সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের স্থান হবে না

কওমি মাদ্রাসা সনদকে স্বীকৃতি দেওয়ায় শোকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের স্থান হবে না

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতকাল কওমি শোকরানা মাহফিলে মোনাজাত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আল্লামা আহমদ শফী —বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গিবাদের স্থান হবে না। সন্ত্রাসের স্থান হবে না।  মাদকের স্থান হবে না। দুর্নীতিবাজের স্থান হবে না। বাংলাদেশ হবে একটা শান্তিপূর্ণ দেশ। উন্নত দেশ সমৃদ্ধিশালী দেশ। তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসী তাদের কোনো ধর্ম নেই, তাদের দেশ নেই, তাদের কোনো সমাজ নেই। তারা হচ্ছে সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী। যারা সত্যিকারের ইসলামে বিশ্বাস করে তারা কখনো সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদী হতে পারে না। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা আল হাইয়াতুল উলয়া-লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ আয়োজিত শোকরানা মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান দেওয়ায় এ শোকরানা মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ‘কওমি জননী’ উপাধিতে ভূষিত করেন মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সামান্য কয়েকটা লোক আমাদের ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে ইসলাম ধর্মের বদনাম দেয়। আমি যখনই কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যাই, তখন যদি কেউ বলে, ইসলামী টেররিস্ট, আমি তাকে সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি জানাই, এটা বলতে পারবেন না। কারণ, সবাই টেররিজমে বিশ্বাস করে না। গুটিকয়েক লোকের জন্য ইসলামের বদনাম হতে পারে না। ইসলাম জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস সমর্থন করে না। আল হাইয়াতুল উলয়া-লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে ও মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ। সংগঠনের শীর্ষ নেতার মধ্যে মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওনালা নুরুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল বশির, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতি রুহুল আমিন, আল্লামা ফরীদউদ্দীন মাসঊদ, আল্লামা আশরাফ আলী, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আবদুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আজহার আলী, মাওলানা জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ। মূল অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। সকাল সাড়ে ১০টায় মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোকরানা মাহফিলে আসেন সকাল ১০টা ৪৬ মিনিটে। তিনি ১২টা ৪৫ মিনিটে মঞ্চে উঠে ২২ মিনিট বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ইসলামের কল্যাণে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং নিজের সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তিনি আলেম সমাজের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। মাহফিলে আল্লামা শফীর পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মুফতি নরুল আমিন। বক্তব্য শেষে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফী শোকরিয়া স্মারক প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে পাস হওয়া কওমি আইনের কপি আল্লামা শাহ আহমদ শফীর হাতে তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কতায় ছিলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলাম ও মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করলে শাস্তি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়, এ অপপ্রচারে কেউ বিশ্বাস করবেন না। এ অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যে সাইবার ক্রাইম আইন তৈরি করা হয়েছে। কেউ যদি এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার করে, সঙ্গে সঙ্গে সেই আইনে তাদের বিচার করা হবে, গ্রেফতার করা হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ইসলাম ধর্ম ও নবী করিম (সা.) সম্পর্কে কেউ কোনো কটূক্তি ও অবমাননাকর কথা বললে আইন দ্বারাই তার বিচার হবে। কেউ সোশ্যাল মিডিয়াতে যেন কোনোরকম অপপ্রচার করতে না পারে, তা বন্ধ করার জন্য সাইবার ক্রাইম আইন করে দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নেব না, আইনের দ্বারাই তাদের বিচার করে উপযুক্ত শিক্ষা দেব, যাতে কখনো তারা আমাদের ধর্ম ও নবীজি সম্পর্কে এ অপপ্রচার চালাতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের শান্তি বিঘ্নিত হোক, তা আমরা চাই না। দেশে শান্তি থাকলেই উন্নতি হবে। উন্নতি থাকলে সবাই লাভবান হবে। আপনারা আমাদের উন্নতি দেখেছেন। তৃণমূলে গ্রামপর্যায়ে উন্নয়ন করা হয়েছে। আমরা চাই বাংলাদেশে কোনো মানুষ ভিক্ষা করবে না। প্রত্যেক মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করব। প্রতিবন্ধী, অসুস্থদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি, তাদের জন্য বিনা পয়সায় খাদ্যের ব্যবস্থা করেছি। শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বিশ্বব্যাপী মুসলমানের মধ্যে নিজেরা নিজেরা হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি। সেখানে লাভবান হচ্ছে কারা? যারা অস্ত্র তৈরি করে, অস্ত্র বিক্রি করে তারা লাভবান হয়। রক্ত যায় কাদের? রক্ত যায় মুসলমানদের। তিনি বলেন, এ কথাটি আমি ওআইসির (ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা) সেক্রেটারির কাছেও তুলে ধরেছি। 

