শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সংলাপ নিয়ে যা বললেন নেতারা

সম্পর্কের উত্তরণ ঘটেছে

--------- শ ম রেজাউল করিম

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্য রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিল আলোচনায় বসার জন্য। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আছে এমনটা দেখা যায়নি। ফলে আলোচনায় না বসার কথাই বলা হয়েছিল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপের আহ্বান জানিয়ে চিঠি লেখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদার মন নিয়ে সাড়া দিয়েছেন। দীর্ঘদিন পর কথাবার্তা না হওয়া এবং মুখ দেখাদেখি না করা নেতাদের মধ্যে সম্পর্কের উত্তরণ ঘটেছে। এর আগে অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন দুই দলের বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে কথা হবে না। সে অবস্থার অবসান হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক বলেন, তারা জোটবদ্ধ হয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।

সংলাপ শেষে গণভবন থেকে বেরিয়ে আসার সময় ড. কামাল হোসেন গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, আলোচনা সফল হয়েছে। আলোচনা যখন শেষ হয়, তখন সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। রাতে ড. কামাল হোসেনের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। লিখিত বক্তব্যে কোথাও তারা সন্তুষ্ট নন এমন কথা বলা হয়নি। এককভাবে যদি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন তারা সন্তুষ্ট নন, তা ব্যক্তিগত কথা হতে পারে। আমাদের ধারণা, তাদের ভিতরে অসন্তোষ রয়েছে একে অন্যের প্রতি। তা না হলে লিখিত বক্তব্যের বাইরে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম কথা বলেছেন, আবার ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা আ স ম আবদুর রব বলছেন আন্দোলন চলবে। তাহলে তো তারা ঐক্যফ্রন্টে নেই। পৃথকভাবে কথা বলছেন। আমার মনে হয় তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর সন্তুষ্ট নন। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে অংশগ্রহণকারী এই নেতা বলেন, সংলাপের মধ্য দিয়ে আলোচনায় বসে উভয় পক্ষ ভিতরে যে একেবারেই কথাবার্তা হবে না— সে অবস্থার উত্তরণ ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, সংলাপে বিরোধী দলের কার কী দাবি আছে, তাদের কী কী ক্ষোভ আছে, কী অভিযোগ আছে, তা তারা বলার সুযোগ পেয়েছেন। ডেলিগেশনে যারা এসেছিলেন তারা সবাই কথা বলেছেন। কোনো কোনো সদস্য চার দফা, পাঁচ দফা কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাড়ে তিন ঘণ্টা বসে তাদের কথা অত্যন্ত ধৈর্যসহকারে শুনেছেন। যেসব বিষয় সমাধানের যোগ্য সেগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। যেমন তাদের দাবি ছিল নির্বাচনের সময় সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা। প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়ে তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তাদের মিটিং, মিছিলে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোনো বাধা কেউ দেবে না। যেখানে খুশি সভাসমাবেশ করবেন। তবে মনে রাখতে হবে যেন মানুষের দুর্ভোগ না বাড়ে। আপনারা সঠিকভাবে সভাসমাবেশ করতে পারবেন, এটা আমি পুলিশ ও প্রশাসনকে বলে দিচ্ছি। তিনি বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মামলা নিয়ে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার পক্ষে নই। আপনারা লিস্ট দিন। এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কার কাছে দেব? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার কাছে দিন। না হলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে দিন। আমি দেখব। শ ম রেজাউল করিম বলেন, আলাপ-আলোচনার ভিতর দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য যে পরিবেশটা তৈরি করার দাবি ছিল তার অধিকাংশই পূরণ করেছেন। তাদের কিছু অসাংবিধানিক দাবি ছিল, এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার মুক্তি দাবি অন্যতম। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালত যদি কাউকে সাজা দেয় তাহলে সেই সাজা বাতিল করার আইনি এখতিয়ার আমার নেই। তা ছাড়া আমি চাই আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নেই। আপনারা আইনি লড়াই করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর