেই পথ চলতে চাই

শমসের মবিন চৌধুরী

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে সামনে রেখেই নতুন দলে পথ চলার কথা জানালেন বিকল্পধারার সদ্য মনোনীত প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি শহীদ জিয়ার সৈনিক। তার আদর্শকে লালন করি। জিয়াউর রহমানকে সামনে রেখেই আগামী দিনে পথ চলতে চাই। বিকল্পধারার নেতৃত্বে আমরা আগামী নির্বাচনে যেতে চাই। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে। জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে হবে ও  ইভিএম বাতিল করতে হবে। বিকল্পধারা নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের ৫ দফা দাবি আদায় হলে অবশ্যই আমরা নির্বাচনে যাব।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন বিএনপির সাবেক এই ভাইস চেয়ারম্যান। প্রায় তিন বছর আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রাজনীতি থেকে অবসর নেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী। হঠাৎ চমক সৃষ্টি করে তিনি সম্প্রতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে বিকল্পধারার রাজনীতিতে যোগদান করেন। এরপর তাকে বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। নতুন দলে যাত্রা প্রসঙ্গে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘নতুন যাত্রা শুরু করলাম। দেখা যাক কী হয়। ছোট দলও জাতির প্রয়োজনে অনেক সময় বড় ভূমিকা পালন  করে। সেই চেষ্টা আমার থাকবে। দীর্ঘদিন বিএনপিতে ছিলাম। বিএনপি একটি বড় দল। তাদের ব্যাপক জনসমর্থনও রয়েছে। যেহেতু ওই দল আমি ছেড়ে এসেছি, তাই বিএনপিকে নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না। সেখানে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। দেখি নতুন যাত্রা কেমন হয়।’ বিএনপি ছাড়লেন কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যখন আমি বিএনপি ছাড়ি, তখন অসুস্থ ছিলাম। সেটাই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছি। তারপরও বলতে চাই, সাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নেই মূলত দল ছেড়েছি। এ নিয়ে দলে তো মতবিরোধ কিছুটা ছিলই। আমি আশা করেছিলাম যে, বর্তমান বাংলাদেশের কথা চিন্তা করে বিএনপি তার কাজে কর্মে এবং তার অবস্থানে আরেকটু অসাম্প্রদায়িকতার দিকে আসবে। সেসব বিষয়ে আমি বাধা পাচ্ছিলাম। আমার মনের মতো হচ্ছিল না। দ্বিতীয়ত, নাশকতার রাজনীতিতে আমি মোটেও বিশ্বাস করি না। সেটা সব ধরনের নাশকতা। পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারা আমি সমর্থন করি না কিংবা লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ পিটিয়ে মারা, সেটাও চাই না।’

বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘সাবেক  প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল এবং তার সঙ্গে গত কিছুদিন ধরে কথাবার্তা চলছিল। উনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব। উনার অনেক কিছুর সঙ্গে, নীতির সঙ্গে, আদর্শের সঙ্গে, কথা-বার্তার সঙ্গে আমার মিলে যায়। তো মতের মিল থাকাতে মনে হলো একটা চেষ্টা করে দেখি। সেই কথা ভেবেই আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দিয়েছি।’ বিএনপি ছেড়ে অন্য দলে যোগদানে সরকারের পক্ষে কোনো চাপ ছিল কি না, এমন প্রশ্নে সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘সরকারের চাপ থাকলে তো অনেক আগেই থাকত। এটা নিতান্তই আমার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই আমি এই পদক্ষেপ নিয়েছি।’ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না এমন প্রশ্নে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তো নির্বাচনে যেতেই চাই। নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ দরকার। এ জন্য বিকল্পধারার নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের ৫ দফা দাবি রয়েছে। সরকার এই পাঁচ দফা মেনে নিলে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব।’ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যখন সংসদ নির্বাচন হয় তখন আপনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির জন্য ঠিক হয়েছিল কি না,  এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বিএনপি তখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটিকে সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে হবে। তখন বিএনপি ভেবেছিল হয়তো নির্বাচনে না যাওয়াটা তাদের জন্য ভালো। তবে আমার মতে বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নিলে হয়তো তাদের ক্ষতি খুব একটা হতো না।’

সর্বশেষ খবর