নির্বাচনে আলেমদের দোয়া চাই : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আলেম-ওলামাদের দোয়া চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের দোয়া চাই। সামনে নির্বাচন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যদি ইচ্ছা করেন, নিশ্চয়ই আবার তিনি বাংলাদেশের মানুষের খেদমত করার সুযোগ আমাকে দেবেন। আর যদি আল্লাহ না চান, দেবেন না, আমার আফসোস থাকবে না। কারণ আমি সব কিছু আল্লাহর ওপরই ছেড়ে দিয়েছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমি পিতা-মাতা, ভাই সব হারিয়েছি, আমি নিঃস্ব রিক্ত, আমি এতিম, আমরা দুটি বোন আছি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমাদের ছেলে-মেয়ে, নাতনির জন্য দোয়া করবেন। তারা যেন সুন্দরভাবে, সুস্থভাবে থাকতে পারে। আর দোয়া করবেন বাংলাদেশের জনগণের জন্য। আমি যখন নামাজ পড়ি, আমি আমার ছেলে-মেয়ে, নাতি-পুতিদের জন্য যখন দোয়া করি, সেই সঙ্গে আমার সাথে যারা কাজ করে তাদের জন্যও দোয়া করি, দোয়া করি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে মাথানত করি না। আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে আমি ভয়ও করি না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জীবন দিয়েছেন। আর আমি যে বেঁচে আছি এবং বার বার বেঁচে যাচ্ছি— কখনো গ্রেনেড হামলা, কখনো গুলি, কখনো বোমা— নানাভাবে আমাকে যে বার বার হত্যার চেষ্টা আর আমি বেঁচে যাই মনে হয়, এটা আল্লাহর কোনো ইশারা। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাকে দিয়ে কোনো কাজ করাবেন, যে কারণে তিনি আমাকে বার বার রক্ষা করছেন। তিনি যতদিন হায়াত দিয়েছেন ততদিন আছি— এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আমার সময় শেষ হয়ে যাবে তিনি (আল্লাহ) নিয়ে যাবেন। শুধু আল্লাহর কাছে এটুকুই চাই, যেন মান-সম্মানের সঙ্গে যেতে পারি এবং মানুষের সেবা করে যেতে পারি। মানুষের কল্যাণ করে যেতে পারি। 

যারা এতিমদের শিক্ষা দেন তাদের স্বীকৃতি কেন দেব না : প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার ইতিহাস বর্ণনা করে বলেন, লাখ লাখ ছেলেমেয়ে এই মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণ করছে। সবচেয়ে বড় কথা যখন তারা এতিম হয়ে যচ্ছে, যারা হতদরিদ্র বা যাদের যাওয়ার জায়গা নেই, আপনারা তাদেরই আশ্রয় দেন, তাদের খাদ্য দেন, শিক্ষা দেন। তারা অন্তত একটা আশ্রয় পায়। এতিমকে আশ্রয় দিচ্ছেন। এর চেয়ে বড় কাজ আর কী হতে পারে? কাজেই আপনাদের স্বীকৃতি দেব না এটা কখনো হতে পারে না। তাই আমি যখনই সরকারে এসেছি, চেষ্টা করেছি। আমরা যখনই যে শিক্ষা নীতিমালা ঘোষণা করেছি, সেই নীতিমালায় ধর্মীয় শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। কারণ, আমি মনে করি, একটা শিক্ষা তখনই পূর্ণাঙ্গ হয়, যখন ধর্মীয় শিক্ষাও গ্রহণ করা যায়। তিনি বলেন, লাখ লাখ ছেলেমেয়ে কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে, অথচ তাদের সেই ডিগ্রির যদি স্বীকৃতি না থাকে তাহলে তারা কোথায় যাবে, কী করবে, কী করে তারা চলবে? ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট, মসজিদভিত্তিক উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ সম্প্রসারণ, স্বতন্ত্র আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বাংলাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক কালচারাল সেন্টার করার উদ্যোগও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি আগেও ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর ১৯৭৭ সালে এই স্বীকৃতি বাতিল হয়। সনদের এই স্বীকৃতি পাওয়ায় কওমি শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে চাকরি পাবে, তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। তিনি বলেন, সে সুযোগটা আমরা কওমি মদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের জন্য করে দিতে পেরেছি। তাদের জীবনটা সুন্দর হবে, সুন্দরভাবে তারা বাঁচতে পারবে। ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের শিক্ষা গ্রহণ কওমি মাদ্রাসা থেকেই শুরু হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তারাই কওমি মাদ্রাসা করেছিলেন। কাজেই তাদের আমরা সব সময় সম্মান করি। ইসলাম ধর্ম মানুষকে শান্তির পথ দেখায়। আর সে দ্বীন শিক্ষা যারা দেয়, তারা কেন অবহেলিত থাকবে? কাজেই তাদের কখনো অবহেলিত থাকতে দেওয়া যায় না।

