বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

চূড়ান্ত হচ্ছে সংসদ নির্বাচনের তারিখ

আজ আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক কাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করতে ৩ নভেম্বর শনিবার বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। ওই বৈঠকে  যে তফসিল অনুমোদন পাবে, তা বিটিভি ও বেতারে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তবে কবে সেই ঘোষণা আসবে তা এখনো প্রকাশ করেননি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। ইসি সূত্র জানিয়েছে, শনিবারেও তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো কারণে ওই দিন তফসিল না হলে রবিবার বা ৮ নভেম্বরের মধ্যে হতে পারে।  ইসির সভার নোটিসে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এবং একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে। শনিবার বিকাল ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশনের ৩৮তম বৈঠক হবে। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, মনোনয়ন দাখিল, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ সময় এবং প্রতীক বরাদ্দ  শেষে প্রচারের পর্যাপ্ত সময় দিয়ে তফসিল ঘোষণা থেকে  ভোটের দিন পর্যন্ত ৪০-৪৫ দিন সময় রাখা হয়। সেই হিসাব ধরে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে বা ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েই সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তবে ভোট গ্রহণের দিন হিসেবে কমিশনের পছন্দ ২০ ডিসেম্বর। এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আজ বুধবার ইসিতে আন্তমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে। কাল চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবকে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা। ৩ নভেম্বর বিকাল ৩টায় নির্বাচন কমিশনের সভা বসবে। এই সভায় একাদশ সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হবে। ৩১ অক্টোবর একাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরুর পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই যে তফসিল ঘোষণা হতে পারে, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। গত সপ্তাহে তিনি বলেছিলেন, কমিশন সভায় তফসিল অনুমোদন হবে। এরপর বিটিভি ও বেতারে জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে তফসিল ঘোষণার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ : কাল ১ নভেম্বর বিকাল ৪টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটের সম্ভাব্য কয়েকটি তারিখও রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করা হতে পারে। এক্ষেত্রে ভোট গ্রহণের জন্য ১৮ বা ২০ ডিসেম্বর, ২৩ বা ২৪ ডিসেম্বর ও ২৭ ডিসেম্বর বা ৩০/৩১ ডিসেম্বর প্রাথমিক তারিখ চিন্তা করা হচ্ছে। আর ২০ ডিসেম্বর ভোট হলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর ৩ বা ৪ নভেম্বর তফসিল ঘোষণাও হতে পারে। তবে কমিশন ভোটের তারিখ হিসেবে ২০ ডিসেম্বরকেই বেশি উপযোগী মনে করছে।

রাজনৈতিক সমঝোতা হলে... : নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম গতকাল বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতাটাকে আমরা আইনের মধ্যে থেকে মানিয়ে নিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। যদি সমঝোতা হয় তবে এটা সবাই জানবে। ইসি কোন সময় নির্বাচনের জন্য পছন্দ করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পছন্দের ব্যাপার নয়, আইনি কাঠামো রয়েছে, এর মধ্যে করতে হবে। আমরা ভোটের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত আমরা ডিসেম্বরের শেষ ১০ দিনের মধ্যে ভোট করার বিষয়ে চিন্তা করছি। 

আজ দেশে ফিরছেন মাহবুব তালুকদার : যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের আজ দেশে ফেরার কথা। সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে আজ ৩১ অক্টোবরই তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা।

খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের দাবি : ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের খুব কাছাকাছি সময়ে নির্বাচন না  দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)  কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অ্যাসোসিয়েশনের  নেতারা এ দাবি জানান। বৈঠক শেষে খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও সাংবাদিকদের বলেন, বড়দিনের খুব কাছাকাছি যেন একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিন নির্ধারণ না করা হয়, সেজন্য আমরা আবেদন করেছি।

কমিশন আমাদের প্রস্তাব সক্রিয়ভাবে, আন্তরিকতার সঙ্গে দেখবে বলে জানিয়েছে। বৈঠকে সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়— সম্ভব হলে নির্বাচনের দিন ২০ ডিসেম্বরের আগে কিংবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্ধারণ করা হোক। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে ও পরে খ্রিস্টান এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও জানান তারা।

সর্বশেষ খবর