‘কওমি জননী’ শেখ হাসিনা : শোকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গওহরডাঙ্গার চেয়ারম্যান ও গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমীন এ উপাধি দেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা আপনি স্বীকৃতি দিয়েছেন সবকিছু উপেক্ষা করে। অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন, তার জবাব দিয়েছেন। ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর জননীর ভূমিকা আপনি (শেখ হাসিনা) পালন করেছেন। আজকে কওমি মহাসমুদ্রে আমি ঘোষণা করতে চাই, আপনি ‘কওমি জননী’। আজ থেকে আপনাকে এ উপাধি দিলাম। আপনার মাতৃত্বের ভূমিকা না থাকলে   দেশবিরোধী, সাহাবাদের শত্রু, জামায়াত-মওদুদীবাদীরা এ দেশে (স্বীকৃতি) তা হতে দিত না। 

শেখ হাসিনা থাকলে আলেমদের কোনো ক্ষতি হবে না : উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বলেন, যতদিন শেখ হাসিনা আছেন এদেশের আলেমদের কোনো ক্ষতি হবে না। তিনি আলেম ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাবেন। কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিয়ে তিনি তা প্রমাণ করে দিয়েছেন।    

শেখ হাসিনার অবদান সোনালি অক্ষরে লেখা থাকবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক এবং সাহসী বলে উল্লেখ করেছেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড আল হাইয়াতুল উলয়া-লিল জামি’আতিল কওমিয়ার চেয়ারম্যান আল্লমা আহমদ শাহ শফী। আহমদ শফীর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আল হাইয়াতুল উলয়া-লিল জামি’আতিল কওমিয়ার সদস্য মাওলানা মুফতি নুরুল আমিন। লিখিত বক্তব্যে আল্লামা শফী বলেন, শত আপত্তি, বাধা উপেক্ষা করে কওমি সনদের বিল পাস করে শেখ হাসিনা আন্তরিকতা ও সাহসিকতার সঙ্গে সেই ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন। এটা নিঃসন্দেহে তার কওমি ওলামা-কেরামদের প্রতি দরদপূর্ণ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক শোকরিয়া করছি, মোবারকবাদ জানাচ্ছি। কেননা মানুষের শোকরিয়া আদায় করা নৈতিক ও দীনি কর্তব্য। তিনি বলেন, আপনার এ অসামান্য অবদান ইতিহাসের সোনালি পাতায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, আপনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। তার কন্যার শাসনামলে লাখ লাখ কওমি ছাত্র সনদের স্বীকৃতির দ্বারা ধন্য হয়েছে। আল্লামা শফী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। রাজনৈতিক কোনো দলের সঙ্গে আমার ও হেফাজতে ইসলামের নীতিগত সংশ্লিষ্টতা নেই। মনে রাখবেন, মুসলমানদের ইমান-আকিদা ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে রক্ষা করাই হেফাজতে ইসলামের মূল লক্ষ্য। হেফাজতে ইসলামের নীতি ও আদর্শের ওপর আমরা অটল-অবিচল আছি। আমার কর্মকৌশল সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার সুযোগ নেই।  

আল্লামা শফীকে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার দাবি : বাংলাদেশ জমিয়াতুল উলামার চেয়ারম্যান ও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের প্রধান ইমাম মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসঊদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের সবই দিয়েছেন, আপনার প্রতি আমাদের আরও একটু চাওয়া আছে। আমরা আপনার কাছে ইমামদের পাঁচ হাজার টাকা এবং মুয়াজ্জিনদের তিন হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো আলেমকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়নি। আমরা চাই আল-হাইয়াতুল উলয়া-লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাহ আহমদ শফীকে আপনি ‘স্বাধীনতা’ পদক প্রদান করবেন। কওমি মাদ্রাসার লাখ লাখ আলেম-ওলামা এবং ছাত্রসমাজকে এক ছাতার নিচে আনার অবদানস্বরূপ তাকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হোক।

সর্বশেষ খবর